মহালয়া থেকেই একটু একটু করে তাল ঠুকছিল কলকাতা। চতুর্থীতে এসে একেবারে আসরে নেমে পড়ল তিলোত্তমা। বেশ কিছু স্কুল-কলেজে ইতিমধ্যেই ছুটি পড়ে গিয়েছে। অফিস-কাছারির সূর্য ডুবতেই আলোর জোয়ারে ভেসে উঠল পুজো মণ্ডপগুলি। আজ আর কোনও বাধাই বাঁধ মানল না। বৃষ্টি অসুরের চোখরাঙানি রয়েছে, তাই পায়ে পায়ে সাত তাড়াতাড়ি সেলিব্রেটি পুজোগুলো দেখে নেওয়া। বিকেল নামতেই দেখা গেল উত্তর থেকে দক্ষিণ, পূর্ব থেকে কলকাতা লাগোয়া শহরতলির পুজোয় কচিকাঁচাসহ প্রবীণরাও মাঠে নেমে পড়েছেন। মূল ভিড় ঠেলার আগে একটু ফাঁকা মাঠে গোল দিতে নেমে পড়েছেন কল্লোলিনীর মেসি-রোনাল্ডো।
আরও পড়ুন: ৭৬তম বছরে ত্রিধারা সম্মিলনীর বিশেষ আকর্ষণ দুর্গাপুজো নিয়ে থিম সং
মাসের প্রায় শেষ, অনেক জায়গায় এখনও বেতন হয়নি। তাতে কী, বোনাসের পুঁজি নিয়ে পুজোর শেষ মুহূর্তের কেনাকেটায় ঘাম ঝরাচ্ছেন বহু মানুষ। বড়বাজার, হাতিবাগান, শ্যামবাজার, গড়িয়াহাট, পার্ক স্ট্রিট, নিউ মার্কেটের দোকানগুলিতে সেই চেনা ভিড়। ভিড়ে থিকথিক করছে মফসসলের দোকানগুলিও। খদ্দেরদের বায়না মেটাতে ঘাম মোছারও সময় পাচ্ছেন না। জনতার ভিড়ে অফিস ফেরত যাত্রীরাও নাকাল। মেট্রো, চক্ররেল সহ শিয়ালদহ ও হাওড়ার ট্রেনগুলিতে উপচে পড়া ভিড়। বাসেও একই অবস্থা। গোদের উপর বিষফোঁড়ার মতো রাস্তায় যানজটের কারণে একদিকে বাস আটকে যাচ্ছে। ফলে, দীর্ঘ সময় স্ট্যান্ডে হা-হুতাশ করতে হচ্ছে ঘরমুখো যাত্রীদের।
এত কিছুর মধ্যেও কলকাতার রাস্তায় রাস্তায় জ্বলে উঠেছে উৎসবের আলো। মণ্ডপগুলি সেজে উঠেছে নানা রূপে। দক্ষিণের চেতলা, মুদিয়ালি, একডালিয়া, দেশপ্রিয় পার্ক, উত্তরের শ্রীভূমি, টালা, আহিরীটোলা, মহম্মদ আলি পার্ক, কলেজ স্কোয়ার প্রভৃতি বিখ্যাত মণ্ডপগুলিতে এখনই হালকা হালকা ভিড় জমতে শুরু করেছে। গোটা শহর যেন আলোর গয়নায় রাজকন্যার সাজে সেজে উঠেছে। দুর্গাপুজোর টি টোয়েন্টির কোয়ার্টার ফাইনালেই যেন এদিন ম্যাচ জিতে নিল নগরবাসী।