কলকাতা: বালিগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী বাবলু সুপ্রিয় জিতলেন ঠিকই। দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছেন সিপিএম তথা বাম প্রার্থী সায়রা শাহ হালিম। তার থেকেও বড় কথা হল, এই কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী কেয়া ঘোষকে প্রায় ১৮ হাজার ভোটে পিছনে ফেলে দিয়ে খেলা শেষ করলেন সিপিএমের সায়রা। এক কথায় বলা যায়, কলকাতা শহরের মানুষ বিজেপিকে চায় না। এই ফলাফল সেটাই বুঝিয়ে দিল। কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের কথায়, শহরের মানুষ বিজেপিকে প্রত্যাখ্যান করেছে।
সদ্য শেষ হয়েছে কলকাতা পুরসভার ভোট। পুরভোটেও বিজেপি দাঁত ফোটাতে পারেনি। বিজেপি বালিগঞ্জে জিতবে, এমন বড় আশা দলের নেতারাও করেননি। আবার বিজেপি তৃতীয় স্থানে চলে যাবে, এমনটাও রাজ্য নেতারা ভাবেননি। শনিবার সকাল থেকে যখন বিভিন্ন রাউন্ডের ফল ঘোষণা করা হচ্ছিল, তখন শুরু থেকেই বিজেপি প্রার্থী ছিলেন চতুর্থ স্থানে। তাঁর থেকে কংগ্রেস প্রার্থী কামারুজ্জামান চৌধুরিও বেশি ভোট পাচ্ছিলেন প্রথম বেশ কয়েক রাউন্ডে। পরে অবশ্য কংগ্রেস প্রার্থী পিছিয়ে পড়েন।বিজেপির কেয়া তৃতীয় স্থানে উঠে আসেন।
আরও পড়ুন: Firhad Hakim: বিজেপিকে মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছে, কটাক্ষ ফিরহাদের
কলকাতা পুরসভার ভোটেও ভোট শতাংশের ক্ষেত্রে বামেরা বিজেপিকে পিছিয়ে ফেলে দ্বিতীয় স্থানে ছিল। বালিগঞ্জের উপনির্বাচনেও সেই ট্রেন্ডই বজায় থাকল। বালিগঞ্জে উপনির্বাচনের প্রচারে দেখা যায়নি বিজেপির কোনও কেন্দ্রীয় নেতাকে। রাজ্য নেতারাও নম নম করে প্রচার সেরেছেন। উল্লেখযোগ্য কোনও রাজ্য নেতাকে প্রচারে দেখা যায়নি। যা করার, করেছেন কলকাতার নেতারা। তবে কি দলের রাজ্য নেতারা আগে থেকেই বালিগঞ্জকে খরচার খাতায় ধরে রেখেছিলেন ? ভোটে হারার পর বিজেপির অন্দরে সেই প্রশ্ন উঠেছে।
এক বিজেপি নেতা বলেন, কলকাতায় এমনিতেই আমাদের তেমন কোনও সংগঠন নেই। তার উপর এখন পর্যন্ত দক্ষিণ কলকাতা সাংগঠনিক জেলা কমিটি হয়নি। এই সংগঠন নিয়ে তৃণমূলের মতো দলের বিরুদ্ধে লড়াই করা যায় না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই বিজেপি নেতা যা বলেছেন, সেই কথা বলেই বহিষ্কারের কোপে পড়েছেন বিজেপির অন্যতম প্রাক্তন রাজ্য সহ সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার। তিনি অবশ্য এখন দল বদলে তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সভাপতি হয়ে গিয়েছেন।
আরও পড়ুন: Deganga Rape Case: দেগঙ্গা ধর্ষণ-কাণ্ডে তদন্তকারীদের লালবাজারে তলব দময়ন্তীর
শুধু বড় বড় কথা বললেই যে ভোটে জেতা যায় না, তা বালিগঞ্জের ফল বিজেপিকে আবারও চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল। বালিগঞ্জে তৃণমূলের সাংগঠনিক শক্তি অনেক মজবুত। আর সিপিএম এবার দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই করেছে। সেই ফসলই ঘরে তুলেছে সিপিএম। তৃণমূলের কাছে বাম বা সিপিএম প্রার্থী হেরেছেন বটে। কিন্তু তিনি হারিয়ে দিয়েছেন বিজেপিকে। এটাই বা কম কীসের।