বাঁকুড়া : ৩০ নভেম্বরের মধ্যে সারা রাজ্যের হিমঘরগুলি থেকে আলু বের করে খালি করার নির্দেশিকা জারি করেছে রাজ্যের কৃষি বিপনন দফতর। গত ১ নভেম্বর সরকারি এই নির্দেশিকার পর থেকেই চরম দুশ্চিন্তায় সারা রাজ্যের পাশাপাশি বাঁকুড়া জেলার আলু চাষী থেকে সংরক্ষনকারী ও ব্যবসায়ীরা। সরকারের বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে হিমঘরে মজুত বিপুল পরিমাণে সংরক্ষিত আলু কোনও ভাবেই বের করা সম্ভব নয় বলেও দাবি করা হয়েছে ব্যবসায়ী, সংরক্ষনকারী ও কৃষকদের তরফে। চরম ক্ষতির হাত থেকে বাঁচতে সরকারের কাছে হিমঘরে সংরক্ষিত আলুর রাখার সময় বাড়ানোর আবেদন জানিয়েছেন তারা।
গত বছর আলুর অত্যধিক দাম এবং আলু চাষের অনুকূল আবহাওয়ার কারণে চলতি বছরে সর্বকালের রেকর্ড ছাপিয়ে আলুর উৎপাদন হয়েছে সারা রাজ্যে। যেমন রেকর্ড উৎপাদন তেমনি রেকর্ড আলু সংরক্ষিত হয়েছে হিমঘরে। জানা গেছে চলতি বছরে সারা রাজ্যে সাড়ে ৪০০’র অধিক হিমঘরে প্রায় সাড়ে ১৪ কোটি বস্তা আলু সংরক্ষণ করা হয়েছে। এর মধ্যে বাঁকুড়া জেলার ৪৫টি হিমঘরে আলু সংরক্ষন হয়েছিল আনুমানিক ১ কোটি ৫০ লক্ষের বেশি বস্তা। সূত্রের খবর, গত ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত রাজ্যের হিমঘরগুলি থেকে মোট সংরক্ষিত আলুর সাড়ে ৯ কোটির বেশি বস্তা আলু খালি হয়েছে। হিসেব অনুযায়ী গড়ে প্রায় ৬৭% আলু সারা রাজ্যের হিমঘর গুলি থেকে বের করা হয়েছে। বাঁকুড়া জেলার পরিসংখ্যান বলছে জেলায় হিমঘর থেকে সংরক্ষিত আলুর ৬৬% আলু বের হয়েছে। নভেম্বরের দোরগোড়ায় এখন সারা রাজ্যের পাশাপাশি বাঁকুড়া জেলার হিমঘরে মজুত সংরক্ষিত আলুর পরিমাণ প্রায় ৩৩%। চলতি মাসের শেষে হিমঘরগুলি থেকে আরও ১২-১৫ শতাংশ আলু খালি হবে বলে অনুমান। তবুও ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত হিমঘরে মজুত থেকে যাবে ১৮-২১ শতাংশ আলু। এই পরিসংখ্যান থেকে অত্যন্ত এটা স্পষ্ট যে, সরকারি নির্দেশিকার সময়সূচীতে আলু বের করে হিমঘর খালি করা কোনও ভাবেই সম্ভব নয়। সরকারি নির্দেশিকায় বেধে দেওয়া সময়ের মধ্যে হিমঘর খালি করতে গেলে এখন সেই বিপুল পরিমাণ আলুকে ফেলে দেওয়া ছাড়া আর কোনও গতি নেই আর যার ফলে চরম ক্ষতির মুখে পড়তে হবে আলু চাষী থেকে শুরু করে ব্যবসায়ীদের। তাই এখন চরম দুশ্চিন্তার মধ্যে বড়সড় ক্ষতির মুখে আলু চাষীরা। এদিকে সরকারি নির্দেশ আসার পর থেকে হিমঘর কর্তৃপক্ষও হিমঘরে মজুত আলু বের করে নেওয়ার জন্য আলু চাষী, সংরক্ষণকারী ও ব্যবসায়ীদের অনুরোধ করেছে।