কেতুগ্রাম: ভোট পরবর্তী হিংসায় খুন হন পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রাম থানার শ্রীপুর গ্রামের বলরাম মাজি। পরবর্তীকালে সেই মামলার তদন্তভার যায় সিবিআইয়ের হাতে। এবার মৃত বিজেপি কর্মীর মা অভিযোগ তুললেন, দোষীদের শাস্তি চাওয়ায় পরিবারের সদস্যদের খুন এবং মহিলাদের ধর্ষণ করার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। অভিযুক্ত তৃণমূল নেতার পাল্টা দাবি, এই সব বিজেপির চক্রান্ত।
২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার দুই দিন পর ৪ মে কেতুগ্রামের শ্রীপুর গ্রামে ব্যপক অশান্তি হয়। অভিযোগ, ওই দিন সন্ধ্যায় বেশ কয়েকজন তৃণমূল সমর্থক বিজেপি কর্মী বলরাম মাজির উপর চড়াও হয়। তাঁকে ব্যাপক মারধর করা হয়। রক্তাক্ত অবস্থায় স্থানীয় এক হাসপাতালে ভর্তি করা হয় বলরামকে। ৫ তারিখ রাতে হাসপাতালেই মৃত্যু হয় তাঁর।
আরও পড়ুন: Droupadi Murmu | ৬ আদিবাসী নেতাকে নজরবন্দি করল রাজ্য পুলিশ
ছেলের মৃত্যুর পর মা টুম্পা মাজি তৃণমূল নেতা সাহিদুল আলম মোল্লা সহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেন। পুলিশ সাহিদুল সহ অভিযুক্তদের গ্রেফতারও করে। এর কিছুদিন পরেই সুপ্রিম কোর্ট ও কলকাতা হাইকোর্ট রাজ্যের ভোট পরবর্তী সন্ত্রাসের সব মামলার তদন্তভার দেয় সিবিআইকে। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা দায়িত্ব পাওয়ার পরই নিহতের বাবা মিতোন মাজি ও মা টুম্পা মাজি গোয়েন্দাদের জানিয়েছিলেন, ঘটনার দিন হামলাকারীরা রড, লাঠি, ধারালো অস্ত্র ও বোমা নিয়ে তাঁদের বাড়িতে চড়াও হয়েছিল। তারপর বলরামকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায় শ্রীপুর দিঘির পাড়ে। সেখানেই নির্মমভাবে কুপিয়ে খুন করা হয় তাঁদের ছেলেকে।
গত সপ্তাহেই টুম্পা মাজি জেলার পুলিশ সুপারের কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। তাঁর অভিযোগ, ছেলেকে খুনের পরেও অভিযুক্তরা জামিন পেয়ে গিয়েছে। এখন তারা হুমকি দিচ্ছে, যাতে ওই মামলায় কেউ আদালতে সাক্ষ্য দিতে না যায়। স্থানীয় থানায় অভিযোগ জানাতে গেলেও পুলিশ অভিযোগ নিতে অস্বীকার করে বলে দাবি টুম্পা। অবশেষে তিনি পুলিশ সুপারের দ্বারস্থ হন। জানা গিয়েছে, অভিযোগপত্র জমা দেওয়ার পরই পুলিশ সুপার কেতুগ্রাম থানার আইসিকে অভিযোগের ভিত্তিতে এফআইআর দায়ের করে ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দেন।
কেতুগ্ৰাম ১ পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য অভিযুক্ত সাহিদুল আলম মোল্লা বলেন, এই সব অভিযোগ মিথ্যা। আমি জামিন পাওয়ার পর প্রায় দুবছর ধরে গ্রামের বাইরে রয়েছি। পুলিশ নির্দেশ দেওয়ায় গ্রামে যাইনি এখনও। তাহলে কী করে হুমকি দিলাম? এ সব বিজেপির চক্রান্ত।