হাওড়া: হাওড়ায় টাকা উদ্ধার কাণ্ডে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এল লালবাজারের হাতে। অনলাইনে বিদেশী মুদ্রা কেনা-বেচার পাশাপাশি অতিরিক্ত আয়ের সুযোগের লোভ দেখিয়ে প্রতারণার ফাঁদ পেতে ছিলেন শৈলেশ পাণ্ডে। পুলিশ সূত্রে খবর, এক মাসে নির্দিষ্ট দুটি অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় ৭৭ কোটি টাকার লেনদেনও করেছিলেন তিনি।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পায়, ভুয়ো নথি দিয়ে অন্যের নামে অ্যাকাউন্ট খুলে গোটা কারবার চালাচ্ছিলেন পাণ্ডে ব্রাদার্স। মূলত অনলাইনে বিদেশী মুদ্রা কেনা-বেচা, ক্রিপ্টোকারেন্সি পাঠ দেওয়ার কথা বলে মানুষকে ফোন করত অভিযুক্তরা। এরপর প্রথমে নির্দিষ্ট অংকের টাকা ফি হিসেবে তাদের জমা দেওয়ার কথা বলা হত। তারপর অনলাইনে ক্লাসের পাশাপাশি অন্য কাউকে এখানে যোগ করাতে পারলে কমিশন পাবেন এমন লোভও দেখানো হত। এদিকে কারও বিনিয়োগের পরিমাণ ১০ হাজার ডলার ছাড়ালে তার অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়া হত। এভাবেই প্রত্যেকের থেকে কয়েক লক্ষ থেকে কোটি টাকা হাতিয়ে নিতেন শৈলেশ ও তার ভাইয়েরা।
কীভাবে কাজ করত এই অ্যাপ?
* জানা গিয়েছে, এই অ্যাপে ন্যূনতম অঙ্কের টাকা দিয়ে বিদেশি মুদ্রা কেনা-বেচার প্রশিক্ষণ দেওয়া হত।
* ১২৫ ডলার দিতে হত অ্যাপের মাধ্যমে প্রশিক্ষণের জন্য।
* পাশাপাশি, চেন সিস্টেমের মাধ্যমে আরও লোক আনতে বলা হত। যত বেশি লোক আনবে, তত বেশি কমিশন।
* আর তারপর টাকার অঙ্ক অনেকটা বেড়ে গেলে সেই ব্যবহারকারীর অ্যাকাউন্ট ব্লক করে দেওয়া হত।
* এই নিয়ে প্রথম অভিযোগ জমা পড়েছিল চলতি বছরের অগাস্ট মাসে।
* অভিযোগ জানিয়েছিল একটি রাষ্টায়ত্ত ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ।
*অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছিল ১৬, স্ট্র্যান্ড রোডের ঠিকানা দিয়ে।
অন্যদিকে, এই কাণ্ডে অনুসন্ধান শুরু করল ইডি। ইতিমধ্যে, হেয়ার স্ট্রিট থানায় যে দায়ের হওয়া এফআইআর-এর কপি সংগ্রহ করেছে ইডি। ইডি সূত্রে খবর, ইসিআইআর করে এই মামলায় প্রয়োজনে তদন্তে নামতে পারে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টোরেট। এই ঘটনায় প্রায় ৩০ কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করেছে কলকাতা পুলিশ। এই ঘটনায় আরও বড় কোনও চক্র জড়িত আছে বলে মনে করছে ইডি। যার সঙ্গে বিদেশী যোগসূত্র থাকতে পারে বলে অনুমান কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার।