কলকাতা: রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) বাবা শিশির অধিকারীর (Sisir Adhikari) নির্বাচনী হলফনামায় কারচুপির অভিযোগ আনল তৃণমূল (TMC)। শাসকদলের মুখপাত্র তথা রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh) শনিবার সাংবাদিক বৈঠক ডেকে অভিযোগ করেন, সাংসদ হিসেবে শিশির অধিকারী তাঁর সম্পত্তি নিয়ে যে হলফনামা দিয়েছেন, তাতে বিস্তর অসঙ্গতি রয়েছে। ২০১১ সালে তিনি হলফনামায় দাবি করেন, তাঁর আয় ১৫ লক্ষ ৮৬ হাজার টাকা ছিল। ২০১২ সালে সেই পরিমাণ বেড়ে হয় ১০ কোটি ৩৪ লক্ষ টাকা। কুণালের প্রশ্ন, এক বছরে আয় বা সম্পত্তির পরিমাণ ১০ কোটি টাকা বাড়ল কী করে? শিশির অবশ্য বলেন, জেলখাটা আসামীর কোনও প্রশ্নের জবাব আমি দিতে চাই না।
কুণাল কাগজ হাতে নিয়ে আরও জানান, শিশির অধিকারী ২০১৪ সালে আবার হিসেব দিলেন, সম্পত্তির পরিমাণ ১ কোটি ৯৪ টাকা হয়েছে। কেমন করে সেই পরিমাণ ৯ কোটি টাকা কমে গেল, প্রশ্ন কুণালের। তিনি বলেন, এই প্রশ্নের জবাব দলবদলু শিশিরবাবুকে দিতে হবে। আজকে শিশিরবাবুর হলফনামার হিসাব দিলাম। আগামিদিনে অধিকারী পরিবারের বাকি সদস্যদের কীর্তিকলাপ ফাঁস করা হবে।
আরও পড়ুন: বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে গিয়ে কী বললেন হার্দিক?
তৃণমূল নেতা বলেন, আমি প্রধানমন্ত্রী, ইডি এবং সিবিআই কর্তাকে চিঠি দিয়ে জানাব, শিশিরবাবুর বিরুদ্ধে তদন্ত করতে হবে। গোটা অধিকারী পরিবারকে তদন্তের আওতায় আনতে হবে। তাঁর অভিযোগ, শিশিরবাবুর ছেলে চোর। তিনি সারদা এবং নারদ কাণ্ডে সিবিআইয়ের এফআইআরে নাম থাকা অভিযু্ক্ত। ইডি, সিবিআইয়ের হাত থেকে বাঁচতে তিনি বিজেপিতে গিয়েছেন।
শুক্রবারই কুণাল ঘোষ জানিয়েছিলেন, তিনি শনিবার অধিকারী পরিবারের নানা অনিয়ম এবং কারচুপি ফাঁস করেবন। সেইমতো কুণাল এদিন ক্যামাক স্ট্রিটে বসে সাংবাদিক বৈঠক করেন। তাঁর দাবি, অবিলম্বে ইডি, সিবিআইকে এই বিষয়ে তদন্ত করতে হবে। কুণাল জানান, ইউপিএ জমানায় প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের কাছে সাংসদদের প্রতি বছরের আয়ের হিসেব দিতে হত। আমি সেই কাগজ থেকেই তথ্য সংগ্রহ করেছি। এছাড়া এডিআরের থেকেও তথ্য নেওয়া হয়েছে।
তিনি এদিন রাজ্যের বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধেও আক্রমণ শানান। শুভেন্দু অবশ্য আগেই বলেছেন, আড়াই বছর জেলখাটা আসামীর কোনও বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া আমি দিই না।
শিশির অধিকারী কাগজে কলমে এখনও তৃণমূলের সাংসদ। কিন্তু ২০২১ সালে বিধানসভা ভোটের সময় তিনি বিজেপির মঞ্চে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে হাজির ছিলেন। খাতায় কলমে তৃণমূল সাংসদ থাকলেও তাঁর সঙ্গে শাসকদলের এখন বিশাল দূরত্ব তৈরি হয়েছে।