Monday, June 30, 2025
HomeIPL 2025কোহলি কবিতা হলে শামি বিজ্ঞান

কোহলি কবিতা হলে শামি বিজ্ঞান

Follow Us :

প্রথম ইনিংসের পর মনে হচ্ছিল এ তো অবিকল আধুনিক সময়ের বিগ ফ্যাট ইন্ডিয়ান ওয়েডিং। দুঃখ-পারিবারিক বিবাদ সব সরিয়ে সুখ আর জৌলুসের ফোয়ারা।

প্রথম ইনিংসের পর মনে হচ্ছিল এ তো করণ জোহরের ফিল্ম। মেলোড্রামা শেষ করে সুখের মিলন।

প্রথম ইনিংসের পর মনে হচ্ছিল বিশ্বকাপ সেমিফাইনালের মতো হাইপ্রেসার ম্যাচ এমন একাধিক মিলিয়ে দেওয়ার অঙ্ক নিয়ে নামে নাকি ? এটা ফিকশন।

প্রথম ইনিংস চলতে চলতে মনে হচ্ছিল এমন সব মায়াবী মুহূর্ত কি গল্প-উপন্যাসেও তৈরি হয় !

প্রথম ইনিংস চলতে চলতে শেষ দিকে ট্রাভেল এজেন্টকে বলে দিলাম আমেদাবাদ ফ্লাইটে আমার জন্য অনলাইন চেক ইন করে রাখতে।

কে জানত দ্বিতীয় ইনিংস চলাকালীন একটা সময় এক বন্ধুস্থানীয়কে ফোন করে বলতে হবে আমার জন্য আমেদাবাদের হোটেল এখুনি কনফার্ম করো না। টিকিটটাও কি আটকানো যায় ? উইলিয়ামসনদের পঁয়তাল্লিশ মিনিটের যৌথ ব্যাটিং প্রকল্প তখন অমঙ্গলের সব চিহ্ন নিয়ে চলে এসেছে। ৩৯৬এর মতো তাগড়াই টোটালকেও তখন নির্ভরযোগ্য মনে হচ্ছে না। বিয়েবাড়ি রূপান্তরিত হতে চলেছে সাদা কাপড়ে বাধা প্যান্ডেলে। বারবার মনে পরে যাচ্ছে এমাঠে ছত্রিশ বছর আগে দেখা গ্রাহাম গুচ। শুধু কপিল দেবকে মেরেই যিনি ক্ষান্ত হননি । দুই স্পিনারকে সুইপ মেরে মেরে ভারতকে ম্যাচে বাইরে করে দিয়েছিলেন। ঠিক তাই তো করছেন উইলিয়ামসন আর মিশেল। তফাতের মধ্যে এঁরা বেশি ধরণের সুইপ মারেন।কোনওটা রিভার্স। কোনও টা স্লগ সুইপ। রোহিত শর্মাকে দেখে মনে হচ্ছে চুল ছেঁড়ার মতো অবস্থা।

অথচ শুরুতে তখনও ওয়াংখেড়ের আকাশ নীল। মেঘের কোনো লক্ষণ নেই। চিলচিৎকার হয়েই চলেছে। আর বিরাট কোহলির বিশ্বরেকর্ড গোটা মাঠকে এমন অদৃশ্য হোলিতে চুবিয়ে দিয়েছে যে সবাই সেই রং খেলায় মত্ত। রঙের চৌবাচ্চায় ডুবে কারও ট্রিগোনোমেট্রি করতে ভালো লাগে নাকি ? তাছাড়া যে মাঠে কাল রাত্তির দশটায় ম্যাচহীন অবস্থায় স্টেডিয়ামের বাইরে পাঁচশো লোক দাঁড়িয়ে থাকতে পারে। তারা শচীন টেন্ডুলকারের উপস্থিতিতে কোহলির তাঁকে ছাড়িয়ে যাওয়া দেখতে বসে ডেসিবেল লেভেল কোথায় নিয়ে যেতে পারে সহজেই অনুমেয়।

শুধু টেন্ডুলকার বলছি কেন ? বুধবারের ওয়াংখেড়ের মতো বিভিন্ন জগতের কেষ্টবিষ্টুদের সমাহার ক্রিকেটমাঠে শেষ কবে দেখেছি মনে করতে পারলাম না। অসুস্থ বচ্চন আসেননি। কিন্তু ছিলেন মুকেশ ও নীতা আম্বানি। ভিভ রিচার্ডস। ডেভিড বেকহাম। রজনীকান্ত। জন আব্রাহাম। সিদ্ধার্থ মালহোত্রা ও কিয়েরা আদবানি। এক ঝলক মনে হল মাধুরী দীক্ষিতের মতো কাউকে দেখলাম। এমন সাততারা লাইন আপের সামনে কোহলি তাঁর কাঙ্খিত এভারেস্টে পৌঁছলেন।

পৌঁছনোটাও যেন সিনেমা ! কুবেরের রত্নভাণ্ডারের সামনে নাকি শেষ প্রতিবন্ধক হিসেবে বিষধর সাপ বসে থাকে। যখন মনে হয় খাজানাটা পেয়ে গেছি সে অতর্কিত কামড়াতে আসে। কোহলির জন্য যেন তাই হল। ৯১ থেকে পুলে সিঙ্গলস নেওয়ার সময় হঠাৎ হ্যামস্ট্রিংয়ে টান ধরল। গোটা মাঠ তখন স্তব্ধবাক। সামান্য খেলাধুলো যারা করেছে তারাও জানে হ্যামস্ট্রিং খুব ভয়ঙ্কর একটা জায়গা। দু’তিন সপ্তাহ বসিয়ে দিতে পারে। কু ডাক শুরু হল যে এই ম্যাচ তো মনে হচ্ছে ভারত পার করে দেবে। বিরাট-শ্রেয়স দুর্দান্ত পার্টনারশিপের আগে রোহিত-গিল তাঁদের কাজ করে গিয়েছেন। কিন্তু এই চোট নিয়ে শুয়ে পড়া কোহলি না সেঞ্চুরি থেকে বঞ্চিত হয়ে যান। তার চেয়েও সর্বনাশা চিন্তা,হ্যামস্ট্রিং না আমেদাবাদ ফাইনাল থেকে তাঁকে সরিয়ে দেয়।

ঠিক তখনি কোহলি যেন বক্সিং রিংয়ের কোনায় পড়ে থাকা অবস্থা থেকে দশ গোনার আগে গা ঝাড়া দিয়ে উঠে পড়লেন। সাদা বলের মহানায়ক সত্যি তিনি। শচীন মানে শুধু ক্রিকেট নয়। একটা নির্দিষ্ট সময়ের ভারতবর্ষ। যুগ থেকে যুগে বেঁচে থাকবে তাঁর রূপকথা। শচীন অনেক ভালো আক্রমণ খেলেছেন। কিন্তু তাতে কী ?

 

নিছক সাদা বলের ক্রিকেটে কার্যকারিতা এবং ধারাবাহিকতাতে কোহলি তাঁকে ছাপিয়ে সামান্য এগিয়ে দাঁড়িয়ে। সর্বোচ্চ সেঞ্চুরির রেকর্ড তো অন্য জিনিস। কিন্তু সাদা চোখেও বারবার ধরা পড়ছে কোহলির জিনিয়াস। এতো চাপ নেওয়া। দিনের পর দিন ম্যাচ জেতানো।এই বন্য সাহস। সার্বিক শৃঙ্খলা। সব কিছু যোগ করলে যে নম্বর উঠছে তাকে সেকেন্ড বয়তে নামিয়ে দেবেন কী করে ? শচীন রূপকথা বেশ। কোহলি তাহলে অনুপম বেস্টসেলিং পদ্য।

 

কোহলিকে ঘিরে মাঠের ওই সব অবিস্মরণীয় মুহূর্ত আর উন্মাদনার পর মনে হচ্ছিল বিয়েবাড়ি ভরপুর চলছে। সব কিছু আনন্দ -ফুর্তিতে ভরা.খাওয়াদাওয়া শেষ.এবার একটু রিলাক্স করা যেতে পারে। আর ঠিক এই জায়গাতেই যেন আত্মতুষ্ট লাগছিল ভারতকে। কাপ নক আউট আজ পর্যন্ত তিনশো রান তাড়া করে কেউ জেতেনি।তো ৩৯৭ দূর অস্ত। ঠিক এখানেই গত দু’বারের মতো ভারতের সেমি ফাইনাল থেকে ছিটকে যাওয়ার প্রেত ভর করেছিল ওয়াংখেড়েতে। স্পিনারদের মার খাওয়ার দিনে বাঁচিয়ে দিয়ে গেলেন মহম্মদ শামি।

 

কোহলি যদি কবিতা হন। শামি ঘোর বিজ্ঞান। শ্রেয়সের ইনিংস নিশ্চয়ই দামি। রোহিতের চার্জ ছাড়া তো মোমেন্টাম তৈরি হতনা। কিন্তু টুর্নামেন্ট জুড়ে শামির ধারাবাহিকতা অকল্পনীয়। বিশ্বকাপ ফাইনালে ওঠা আটকে যাওয়ার অভিশপ্ত ট্রেন্ড থামাচ্ছেন বাংলায় খেলা শেখা ক্রিকেটার–এর চেয়ে সন্তুষ্টি আর কিসে হতে পারে। লিখতে ভুলে গেলাম ওয়াংখেড়ে থেকে জুহু–মুম্বই জুড়ে এখন আতশবাজি চলছে। বিয়েবাড়ি আবার জাঁকজমক সমেত বসেছে। যেখানে শুধুই হাসি আর গান।

RELATED ARTICLES

Most Popular

Video thumbnail
Kunal Ghosh | TMC | তৃণমূল ভবনে CCTV ফুটেজ দেখালেন কুণাল, তোলপাড় বাংলার রাজনীতি
02:48:30
Video thumbnail
India-Pakistan | ফের ভারতের ভয়ে কাঁপছে পাকিস্তান, দেখুন স্পেশাল রিপোর্ট
02:23:25
Video thumbnail
America | China | India | আমেরিকা, চিন, সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দাদাগিরি বন্ধ করবে ভারত?
02:31:21
Video thumbnail
Supreme Court | বিচারপতি নিয়োগে কলেজিয়ামে বহিরাগত শক্তির হস্তক্ষেপ, বি/স্ফো/রক বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত
03:31
Video thumbnail
Stadium Bulletin | এজবাস্টনে বুমরা নিয়ে নাটক চরমে
18:29
Video thumbnail
Hooligaanism | Melar Gaan | বকুলতলার মেলার গানে হুলিগানইজম
00:00
Video thumbnail
BJP | সখী আঁধারে একলা ঘরে...বিজেপি শাসিত কোন কোন রাজ্যে, কোন কোন গ্রাম অন্ধকারে?
01:17
Video thumbnail
Madan Mitra | Kasba Incident | কসবা কাণ্ডে কী বলেছিলেন মদন? যার জন্য শোকজ, দেখুন সেই ভিডিও
04:26:16
Video thumbnail
Israel | Benjamin Netanyahu | যু/দ্ধ থামতেই তেল আভিভে বিরাট বিক্ষো/ভ, স/ঙ্ক/টে নেতানিয়াহু
00:00
Video thumbnail
Donald Trump | সিজ ফা/য়া/র ব্রোকার ট্রাম্পের নয়া দাবি, শুনলে চমকে উঠবেন
00:00