শ্যামনগর: আজ থেকে ২০-৩০ বছর আগেও বাঙালি সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল হারমোনিয়াম (Harmonium) এবং তবলা (Tabla)। বাড়ির মেয়েকে হারমোনিয়াম এবং ছেলেকে তবলা শেখানোটা ছিল মধ্যবিত্ত বঙ্গজীবনের চালু প্রথা। সময় বদলেছে, প্রবলভাবে উঠে এসেছে গিটার (Guitar)। ছেলে-মেয়ে নির্বিশেষে আজকের দিনে গিটার শেখার চল। সেই কারণেই বাংলায় গজিয়ে উঠেছে গিটার তৈরির ‘কারখানা’। জানেন কি, এই বাংলাতেই এমন এক গ্রাম রয়েছে যেখানে প্রায় সব বাড়িতেই গিটার তৈরি হয়।
উত্তর ২৪ পরগনার (North 24 Parganas) শ্যামনগরের (Shyamnagar) কাউগাছি চণ্ডীতলা গ্রামের নামই হয়ে গিয়েছে ‘গিটারগ্রাম’। এই গ্রামের রাস্তায় হাঁটলে আপনার কানে আসবে ঠুকঠাক, টুংটাং শব্দ। একটু ভিতরে উঁকি দিলেই চোখে পড়বে সারি সারি রংবেরঙের গিটার। আবার রং হয়নি, কাঁচা কাঠের শুধু খোলও দেখা যাবে। এছাড়াও রয়েছে গিটার নির্মাণের যাবতীয় সাজ সরঞ্জাম। কাউগাছি চণ্ডীতলায় তৈরি গিটার দেশের বিভিন্ন প্রান্তে তো বটেই, চলে যাচ্ছে বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটানে।
আরও পড়ুন: NASA Satellite: মহাকাশ থেকে মাটিতে ভেঙে পড়ছে নাসার পুরনো স্যাটেলাইট!
আকার অনুযায়ী গিটার মোটামুটি তিন ধরনের। তবে এখানে আকার বলতে মূল খোল বা যাকে বডি বলে তার প্রস্থ। ‘স্লিক’ গিটার হল যার খোলের প্রস্থ দু’ ইঞ্চির কম। এরপরে রয়েছে সেমি জাম্বো (Semi Jumbo) যার বডির প্রস্থ তিন ইঞ্চি মতো এবং তার পরে জাম্বো (Jumbo) গিটার। তার বডির প্রস্থ পাঁচ ইঞ্চির মতো। এই প্রস্থ যত বেশি সেই গিটারের আওয়াজের গভীরতা তত বেশি হবে। দক্ষ গিটার বাদকরা জাম্বো গিটার বাজাতেই পছন্দ করেন।
মূল বডি ছাড়াও গিটারের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল নেক (Neck)। তার উপরের দিকে ছ’টি টিউন করার চাবি। সেটিকে আঠা দিয়ে মূল বডির সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়। কিছু গিটারের বডিতে থাকে গোল গর্ত, এগুলোর নাম রাউন্ড হোল গিটার (Round Hole Guitar)। এছাড়া রয়েছে ভায়োলিনের মতো ডিজাইনের এফ-কাট । প্রসঙ্গত, দমদম জংশন স্টেশনের কাছেও বেশ কিছু গিটার তৈরির কারখানা রয়েছে। দেশজুড়ে চাহিদা রয়েছে এই এখানকার গিটারের।