কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান আদৌ তাঁর কুর্সি ধরে রাখতে পারবেন কি না, তা আগামী সপ্তাহেই নির্ধারিত হয়ে যাবে। কিন্তু তার আগে ক্রমশ চাপ বাড়ছে পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের উপরে৷ নিজের দলের সাংসদ তো বটেই, বিরোধীরাও তাঁর উপর চাপ বাড়াচ্ছে৷ কটাক্ষ করতেও ছাড়ছেন না৷ সোমবার পাকিস্তান মুসলিম লিগ নেত্রী তথা প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নাওয়াজ শরিফের মেয়ে মরিয়ম নাওয়াজ প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে কটাক্ষ করেন৷ তিনি সরাসরি প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, ‘‘আপনার খেলা শেষ’’৷
মরিয়েমের বক্তব্য, ‘দ্রাস্ফীতি এবং অপশাসনের কারণে আপনার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ অন্ধকার৷ আপনার খেলা শেষ৷ আসন্ন ভোটাভুটিতে আপনি হারছেন৷’’ তিনি আরও বলেন, পাকিস্তানের বহু সরকার এরকম পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে গেছে। কিন্তু ইমরান খানের মতো কোনও প্রধানমন্ত্রী উদ্ভট মন্তব্য করেননি।
এরকম পরিস্থিতি বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে উচ্চ আদালতে দ্বারস্থ হয়েছে ইমরান খানের সরকার। পাকিস্তান সরকার সুপ্রিম কোর্টকে পরামর্শ দিতে বলেছে৷ পিটিশন দাখিল করার পর অ্যাটর্নি জেনারেল খালিদ জাভেদ খান সাংবাদিকদের বলেন, সরকারকে পরামর্শ দেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে৷ বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর সাংসদরা দল ছেড়ে দিলে কিংবা দল পরিবর্তন করলে যেন তাঁদের আজীবন অযোগ্য বলে ঘোষণা করা হয়৷ খানের কথায়, ‘‘মৌলিক প্রশ্নগুলোর মধ্যে রয়েছে… ভিন্নমতাবলম্বী এমপিদের কি আজীবনের জন্য অযোগ্য ঘোষণা করা হবে, …. সেই সাংসদের ভোটের তাৎপর্য কী হবে এবং এই এমপিদের ভোট গণনা করা হবে কি না’’
পাকিস্তানের দু’টি প্রধান বিরোধী দলের জোট দিন কয়েক আগেই ইমরান খানের নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনে। দাবি করে, সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছে সরকার। রাজনৈতিক মহলের খবর, ইমরান খানের নিজের দল পাকিস্তান তেহরিক-এ-ইনসাফের (পিটিআই) একাধিক সাংসদও নাকি তাঁকে আর চাইছেন না। তাঁকে নিয়ে দলীয় সাংসদদের অসন্তোষের আঁচ ইমরান নিজেও পেয়েছেন। যে কারণেই তাঁর উপর চাপ বাড়ছে।
৩৪২ সদস্যের পাক পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে ইমরান খান সরকারে কমপক্ষে ১৭২টি ভোট দরকার। ইসলামাবাদের সিন্ধ হাউসে ইমরানের দল পিটিআইয়ের একাধিক সাংসদ রয়েছেন। সূত্রের খবর, এই সাংসদের অনেকেই নিজের দলের বিরুদ্ধেই ভোট দেবেন। বিরোধীদের দাবি, লোকসভার স্পিকার যে কোনও সময় অধিবেশন ডাকতে পারেন। যে কারণে দলীয় সাংসদদের ইসলামাবাদে থাকার নির্দেশ দেওয়া হতে পারে।
আরও পড়ুন:Russia Ukraine War: কিভে ফের কারফিউ জারি, জোরালো রুশ হামলার আশঙ্কাতেই কি সতর্কতা
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ইমরান খানের দুশ্চিন্তা বাড়িয়েছে পাকসেনার সঙ্গে দূরত্ব। এই অনাস্থা ইস্যুতে পাকসেনা ইচ্ছাকৃত ভাবেই ইমরানের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখছে বলে খবর।
পাক মিডিয়ার খবরে দাবি, সেনাপ্রধান কামার জাভেদ বাজওয়া এবং আইএসআই-এর ডিরেক্টর জেনারেল লেফটেন্যান্ট জেনারেল নাদিম আনজুম ইমরান খানকে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে যেতে বলেছেন। যদি সত্যি তা হয়ে থাকে, ইমরানের পক্ষে গদি ধরে রাখা মুশকিল।