কলকাতা: নেতাই গণহত্যার (Netai mass killing) মামলায় অভিযুক্ত তিন সিপিএম (CPM) নেতার জামিন মঞ্জুর করল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta high court)। মঙ্গলবার বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চ (division bench) তাঁদের জামিন মঞ্জুর করে। জামিনের আবেদন করেছিলেন তপন দে, ডালিম পাণ্ডে এবং অনুজ পাণ্ডে। তাঁরা দীর্ঘ আট বছর ধরে জেলে ছিলেন। নেতাই-কাণ্ডে মাস কয়েক আগে সুপ্রিম কোর্ট থেকে জামিন পান সিপিএম নেত্রী ফুল্লরা মণ্ডল।
২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি মেদিনীপুরের নেতাইতে এক বাড়িতে গুলিতে নয়জনের মৃত্যু হয়। অভিযোগ, রথীন দণ্ডপাট নামে এক সিপিএম নেতার বাড়ি থেকে ওই নয়জনকে গুলি করে খুন করা হয়। আদালতের নির্দেশে সিবিআই তদন্ত শুরু করে। ২০১৪ সালের মে মাসে সিবিআই ২০ জনের নামে চার্জশিট পেশ করে। তাঁদের মধ্যে ১২ জন ছিলেন সিপিএমের সক্রিয় নেতা-কর্মী। পরে অনেককেই গ্রেফতার করা হয়।
কলকাতা হাইকোর্ট ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারি ওই ঘটনার সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয়। আদালত সিআইডি তদন্তের গতি প্রকৃতিতে ক্ষোভ প্রকাশ করে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল। তখন বামফ্রন্ট সরকার সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিল। শীর্ষ আদালত রাজ্য সরকারের আবেদন খারিজ করে দিয়ে হাইকোর্টের নির্দেশই বহাল রাখে। সিআইডি এবং সিবিআই তদন্ত চালিয়ে বিভিন্ন সময়ে গ্রেফতার করে সিপিএম নেতা চণ্ডী করণ, অনুজ পাণ্ডে, ডালিম পাণ্ডে-সহ বেশ কয়েকজন সিপিএম নেতাকে গ্রেফতার করে। ফুল্লরা মণ্ডল পলাতক ছিল। পরে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।
কয়েক মাস আগে সুপ্রিম কোর্ট থেকে জামিনে মুক্তি পান পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা কমিটির সদস্য ফুল্লরা। জামিন পাওয়ার পর সিপিএম তাঁকে জেলায় সংবর্ধনা দেয়। মঙ্গলবার জামিন পেলেন ডালিম, অনুজ এবং তপন।
আরও পড়ুন: Calcutta High Court: ভালো অফিসারকে কেন সরানো হল? স্কুল এডুকেশন কমিশনারকে তলব আদালতের
২০১১ সালে রাজ্যে পালা বদলের পিছনে নেতাই-কাণ্ডেরও ভূমিকা রয়েছে। তখনকার বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিঙ্গুর, নন্দীগ্রামের মতো নেতাই গণহত্যাকেও সিপিএমের বিরুদ্ধে প্রচারে কাজে লাগিয়েছিলেন। ক্ষমতায় আসার পর টানা বেশ কয়েক বছর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৭ জানুয়ারি নেতাইয়ে যেতেন শহীদ দিবস উপলক্ষে। সম্প্রতি অবশ্য তিনি আর নেতাইয়ে যান না। অধুনা বিজেপি নেতা তথা রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে গত বছর ৭ জানুয়ারি রাজ্য পুলিশ নেতাইতে যেতে বাধা দেয়। তিনি তা নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন। আদালত নির্দেশ দেয়, বিরোধী নেতাকে কোথাও যেতে বাধা দেওয়া যাবে না। এবার অবশ্য তিনি ৭ জানুয়ারি তিনি নেতাইতে যেতে পারেননি অন্য কর্মসূচি থাকায়। সোমবার তিনি নেতাইয়ে গিয়ে বলেন, আমি নেতাইয়ের শহীদ পরিবারগুলির পাশে আছি।