সিউড়ি: বৃহস্পতিবার সকালে বোলপুরের বাড়িতে সিবিআই হানা। অনুব্রত মণ্ডলকে নিয়ে যাওয়া হল আসানসোলে। বিকেলে আনুষ্ঠানিকভাবে সিবিআই তাঁকে গ্রেফতার করার কথা ঘোষণা করল। তারপর পেশ করা হয় আসানসোলে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে। এই দীর্ঘ সময়ে তৃণমূল অনুব্রতর গ্রেফতারি নিয়ে একটি কথাও বলেনি। বিকেলে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন জয়প্রকাশ মজুমদার।
কিন্তু তার অনেক আগেই অনুব্রতকে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হলেন বীরভূম জেলায় তাঁর কট্টর বিরোধী বলে পরিচিত শেখ কাজল। জেলায় এই দুই নেতার বিরোধের কথা সর্বজনবিদিত। নানুর ব্লকের নেতা কাজলের বিরুদ্ধে খুন, জখমের অনেক মামলা রয়েছে। দীর্ঘদিন জেলও খেটেছেন। দুর্দিনে তাঁর পাশে দলের কেউ দাঁড়াননি বলে প্রকাশ্যেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন কাজল। সেই কাজল এদিন ফেসবুকে লিখলেন, চেহারা, দাপট, অবস্থান, ক্ষমতা ও শক্তি চিরস্থায়ী হয় না। দুঃখের বিষয়, অনেকেই ভুলে যায়। ফেসবুকে কাজল তিনটি রুগণ সিংহের ছবি দিয়েছেন। তাতে দাঁড়িয়ে থাকা একটি সিংহের চেহারা হাড় জিরজিরে। বুকের পাঁজর গোণা যাচ্ছে। পেট একেবারে চোপসানো। বসে থাকা দুটি সিংহের হালও খুব খারাপ।
নেট দুনিয়ায় বলাবলি হচ্ছে, শেখ কাজল প্রতীক হিসেবে ছবিটি ব্যবহার করেছেন। প্রশ্ন উঠেছে, কাজল কি অনুব্রতকে মনে করিয়ে দিতে চেয়েছেন, ভবিষ্যতে তাঁর হালও এই সিংহের মতো হবে?
গত ৫ জুলাই মাসে নানুরে তৃণমূলের এক কর্মিসভা হয়। সেখানে কাজল ছাড়াও হাজির ছিলেন জেলার মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা, নানুরের তৃণমূল বিধায়ক বিধানচন্দ্র মাঝি। নানুরের প্রাক্তন বিধায়ক গদাধর হাজরার সঙ্গে কাজলের বহুদিনের বিরোধ। জেলা সভাপতি অনুব্রতর আশীর্বাদের হাত ছিল বরাবর গদাধরের মাথার উপর। কাজল এবং গদাধর গোষ্ঠীর বিরোধে বারবার উত্তপ্ত হয়েছে নানুর। একাধিক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়েছে দুই শিবিরের মধ্যে। তার জেরে বহুদিন নানুরে ঢুকতে পারেননি কাজল। মাঝে বেশ কয়েক বছর তাঁর সঙ্গে তৃণমূলের সম্পর্ক ছিল না। সম্প্রতি তিনি আবার তৃণমূলে ভিড়েছেন। ২০০০ সালে নানুরের সূচপুরে ১৫ জন তৃণমূল কর্মীকে খুন করা হয়। অভিযোগ ওঠে তখন শাসনক্ষমতায় থাকা সিপিএমের বিরুদ্ধে। সেই ঘটনার কথা উল্লেখ করে কাজল কর্মিসভায় বলেন, যারা গণহত্যার সঙ্গে জড়িত তাদের তৃণমূলে আনা হয়েছে। নেতারা সূচপুরের সেই শহীদদের পরিবারের কোনও খোঁজ নেন না।