টেক্সাস: রাতের বেলা জালের ওপারে কে ওটা ঘুরঘুর করে? জন্তুর পোশাকে কোনও মানুষ নাকি? ছবিটা জুম ইন করে দেখতে গিয়ে চোখ কপালে নেটিজেনদের একাংশের৷ অদ্ভুত দর্শনধারী সত্যিই কুপাকাবরা নয় তো? শুনে হেসে উড়িয়ে দিয়েছে আর এক দল৷ বলছে, আরে ধুর৷ এটা আমেরিকা৷ এখানে কুপাকাবরা কোথা থেকে আসবে? ও সব গল্পে শোনা যায়৷ বাস্তবে ‘রক্তখেকো’ কুপাকাবরাকে ক’জন দেখেছে?
টেক্সাসের একটি চিড়িয়াখানার তরফে প্রকাশ্যে আনা ছবিকে ঘিরে জোর তরজা চলছে মার্কিন মুলুকের সোশাল মিডিয়ায়৷ গত ২১ মে টেক্সাসের অ্যামারিলোর চিড়িয়াখানার বাইরে ওই অদ্ভুত দেখতে জন্তুটির ছবি সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়েছে৷ চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ অনেক চেষ্টা করেও প্রাণীটির পরিচয় খুঁজে বের করতে ব্যর্থ হয়েছে৷ অগত্যা তারা সোশাল মিডিয়া ব্যবহারকারীদের সাহায্য চেয়েছে৷ চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ টুইট করে জানিয়েছে, গত ২১ মে রাত ১টা ২৫ মিনিটে তোলা ছবি এটি৷ কী মনে হয়? কে এই ইউএও (আনআইডেন্টিফায়েড অ্যামারিলো অবজেক্ট)? জন্তুর মুখোশের আড়ালে মানুষ? নাকি কুপাকাবরা?
বস্তুত কুপাকাবরা নামটা হাওয়ায় ভাসিয়ে দিয়েছে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ৷ এশিয়ায় বসবাসকারীদের কাছে নামটি খুব একটা পরিচিত না হলেও লাতিন আমেরিকায় এটি বেশ জনপ্রিয়৷ কুপা নামটা এসেছে স্প্যানিশ শব্দ কুপার থেকে৷ এর অর্থ শুষে নেওয়া৷ কাবরা মানে ছাগল৷ বাংলায় তর্জমা করলে দাঁড়ায় ছাগলের রক্ত চোষা প্রাণী৷
১৯৯৫ সালে পুয়ের্তো রিকোতে প্রথম কুপাকাবরার হামলার খবর প্রকাশ্যে আসে৷ জানা যায়, ওই সময় পুয়ের্তো রিকোতে ছাগল, ভেড়া এবং অন্যান্যা গৃহপালিত পশুদের উপর নিয়মিত হামলা হচ্ছিল৷ বাড়ির বাইরে, রাস্তায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকত পশুদের মৃতদেহ৷ অদ্ভুতভাবে জন্তুদের উপর হামলা হত৷ শরীর থেকে মাংস কেউ খুবলে খেত না৷ শুধু রক্ত শুষে নিত৷ রক্তহীনতাতেই মৃত্যু হত জন্তুদের৷ তখনই ছড়ায় কুপাকাবরার আতঙ্ক৷
কেমন দেখতে রাক্ষুসে কুপাকাবরাকে? কোথাও কোথাও রিপোর্টে বলা হয়েছে, অনেকটা ক্যাঙারুর মতো দেখতে৷ দু’পায়ে খাঁড়া হতে পারে৷ আবার সরীসৃপ জাতীয়দের মতো লেজও আছে৷ কিন্তু সরীসৃপ প্রাণীদের মতো বুকে ভর দিয়ে চলাফেলা করে না৷ দু’পায়ে হাঁটতে সক্ষম কুপাকাবরা৷ সেই কুপাকাবরা তবে কি ঠিকানা বদলে মার্কিন মুলুকে বসতি গেঁড়েছে? আপাতত এই বিতর্কে তোলপাড় আমেরিকা৷