নয়াদিল্লি: আজ, মঙ্গলবার গণেশ চতুর্থীর দিন এক ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী থাকল দেশ। স্বাধীনতার পর থেকে যে সংসদ ভবন বহু রাজনৈতিক উত্থান-পতনের প্রত্যক্ষদর্শী, সেই বাড়ি ছেড়ে নতুন ভবনের চৌকাঠ পেরলেন সাংসদরা। পুরনো সংসদ ভবনের নতুন নামও প্রস্তাব করলেন মোদি। ‘সংবিধান সদন’ নাম প্রস্তাব করেন তিনি। তার আগে সেন্ট্রাল হলে আয়োজিত এক বিদায়ী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, আজ বিশ্ব ভারতের স্বনির্ভরতা নিয়ে আলোচনা করছে। তাই এখন বিশাল দৃষ্টি দিয়ে ভারতকে দেখতে হবে। ছোট ক্যানভাসে যেমন বড় ছবি আঁকা যায় না, তেমনই দেশ সম্পর্কে বড় বড় ভাবনা ভাবতে হবে।
এই সংসদে প্রায় ৪ হাজার আইন পাশ হয়েছে। নতুন ভবনে যাওয়া কেবলমাত্র একটা অনুষ্ঠান নয়, এক নতুন ভবিষ্যতের সূচনা। প্রতিটি সাংসদ যেন এই দায়িত্ব পালন করেন। এই সংসদেই মুসলিম মা-বোনেরা ন্যায়বিচার পেয়েছেন। তাৎক্ষণিক তিন তালাক রোধে বিল পাশ হয়েছে। ৩৭০ ধারা বিলোপ হয়েছে।
আরও পড়ুন: রাজ্যে ২৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগের ঘোষণা পিসি মিত্তল গ্রুপের
সংসদের পুরনো ভবনের ঐতিহাসিক সেন্ট্রাল হলে ভারতীয় সংসদীয় ইতিহাসের ঐতিহ্য নিয়ে ভাষণ দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। মোদি বলেন, ১৯৫২ সাল থেকে এই সেন্ট্রাল হলেই ৪১ জন রাষ্ট্রপ্রধান সাংসদদের সামনে বক্তৃতা দিয়েছেন। ব্রিটিশ যুগের পুরনো সংসদ ভবন থেকে আজ, মঙ্গলবার নতুন বাড়িতে শুরু হতে চলেছে সংসদের বিশেষ অধিবেশন। গণেশ চতুর্থীর দিনে আর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই খুলে যাবে নয়া ঝাঁ চকচকে ভবনের সদর দরজা। এই অধিবেশনে সংসদ ভবনের উত্তরাধিকার বিষয়ে মূল্যবান বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়, লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা, লোকসভায় বিরোধী দলনেতা অধীর চৌধুরী, রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়্গে এবং প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। বেলা ১১টায় সংসদ সদস্যরা দেড় ঘণ্টার একটি অনুষ্ঠানে হাজির থাকেন। এরপর মধ্যাহ্নভোজের বিরতির পর লোকসভা ও রাজ্যসভার কার্যাবলি শুরু হবে। এর মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সহ সাংসদরা যৌথ ফটোসেশনে অংশ নেন। সেখানে বিজেপি সাংসদ নরহরি আমিন সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়েন।
কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে সেন্ট্রাল হলে অনুষ্ঠানে বলেন, এই সেই সেন্ট্রাল হল, যেখানে ১৯৪৬ থেকে ১৯৪৯ সাল পর্যন্ত সংবিধান পরিষদের বৈঠক হয়েছিল। আমরা গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে রাজেন্দ্র প্রসাদ, জওহরলাল নেহরু, সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল এবং দাদাসাহেব আম্বেদকরকে স্মরণ করছি এই দিনে।
প্রসঙ্গত, সোমবারই কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে মহিলা সংরক্ষণ বিল অনুমোদিত হয়ে গিয়েছে। এই বিলের মূল উপপাদ্য বিষয় হচ্ছে, লোকসভা ও বিধানসভা ভোটে মহিলাদের জন্য ৩৩ শতাংশ সংরক্ষণ। গত রবিবারই হায়দরাবাদে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব পাশ হয়েছে। মহিলা সংরক্ষণ বিল প্রসঙ্গে প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে প্রাক্তন কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী বলেন, এটা আমাদের, আপনা হ্যায়।