skip to content
Sunday, February 9, 2025
HomeScrollঅদিতির সঙ্গে সাদা কালো | চল রাস্তায় সাজি ট্রামলাইন
Aditir Songe Sada Kalo

অদিতির সঙ্গে সাদা কালো | চল রাস্তায় সাজি ট্রামলাইন

স্মৃতি বিলাসিতায় বসে না থেকে আসুন না একটু অন্যভাবে ভাবা যাক?

Follow Us :

যেমনটা রোজ করে থাকি, একটা বিষয়ের অবতারণা আর সেই বিষয়কে নিয়ে অন্তত দুটো ভিন্ন মতামতকে এনে হাজির করা, যাতে করে আপনারা আপনার মতটাকে শানিয়ে নিতেই পারেন আবার আপনার বিরুদ্ধ মতটাকেও শুনে নিতে পারেন। জীবনানন্দ এক প্রায় শীতের কলকাতার রাস্তায় ট্রামে চাপা পড়ে মারা গিয়েছিলেন আর অনুপম রায়ের চল রাস্তায় সাজি ট্রামলাইন, এই তো আপাতত বাঙালির ট্রাম বিলাসিতা, না হলে সেই মহানগরের ট্রামের সেই অ্যান্টেনাএ স্পার্ক-এর ইমেজারি বা মধুবংশীর গলিতে সুদূর ট্রামের মর্মর আর কেই বা মনে রেখেছে। ট্রাম এখন এক স্মৃতি, ট্রাম এখন এক, জানিস তো আমাদের সময়ে আমরা বেহালা থেকে ট্রামে করে গড়ের মাঠে গিয়েছি, আশুতোষ কলেজ থেকে ট্রামে করে প্রিয়া সিনেমা হল, এসব আবাল মনখারাপের কথা। সে সব রাস্তায় ট্রাম লাইনের ক্লিভেজ এখন জিরো ফিগারের মতো সমান, ফ্ল্যাট, হুউউশ করে গাড়ি যাচ্ছে আসছে। পাশের বাড়ির দোতলা, তিনতলার লোকজন মিস করে সেই শেষ রাতের ট্রামের টং টং আওয়াজ, কিংবা প্রায় ভিস্তিওলার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে প্রথম ট্রামের ঘড়ঘড় শব্দ। হ্যাঁ, কলকাতার ট্রাম এখন সবচেয়ে পরিচিত রুটগুলো থেকে কবেই বিদায় নিয়েছে। ট্রাম কি কেবল কবিতা গান আর জীবনানন্দের মৃত্যু? সে কী তুলকালাম লড়াই, কলকাতা জুড়ে উথাল-পাথাল লড়াই, এক পয়সার ট্রাম ভাড়া বেড়েছিল, মধ্যবিত্তের সে কী প্রবল রাগ, সেই মধ্যবিত্তের পকেট থেকে কমবেশি ১০ হাজার টাকা উবে গেছে গত সাত দিনের শেয়ার বাজারের পতনে, কোনও রাগ দেখেছেন? কোনও উথাল-পাথাল ক্রোধ? এরেই কয় দিন বদলানো। আমরা ছোট্টবেলায় গান শুনেছিলাম, উঠা হ্যায় তুফান জমানা বদল রহা, তুফান উঠেছে, দিন বদলাবে, ও হরি দিন বদল এতদিনে হল, এক আমূল বদল। ট্রাম ভাড়ার আন্দোলনের কথা উঠলেই সমরেশ মজুমদারের কালবেলার নায়কের কথা মনে পড়ে, তার প্রথমদিনের কলকাতায় আসার দিনেই সেই উথাল পাথাল শহরে পুলিশের গুলি আর টিয়ার গ্যাসের ছবি।

আরও পড়ুন: অদিতির সঙ্গে সাদা কালো | ভারত বাংলাদেশের কাঁটাতারের গল্প

আমাদের ছোটবেলায় ট্রামে চড়াটা ছিল এক সেলিব্রেশন কারণ জগতের সব কিছু সেকেন্ড ক্লাসের অভিজ্ঞতা নিয়ে বেড়ে ওঠা বড় হওয়া আমরা বাবার হাত ধরে ফার্স্ট ক্লাসেই উঠতাম, বাকি জায়গায় তাঁর অক্ষমতাকে ঢাকার জন্যই। ট্যাক্সি নয়, আজ তোদের ফার্স্ট ক্লাসে চড়াব বলে বাবা আমাদের টেনে তুলতেন ট্রামের ফার্স্ট ক্লাসে, তাকিয়ে দেখতাম পিছনের সেই সেকেন্ড ক্লাসের অভাগা মানুষগুলোর দিকে, বেশ একটা বড়লোক হয়ে ওঠার গর্ববোধ হত। তারপর কলেজ জীবন, সেখানেও তো ট্রামের অনেক স্মৃতি, ট্রামেই কি সেই যুবকের মুখ প্রথম? বা সেই ট্রামে চড়ে একবার ধর্মতলা, সেই ট্রামে চেপেই আবার ফিরে আসার মধ্যে কত স্বপ্ন স্বপ্ন কথা, কত পরিকল্পনা, একবার তো একটা গোটা লিটল ম্যাগাজিনের জন্ম হয়েছিল ওই ট্রামের ভিতরে। বাদুড়ঝোলা ট্রাম দেখেছি, বৃদ্ধের ট্রাম মিস করা দেখেছি, পিতাকে দেখেছি তার কন্যাকে ট্রামে চড়িয়ে স্কুলে পাঠাতে। সেই ট্রাম চলে যায় মরি হায়। আসলে ট্রাম বোধহয় টাইপরাইটারের সঙ্গে অনেক দূরে কোথাও একটা দেখা করতে যাচ্ছে, সেখানে তাদের সেই মুখোমুখি বসে থাকা, আলাপ আলোচনা ধরে রাখবে কেউ একজন ১৯২১ সালের ঝকঝকে নতুন ৩৫ মিলিমিটার কিমানো মুভি ক্যামেরায়, কোডাক ফিল্মে।

স্মৃতি বিলাসিতায় বসে না থেকে আসুন না একটু অন্যভাবে ভাবা যাক? পৃথিবীর প্রতিটা শহরে না হলেও বেশিরভাগ শহরে ট্রাম আছে, সেসব ট্রাম হই হই করে চলে, শহরের মধ্যিখান দিয়ে তার নিজের লাইন ধরেই চলে, তাতে ভর্তি থাকে লোকজন, তারা স্মৃতি নয়, তারা সেসব দেশের ভীষণ দরকারি পাবলিক ভেহিকল। এবং তারা স্লথগতি নয়, সেরকম ভাবারও কোনও কারণ নেই, এই ক’দিন আগে ফ্রান্সের স্টাটসবুর্গে এক ট্রাম অ্যাক্সিডেন্টে ৮ জন গুরুতর আহত হয়েছে, ট্রামটি নাকি তার দ্রুত গতি সামলাতে না পারায় দুর্ঘটনার অভিঘাত বেড়েছে। যাঁরা যাননি তাঁদের বলি ছবির মতো এই স্টাটসবুর্গ শহরখানা এক্কেবারে প্রাচীন চেহারা নিয়ে রাখা আছে, সেই পুরনো রাস্তা, সরাইখানা, মিউজিয়াম আর রেস্তরাঁ, কেবল ঝকঝকে ট্রাম চালু হয়েছে ৯৪ সাল নাগাদ। রাশিয়ার মস্কো কেবল নয়, সাইবেরিয়ার একাটিরিনবার্গেও ট্রাম চলে, বরফ ঢাকা সেই সাইবেরিয়ার কেন্দ্র একাটিরিনবার্গ, যেখান থেকে উঠে এসেছিলেন ইয়েলেৎসিন, তাঁর শহরে ট্রাম দ্রুত গতিতেই চলে, নিন দেখুন, একটা ছবিও রইল। ট্রাম চলে ভলগোগ্রাদ মানে সেই স্তালিনগ্রাদেও। ট্রাম চলে পেরুর লিমাতে, আর্জেন্টিনার বুয়েনস এয়ার্সে, বা ব্রাজিলের রিও ডি জেইরোতে, ট্রাম চলে চীনে, ট্রাম চলে ইটালি, জার্মানির বিভিন্ন শহরে। তাহলে খামোখা আমরা এই কলকাতায় ট্রামের শোকগাথা লিখতে ব্যস্ত কেন? আদালতে যেতে হবে কেন? কিছু ইঞ্জিনিয়ার, যাঁরা বিষয়টা বোঝেন, একটা টিম বানিয়ে দেখে আসুন না বিদেশের এই শহরগুলোতে, তারপর ফিরে এসে কলকাতার ট্রাম ফিরিয়ে আনুন। আমাদের বিদ্যুতের চাহিদা বেড়েছে, কিন্তু উৎপাদনও বেড়েছে, আর ট্রামের মতো দূষণহীন যান আর পাব কোথায়? সব মিলিয়ে আবার ট্রাম ফিরে আসুক, খামোখা মানুষকে ট্রামলাইন সেজে বসে থাকতে হবে কেন?

RELATED ARTICLES

Most Popular

Video thumbnail
Arvind Kejriwal | Delhi Election | ভোটে হারের পর প্রথম মুখ খুললেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল, কী বললেন শুনুন
00:00
Video thumbnail
Delhi Election Live Updates | দিল্লিতে চলছে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই কে জিতবে? দেখুন প্রতি মুহূর্তের খবর
02:37:19
Video thumbnail
বাঙালিরাই ঠিক করবে বাংলায় কি হবে! কেন্দ্রের বিরুদ্ধেই কড়া সুর কার্তিক মহারাজের, নীরব কেন শুভেন্দু?
03:04:56
Video thumbnail
Delhi Election 2025 | AAP | BJP | আপকে টেক্কা দিচ্ছে বিজেপি, শেষ হাসি কে হাসবে?
01:59:45
Video thumbnail
Delhi Election 2025 | Live Results | পোস্টাল ব‍্যালটে পিছিয়ে আপ এগিয়ে বিজেপি , দেখুন Live
01:05:30
Video thumbnail
Arvind Kejriwal | আদৌ কি জিততে পারবেন কেজরিওয়াল?
02:19:05
Video thumbnail
Delhi Election 2025 | Arvind Kejriwal | দিল্লিতে ক্ষমতায় ফিরবে আপ? দেখুন বড় আপডেট
02:24:09
Video thumbnail
Delhi Election Results 2025 | শুরু গণনা, প্রাথমিক ট্রেন্ডে কে এগিয়ে? কে পিছিয়ে?
02:41:25
Video thumbnail
Arvind Kejriwal | Delhi Election | ভোটে হারের পর প্রথম মুখ খুললেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল, কী বললেন শুনুন
09:21:08
Video thumbnail
Delhi Election 2025 | দিল্লি ভোটে কে এগিয়ে?
02:35:11