কলকাতা: হাওড়ার (Howrah) ক্ষেত্রমোহন ব্যানার্জি লেনে বহুতল তৈরির স্বপ্ন এখন আদালতের হাতে। রাজ্য প্রশাসনের সদর দফতর ‘নবান্ন’র (Nabanna) দেড়শো মিটার দূরে হওয়ায় সেই জমি পড়েছে ‘হাই সিকিউরিটি জোন’-এর আওতায় (High Security Zone)। আর তাতেই শুরু হয়েছে এক প্রোমোটারের দুঃস্বপ্ন।
প্রায় পাঁচ বছর ধরে কলকাতা পুলিশের (Kolkata Police) অনুমোদন পেতে আদালত ও দফতরের চক্রে ঘুরছেন প্রোমোটার ও জমির মালিক। পুরসভার অনুমোদন মিললেও, বাধ সেধেছে লালবাজার (Lalbazar), কারণ নিরাপত্তা। পুলিশের দাবি, নবান্ন সংলগ্ন এলাকায় বহুতল নির্মাণে মানতে হবে ১৭ দফা শর্ত। কলকাতা পুলিশের সেই শর্ত চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা মামলায় চলতি সপ্তাহে বিচারপতি গৌরাঙ্গ কান্তর এজলাসে দু’দিন ধরে শুনানি চলে। আদালতে ৪ নভেম্বর কলকাতা পুলিশের তরফে পাল্টা সওয়াল করা হবে।
আরও পড়ুন: সোমবার থেকে ফের ঝলমলে রোদ, বৃষ্টি থামবে রাজ্যে
কলকাতা পুলিশের শর্তগুলি কী কী?
১. নবান্নর দিকে মুখ করে থাকা কোনও জানলা বা ব্যালকনি থাকবে না, এমনটাই পুলিশের নির্দেশ।
২. বিল্ডিংয়ের ছাদ কমপক্ষে ১০ ফুট উচ্চতায় পাঁচিলের মতো কাট আউটে ঢেকে দিতে হবে।
৩. ফ্ল্যাট বিক্রির সময় ক্রেতার অতীত অপরাধের রেকর্ড খতিয়ে দেখা বাধ্যতামূলক, জানিয়েছে পুলিশ।
৪. তাছাড়া ওই বহুতল কোনও ভাবেই বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহার করা যাবে না, এবং ভবনে সিসিটিভি লাগানোও বাধ্যতামূলক।
প্রোমোটার পক্ষের আইনজীবী শ্রীজীব চক্রবর্তী ও সুমিতাভ চক্রবর্তী বলেন, হাওড়া পুরসভা কলকাতা পুরসভার বিল্ডিং রুলস অনুসরণ করে। সেই নিয়ম অনুযায়ী, প্রতিটি ঘরে জানলা থাকা বাধ্যতামূলক, যাতে হাওয়া চলাচল ও প্রাকৃতিক আলো আসে। তাহলে পুলিশের এই নির্দেশ ‘আইনবিরুদ্ধ’ বলেই দাবি তাঁদের।
আইনজীবীরা প্রশ্ন তুলেছেন, “নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী-সহ বহু মন্ত্রী ও আধিকারিক কাজ করেন ঠিকই, কিন্তু তাঁদের নিরাপত্তায় আলাদা রক্ষী মোতায়েন করা হয়। তাঁরা যেখানে যান, নিরাপত্তা ব্যবস্থাও থাকে। তাহলে নবান্ন সংলগ্ন সাধারণ নাগরিকদের কেন জানলা বন্ধ করে থাকতে হবে?”
২০১৯ সালে প্রোমোটার ও জমির মালিকের মধ্যে চুক্তি হয়েছিল। কিন্তু পুরনো বিল্ডিং ভাঙতে গিয়েও পুলিশের আপত্তি ওঠে, যা নিয়ে দুই দফায় মামলা হয় হাইকোর্টে। শেষ পর্যন্ত আদালতের হস্তক্ষেপেই পুরনো বাড়ি ভাঙা সম্ভব হয়। এবার নতুন ভবন নির্মাণ ঘিরে শুরু হয়েছে দ্বিতীয় দফার লড়াই। বর্তমানে পুরো বিষয়টি কলকাতা হাইকোর্টের বিচারাধীন, আর বহুতল তৈরির ভাগ্য এখন নির্ভর করছে আদালতের রায়ের উপর।
দেখুন আরও খবর:



