কলকাতা: রাজভবনে (Raj Bhavan) সাপ্তাহিক রিপোর্ট না দেওয়ায় রাজ্যের ছয় উপাচার্যকে শো-কজ করলেন রাজ্যপাল তথা আচার্য সি ভি আনন্দ বোস (CV Ananda Bose)। সব বিশ্ববিদ্যালয়ই জেলার। তবে গত ৪ এপ্রিল এবং ২৩ মে রাজ্যপাল উপাচার্যদের চিঠি দেন। তারপরও জবাব না মেলায় এই শো-কজ বলে রাজভবন সূত্রের খবর। যদিও কলকাতা, প্রেসিডেন্সি, যাদবপুর, সংস্কৃত, রবীন্দ্রভারতীর মতো বিশ্ববিদ্যালয়কে এখনও রাজভবন কোনও চিঠি পাঠায়নি বলে সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে।
প্রসঙ্গত, রাজ্যপাল ৪ এপ্রিল এক নির্দেশিকা জারি করে জানান, এখন থেকে উপাচার্যদের পঠনপাঠন এবং আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত সাপ্তাহিক রিপোর্ট পাঠাতে হবে রাজভবনে। ওই নির্দেশিকার তীব্র বিরোধিতা করে রাজ্য সরকার। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু (Bratya Basu) বলেন, রাজ্যপাল এই নির্দেশিকা জারি করতে পারেন কি না, তা নিয়ে আমরা আইনজ্ঞ মহলের সঙ্গে কথা বলব। আশা করি, উনি ওই নির্দেশিকা প্রত্যাহার করে নেবেন। একই সঙ্গে রাজ্যপালের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শনও ভালোভাবে নেয়নি নবান্ন। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, রাজ্যপাল মত্ত হস্তীর মতো বিশ্ববিদ্যালয়ে দাপাদাপি না করে বিলগুলি ছেড়ে দিলে ভালো হয়। রাজ্যপালের এই নির্দেশিকার প্রতিবাদ করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও বলেন, উপাচার্যরা কাজ না করে সাপ্তাহিক রিপোর্ট দিতে যাবেন নাকি?
আরও পড়ুন: Abhishek Banerjee | অভিষেকের নবজোয়ার যাত্রায় চাকরি পেলেন যুবক
এরপর গত ২৩ মে রাজ্যপাল ফের উপাচার্যদের চিঠি দেন। তাতে আগের নির্দেশিকার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলা হয়, সাপ্তাহিক রিপোর্ট দিতেই হবে। তারপরেও কোনও উপাচার্য সাপ্তাহিক রিপোর্ট পাঠাননি। রাজভবন সূত্রের খবর, এতেই চটেছেন রাজ্যপাল। তিনি ছয় উপাচার্যকে শো-কজ করেন।
এই শো-কজ করাকে কেন্দ্র করে রাজভবনের সঙ্গে নবান্নের সংঘাত আরও বাড়বে বলে মনে করছে শিক্ষা মহল। রাজ্যপাল এভাবে উপাচার্যদের শো-কজ করতে পারেন কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে রাজ্য সরকার। শিক্ষা মহল বলছে, বিষয়টি নজিরবিহীন। এর আগে কোনও রাজ্যপাল উপাচার্যদের শো কজ করেছেন, এমন কথা মনে করতে পারছেন না প্রবীণরাও। এর আগে জগদীপ ধনখড় (Jagdeep Dhankhar) রাজ্যপাল থাকাকালীনও তাঁর সঙ্গে উচ্চশিক্ষা নিয়েই নবান্নের বিরোধ গড়িয়েছিল অনেক দূর পর্যন্ত। কিন্তু তিনিও উপাচার্যদের শো-কজ করার পথে হাঁটেননি। ধনখড়ও নানা সময়ে উপাচার্যদের বিভিন্ন নির্দেশ দিয়েছেন। রাজ্য সরকার উপাচার্যদের সেই সব নির্দেশ মানতে নিষেধ করেছিল। উপাচার্যরা সেই নির্দেশ মানেননি। তবু ধনখড় কোনও উপাচার্যকে শো-কজ করেননি বলে উচ্চশিক্ষা দফতরের এক অফিসার দাবি করেন।