এ এফ সি কাপের মূল পর্বে ওঠার জন্য এটিকে মোহনবাগানকে হারাতে হবে বাংলাদেশের আবাহনীকে। মঙ্গলবার সল্ট লেক স্টেডিয়ামে সন্ধ্যা সাতটার সেই ম্যাচে মোহনবাগান পূর্ণ শক্তি নিয়ে নামতে পারছে না। আত্মীয় বিয়োগ হওয়ায় রয় কৃষ্ণ ফিরে গেছেন দেশে। আর চোট না সারায় সন্দেশ ঝিঙ্গন এখনও ম্যাচ খেলার মতো ফিটনেস অর্জন করতে পারেননি। তবে আবাহনী ম্যাচে পাওয়া যাবে গোলকিপার অমরিন্দর সিং এবং উইঙ্গার লিস্টন কোলাসোকে। আবাহনীকে হারাতে পারলে মোহনবাগান এ এফ সি কাপের মূল পর্বে উঠবে যেখানে তাদের খেলতে হবে বাংলাদেশের বসুন্ধরা কিংস, ভারতের গোকুলম এফ সি এবং মালদ্বীপের মাজিয়া এফ সি-র সঙ্গে।
তবে তার আগে আবাহনী। শ্রী লঙ্কার ব্লু স্টারকে ৫-০ গোলে হারিয়ে মোহনবাগানের মনোবল এখন তুঙ্গে। সেই ম্যাচে জোড়া গোল করেছিলেন ফিনল্যান্ডের মিডফিল্ডার জনি কাউকো এবং উইঙ্গার মনবীর সিং। আবাহনী ম্যাচেও তারা নিজেদের সেরাটা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত। এই ম্যাচে মোহনবাগানের চার বিদেশি হবেন ডিফেন্সে তিরি, মাঝ মাঠে জনি কাউকো এবং হুগো বুমো। এদের সঙ্গে ফরোয়ার্ডে থাকবেন ডেভিড উইলিয়ামস। আর টিমের বাকি সাত সদস্য হবেন গোলে অমরিন্দর সিং, ডিফেন্সে প্রবীর দাস, প্রীতম কোটাল এবং শুভাশিস বসু। মাঝ মাঠে দীপক ট্যাংরি, মনবীর সিং এবং লিস্টন কোলাসো। এদের নিয়ে মোহনবাগান যাদের বিরুদ্ধে নামবে তাদের শক্তি একেবারে উপেক্ষণীয় নয়। কারণ সাত বারের বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়ন আবাহনী টিমের বিদেশিরা বেশ ভাল। অন্তত কাগজে কলমে। দলের দুই বিদেশি ফরোয়ার্ড হলেন কোস্তারিকার ড্যানিয়েল কলিনদ্রেস এবং ব্রাজিলের রাফায়েল অগুস্তো। কলিনদ্রেস ২০১৮-র কোস্তারিকা বিশ্ব কাপে দেশের জার্সি গায়ে একটা ম্যাচে শুরু থেকেই ছিলেন। অন্য একটি ম্যাচে তিনি পরে নেমেছিলেন। আর রাফায়েল ভারতীয় ফুটবলে পরিচিত নাম। আই এস এল-এ দু বারের চ্যাম্পিয়ন চেন্নাইয়ান এফ সি-র সদস্য ছিলেন তিনি। খেলেছেন বেঙ্গালুরু এফ সি-তেও। আর ডিফেন্ডার মিলাদ শেখ সোলেইমনি ইরানের প্লেয়ার। এদের সঙ্গে ব্রাজিলের ফরোয়ার্ড ডোরিনটন গোমেস থাকলে আবাহনীর আক্রমণ আরও জোরদার হত। কিন্তু চোটের জন্য তাঁকে পাচ্ছে না ঢাকার টিম।
আবাহনীর অধিনায়ক নবিব নওয়াজ জীবন খেলেন সেন্টার ফরোয়ার্ডে। কলকাতার টিমের অধিনায়ক প্রীতম কোটালের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক দাদা-ভাইয়ের। বছর দুয়েক আগে কলকাতায় এসে করোনা আক্রান্ত হয়ে গিয়েছিলেন জীবন। সুস্থ হওয়ার পর দেশে ফেরা নিয়ে সমস্যায় পড়েন বিমান চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায়। সেই সময় প্রীতম তাঁকে নিজের গাড়ি করে বনগাঁ সীমান্তে পৌছে দিয়ে আসেন। সেখান থেকে তিনি ফিরে যান ঢাকায়। সেই কৃতজ্ঞতায় কলকাতায় আসার সময় দুই বাক্স ইলিশ মাছ নিয়ে এসেছেন জীবন। দিয়েছেন প্রীতমকে। জীবন বলেছেন, “মাঠে আমরা প্রতিদ্বন্দ্বী। কেউ কাউকে ছাড়ব না। কিন্তু মাঠের বাইরে আমরা দাদা-ভাই।”
আবাহনীর কোচ মারিও লেমস পর্তুগালের লোক। বলেছেন, “মোহনবাগান খুবই শক্তিশালী দল। আমরা শ্রী লঙ্কার টিমের বিরুদ্ধে ওদের খেলা দেখেছি। ওদের অ্যাটাকিং কোয়ালিটি ভাল। গোল করার এক গাদা লোক। ডিফেন্সেও ভারসাম্য আছে। আমাদের কাজটা কঠিন।” আর মোহনবাগানের কোচ জুয়ান ফেরান্দো বলেছেন, ” এ এফ সি কাপের মূল পর্বে যাওয়ার জন্য আমাদের জিততেই হবে ম্যাচটা। আমরা জেতা ছাড়া কিছু ভাবছি না। তবে কাজটা কঠিন। আবাহনী বেশ ভাল টিম।” সব কিছু দেখে মনে হচ্ছে মঙ্গল সন্ধ্যায় যুবভারতীতে একটা বেশ হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের প্রত্যাশা করতে পারেন গ্যালারির হাজার চল্লিশ দর্শক।