লাহোর: পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে (Former Pakistan PM Imran Khan) গ্রেফতার (Arrest Warrant) করা নিয়ে উত্তাল লাহোর (Lahore)। ৮ ঘণ্টার ব্যর্থ অভিযান। গ্রেফতার করা গেল না ইমরান খান(Imran Khan)-কে। তোষাখানা মামলায় (Toshakhana Case) গ্রেফতারির জন্য মঙ্গলবারই ইসলামাবাদ থেকে লাহোরে (Lahore) হাজির হয়েছিল পুলিশ (Police)। কিন্তু পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর বাড়ির কাছেও ঘেঁষতে পারেনি তারা। গোটা এলাকা ঘিরে রাখে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (Tehreek-E-Insaf) কর্মী-সমর্থকরা। ইমরানের দল তেহরিক-ই-ইনসাফের (PTI) কর্মী-সমর্থকদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে, কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে। ইমরানের বাড়ির ভিতর লক্ষ্য করেও কাঁদানে গ্যাস ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে এবার নিজেই আদালতে হাজিরা দেওয়ার কথা জানালেন ইমরান খান। লাহোর হাইকোর্টে চিঠি দিয়ে আগামী ১৮ মার্চ আদালতে হাজিরা দেবেন বলে জানান তিনি।
বুধবার সকালেই লাহোর হাইকোর্ট বারের প্রেসিডেন্টকে চিঠি লেখেন পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ দলের প্রধান ইমরান খান। সেই চিঠিতে তিনি লেখেন, আগামী ১৮ মার্চ তিনি তোশাখানা মামলায় আদালতে হাজিরা দেবেন।
আরও পড়ুন: Meta Layoff | মেটায় আপাতত নতুন নিয়োগ বন্ধ
মঙ্গলবারই ইমরান খান জানান, গ্রেফতারির জন্য় তিনি মানসিকভাবে প্রস্তুত। তিনি বলেন, আমি মানসিকভাবে প্রস্তুত কারণ বাইরে বিশাল বাহিনী এসেছে। শুধুমাত্র পুলিশ নয়, রেঞ্জাররাও এসেছে যা সেনাবাহিনীর অংশ। মনে হচ্ছে যেন পাকিস্তানের সবথেকে বড় সন্ত্রাসবাদী লুকিয়ে রয়েছে।
এদিকে, দলনেতার গ্রেফতারি পরোয়ানা নিয়ে পিটিআই ইসলামাবাদ হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলে প্রধান বিচারপতি বুধবার শুনানির দিন ধার্য করেছেন। যদিও পিটিআই এদিনই জরুরি ভিত্তিতে শুনানির দাবি তুলেছিল। কিন্তু, সেই আবেদন খারিজ করে দেন প্রধান বিচারপতি আমির ফারুক।
এদিন বিকেল থেকে লাহোরসহ পাকিস্তানের বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে ইমরান অনুগামীরা। লাহোরের পরিস্থিতি সবথেকে অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। পিটিআইয়ের সমর্থকরা লাঠিসোটা নিয়ে আক্রমণ করে পুলিশকে। যথেচ্ছ ইট-পাটকেল ছোড়া হয়। জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ প্রথমে লাঠি চালায়, জলকামান চালায়। তাতেও কাজ না-হওয়ায় কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে। শেষ পর্যন্ত পাওয়া খবরে জানা গিয়েছে, এখনও ইমরান-ভক্তদের দমানো সম্ভব হয়নি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আধা সামরিক বাহিনী ডাকা হয়েছে।
সূত্রে জানা গিয়েছে, দলের উচ্চপদস্থ নেতারা ইমরানের সঙ্গেই তাঁর বাসভবনে রয়েছেন। সেখানে দলের পরবর্তী কর্মসূচি ও পদক্ষেপ নিয়ে নেতাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেন ইমরান খান। সেখান থেকেই ভিডিয়ো ভাষণে ইমরান বলেন, পুলিশ আমাকে গ্রেফতার করতে এসেছে। ওরা ভাবছে আমাকে গ্রেফতার করলেই বোধহয় পাকিস্তানের মানুষ ঘুমিয়ে পড়বে। কিন্তু, আমি সত্যিকারের আজাদির জন্য আপ্রাণ লড়াই করে যাব। আমার যদি কিছু হয়ে যায়, আমি যদি খুন হই, তাহলে আপনারা প্রমাণ করে দেবেন এই লড়াই যেন জারি থাকে। একজনের সিদ্ধান্ত প্রাণ থাকতে মেনে নেবেন না। আপনাদের কাছে আমার আবেদন, আইনের শাসন, স্বাধীনতা রক্ষার লড়াইয়ে শামিল হন।