বর্ধমান: ডিএর (DA) দাবিতে ধর্মঘটে শামিল হওয়া শিক্ষকদের (Teachers) শোকজ (Show Cause) করেছে রাজ্য সরকার। গত কদিন ধরে বিভিন্ন জেলায় উৎসবের মেজাজে শোকজের জবাব দিচ্ছেন শিক্ষকরা। কোথাও ঢাকঢোল বাজিয়ে, কোথাও তাসা বাজিয়ে, কোথাও আবার নাচতে নাচতে তাঁরা সংশ্লিষ্ট দফতরে শোকজের জবাব দিচ্ছেন। মঙ্গলবার দুপুরে পূর্ব বর্ধমান জেলার নানা প্রান্ত থেকে শোকজ হওয়া শিক্ষাকর্মী, গ্রন্থাগারিকরা এক জায়গায় জমায়েত হয়ে তাসা বাজিয়ে কবিতা, ছড়া, স্লোগানের মাধ্যমে শোকজের জবাব দিতে যান। আন্দোলনকারীদের রাজ্য নেতা বৈদ্যনাথ দত্ত জানান, এই ধর্মঘট (Potest) নিয়ম মেনেই ডাকা হয়েছিল।ধর্মঘটে শামিল হতে পেরে তাঁরা নিজেদের সৌভাগ্যবান বলে মনে করছেন। তাই শোকজের জবাব দেওয়ার বিষয়টিকে তাঁরা মহোৎসব হিসেবে দেখছেন।
সোমবারই (Monday) মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) ৭৪ জন শিক্ষক ফরাক্কার এসআই অফিসে নাচতে নাচতে শোকজের জবাব দিতে যান। সঙ্গে ছিল ঢাকঢোল। শিক্ষকদের একহাতে ছিল শোকজের চিঠি, অন্য হাতে জবাবি চিঠি। তাঁরাও ছিলেন দিব্যি খোশ মেজাজে। কয়েকদিন আগে জলপাইগুড়ির ১৮ সার্কেলে শিক্ষক শিক্ষিকারা শোকোজের জবাব দিতে গিয়ে লাল আবির খেলায় মেতেছিলেন। অনেক জেলায় শিক্ষকদের অভিযোগ, শোকজের জবাব দিতে গিয়ে অনেক ডিএই কিংবা এসআই অফিসে অফিসার বা কর্মীদের দেখা মেলেনি। তাই তাঁরা শোকজের জবাব দিতে পারেননি। বহু জেলায় শিক্ষকরা ছুটি নিয়ে চিঠির জবাব দিতে গিয়েছিলেন কিন্তু কোনও কাজ হয়নি।শিক্ষা দফতর থেকে বলা হয়েছে শিক্ষকদের হাজির না হলেও চলবে। তাঁরা প্রধান শিক্ষকের কাছে চিঠির কপি দিয়ে দিতে পারেন। শিক্ষকরা জানান অনেক প্রধান শিক্ষকই তা নিতে চাইছেন না।
ডিএর দাবিতে সরকারি কর্মচারীদের সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ ১০ মার্চ কর্মবিরতির ডাক দিয়েছিল। মঞ্চের দাবি, সারা রাজ্যে প্রায় দেড় লক্ষ কর্মচারী এই কর্মবিরতিতে সামিল হয়েছিল। তার মধ্যে মাত্র ২৮ হাজার কর্মচারীকে শোকজ করা হয়েছে।কর্মবিরতির আগে নবান্ন হুমকি দিয়েছিল, ওই দিন অনুপস্থিত থাকলে শোকজ করা হবে এক দিনের বেতন কাটা হবে চাকরিতেও একদিনের ছেদ পড়বে। সেই হুমকি উপেক্ষা করেই কর্মচারীরা ধর্মঘটের অংশ নেন।
সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ শহীদ মিনার ময়দান চত্বরে প্রায় দেড় মাস ধরে অবস্থান আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। চলছিল অনশনও। গত শনিবার ৪৪ দিনের সেই অনশনে ইতি টানে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। আগামীকাল বুধবার শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে তৃণমূল ছাত্র যুব সংগঠনের সভা রয়েছে। সেই সভায় প্রধান বক্তা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। পুলিশের অনুরোধ সত্বেও তারা অবস্থানস্থল পরিবর্তনে রাজি হয়নি। ৩০ মার্চ বৃহস্পতিবার সরকারী কর্মচারীরা গণছুটি নিচ্ছেন।ওই দিন হাওড়া এবং শিয়ালদা থেকে দুটি মিছিল আসছে শহীদ মিনার চত্বরে।