শিলং: সোমবার ২৭ ফেব্রুয়ারি (27 Feburary) মেঘালয়ে ভোটগ্রহণ হবে।৬০টি বিধানসভা (Assembly) কেন্দ্রের প্রার্থীদের ভাগ্য নির্বাচন করবে রাজ্যের জনতা। রাজ্যের ষাটটি বিধানসভা আসনের মধ্যে ৩৬টি খাসি (Khasi) ও জয়ন্তী (Joyanti) পাহাড় অঞ্চলে, আর বাদবাকি ২৪টি গারো পাহাড় অঞ্চলে।
পরিসংখ্যান বলছে, এবারের বিধানসভা (Assembly) নির্বাচনে ২১ লক্ষের বেশি (২১,৭৫,২৩৬) ভোটার ভোট (Vote) দেবেন। পুরুষ ভোটারদের তুলনায় নারী ভোটারদের সংখ্যাই বেশি। মোট মহিলা ভোটার ১০.৯৯ লক্ষ এবং পুরুষ ভোটারের সংখ্যা ১০.৬৮ লক্ষ৷ এবার ভোটপ্রার্থী ৩৬৯ জন, এর মধ্যে ৩৬ জন মহিলা প্রার্থী। ৪৪ জন নির্দল প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। এখানে উল্লেখ্য, ২০২৩ সালে মেঘায়লয়ে প্রথমবার ভোট দিচ্ছেন ৮১,০০০ তরুণ-তরুণী।
রাজনৈতিক ওয়াকিবহাল মহলের বক্তব্য, রাজ্যের ক্ষমতাসীন ন্যাশনাল পিপলস পার্টিকে এবার অন্যান্য বিরোধী দলগুলি জোর টক্কর দিতে পারে। এরকমই সম্ভবনা রয়েছে। এবারের নির্বাচনে রাজ্যের শাসকদলের জন্য গলার কাঁটা দুর্গম ও পার্বত্য অঞ্চলে পরিকাঠামোগত উন্নয়নের অভাব। এছাড়া, বেশকিছু দুর্নীতির অভিযোগও রয়েছে এনপিপি সরকাররের বিরুদ্ধে।খবরে প্রকাশ, জয়ন্তী এবং খাসি পার্বত্য অঞ্চলে অবৈধ কয়লা খননের বিষয়টিও নির্বাচনের উপর প্রভাব ফেলতে পারে।
মেঘালয় বিজেপি প্রধান আর্নেস্ট মাওরি গত শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে বলেছেন, “রাজ্যে যদি বিজেপি ক্ষমতায় আসে, তবে তারা দেশের অন্যান্য বিজেপি শাসিত রাজ্যের মতো এরাজ্যে গোমাংস খাওয়ার উপর কোনও বিধিনিষেধ আরোপ করবে না। খ্রিস্টানদের আরও নিরাপত্তার ব্যবস্থা করবে। খাদ্যাভ্যাস আমাদের সংস্কৃতি, তাই দল কোনও কিছু চাপিয়ে দেবে না। আমরা অনেকেই শূকরের মাংস, গরুর মাংস, মুরগির মাংস এবং মাছ খাই। এতে দলের কোনও সমস্যা নেই। এসব নিয়ে কোনও বিধিনিষেধও থাকবে না।”
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ন্যাশনাল পিপলস পার্টি ১৯টি আসন দখল করেছিল। কংগ্রেস পেয়েছিল ২১টি আসন।বিজেপির (BJP) ঘরে গিয়েছিল দু’টি আসন। আর ইউনাইটেড ডেমোক্রেটিক পার্টির ঝুলিতে গিয়েছিল ছয়টি আসন। মেঘালয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের (Trinomool Congress) প্রধান বিরোধী দল হয়ে ওঠা ২০২১ সাল থেকে। ১২ জন বিধায়ককে ঘর ভাঙিয়ে নিজেদের শিবিরে নিয়ে এসেছে তৃণমূল। এরমধ্যে অন্যতম হল প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মুকুল সাংমা।এবার বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস ৫৮টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে।
আরও পড়ুন: Haimanti Gangopadhyay: হৈমন্তী নির্দোষ, তবে কোথায় আছেন জানেন না বললেন তাঁর মাও
নির্বাচনী নিয়ম মেনে সবকটি দলই ভোটের আগে জোর কদমে প্রচার সেরেছে।গেরুয়া শিবির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা এবং আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার মতো হেভিওয়েট নেতাদের নিয়ে এসেছিল প্রচারে।অন্যদিকে, কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীকে ত্রিপুরায় ভোটপ্রচারে দেখা না গেলেও, তিনি শিলংয়ে এসে জনসভা করে গিয়েছেন। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও মেঘালয়ে এসে জনসভা করেছেন। তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রও দলের হয়ে জোর কদমে প্রচার চালিয়ে গিয়েছেন।
এবার বিধানসভা নির্বাচনের জন্য মেঘালয়ে নিরাপত্তা জোরদার রাখতে ও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য ১১৯ কোম্পানি আধাসামরিক বাহিনী মোতায়েন থাকছে।গত শনিবার থেকে দোসরা মার্চ ভোট গণনার দিন পর্যন্ত বাংলাদেশ লাগোয়া আন্তর্জাতিক সীমান্ত সিল করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। রাজ্যের আন্তর্জাতিক সীমান্তবর্তী এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে। গত শুক্রবার থেকে পূর্ব খাসি পার্বত্য জেলার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের ১ কিলোমিটারের ধারে কাছে লকজনের যাতায়াতের উপর কড়া নিষেধাজ্ঞা জারি কড়া হয়েছে।আগামী ২ মার্চ পর্যন্ত এই নির্দেশ বলবৎ থাকবে।