কলকাতা: নববর্ষের দিন ফি-বছর ওপার বাংলায় এমন ছবি দেখা যায়। সাধারণ মানুষ পথে নামেন। ওপার বাংলার আকাশ মুখরিত হয়ে ওঠে ঢাক-শঙ্খধ্বনিতে। রঙিন পোশাকে নেতা-মন্ত্রী থেকে আমজনতা পা মেলান মিছিলে। সঙ্গে ব্যানার-ফেস্টুনে বর্ণময় হয়ে ওঠে গোটা শোভাযাত্রা। ওপার বাংলার সেই ছবিটায় লক্ষ্মীবারের বারবেলায় এপার বাংলার মাটিতে তুলে আনলেন মমতা। এমন বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা অতি সাম্প্রতিক সময়ে বাংলার মানুষ দেখেনি।
কিছুক্ষণ আগেই বৃষ্টিতে ভিজেছে তিলোত্তমা। রাস্তায় সোঁদা গন্ধ আর লক্ষ মানুষের পদযাত্রা। ঘড়িতে তখন ঠিক দুটো। জোড়াসাঁকোর সামনে মাইক হাতে মুখ্যমন্ত্রী। ঘোষণা করলেন শোভাযাত্রা শুরুর কথা। নেত্রী নিজে সবার আগে হাঁটছেন। সঙ্গে রঙিন ছাতা। নানা রংয়ের পাঞ্জাবি। ঢাকের আওয়াজ বুঝিয়ে দিচ্ছে মা আসছেন। প্রতীক্ষা আর মাত্র কয়েকদিনের। বাংলায় মমতার হাত ধরে শুরু হয়ে গেল দুর্গোৎসব।
বাংলার এই উৎসবই তো ইউনেস্কোর হাত থেকে ছিনিয়ে এনেছে সেরার স্বীকৃতি। সেই স্বীকৃতিকেই সম্মান জানিয়ে আজকের শোভাযাত্রা। বিভিন্ন ক্লাবের সদস্যরা পা মিলিয়েছেন। জোড়াসাঁকো থেকে রেড রোড পর্যন্ত দুর্গাপুজো-সম্মান মিছিলে ছৌ-শিল্পী, স্কুল কলেজের পড়ুয়া, শিক্ষক-শিক্ষিকা থেকে রাজনৈতিক নেতা, টলিউডের শিল্পীরাও পা মেলালেন।
যেভাবে বৃষ্টিভেজা কলকাতার রাজপথে বাংলার মানুষ দুর্গোৎসবকে নামিয়ে আনলেন, এ-দৃশ্য তৃণমূল নেত্রী মমতার সাফল্যকেই যেন সামনে আনে। একাধিক কুৎসা, বিজেপি-সিপিএম নেতাদের ধারাবাহিক আক্রমণ, বিভিন্ন কেন্দ্রীয় এজেন্সি দিয়ে মোদি সরকারের তল্লাশির পরও যেভাবে মমতার ডাকে সাড়া দিয়ে রঙিন পোশাকে ১০০-র বেশি ক্লাব, লক্ষাধিক মানুষ গান-উলুধ্বনি-শঙ্খধ্বনিতে মুখরিত গোটা মধ্য কলকাতা বুঝিয়ে দিল, বাংলা আছে মমতার পাশেই।