কলকাতা: স্কুল সার্ভিস কমিশনের (School Service Commission) সুপারিশপত্র ছাড়াই গ্রুপ সির ৫৭ জনকে চাকরি দেওয়া হল কী করে, প্রশ্ন তুললেন কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি অভিজিত গঙ্গোপাধ্যায় (Justice Abhijit Ganguly)। শুক্রবারই তিনি ওই ৫৭ জনের তালিকা প্রকাশের নির্দেশ দেন কমিশনকে। সাড়ে তিনটে নাগাদ এই মামলার ফের শুনানি হবে বলে বিচারপতি জানিয়ে দেন। তিনি বলেন, আজই চাকরি বাতিলের নির্দেশ দেব। কে তাঁদের সুপারিশপত্র দিলেন, শান্তিপ্রসাদ সিনহা? আদালতের নির্দেশ মেনেই দুই ঘণ্টার মধ্যে ওই ৫৭ জনের নামের তালিকা প্রকাশ করে কমিশন।
উচ্চ প্রাথমিক, মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিকে নিয়োগের জন্য সুপারিশপত্র দেয় কমিশন। তার ভিত্তিতে নিয়োগপত্র দিয়ে থাকে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। এই সুপারিশপত্র এবং নিয়োগপত্র দেওয়া নিয়েও বিস্তর অনিয়ম হয়েছে বলে আগেই আদালতের নজরে এসেছে। যে ৫৭ জনের চাকরি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, তাঁদের কমিশন সুপারিষপত্র দেয়নি বলে অভিযোগ। গত বছরই একটি মামলায় অভিযোগ উঠেছিল, গ্রুপ সি পদে ৩৫০ জন কর্মীকে বেআইনিভাবে নিয়োগ করা হয়।
আরও পড়ুন:Sukanya Mandal | অনুব্রত-কন্যা সুকন্যা মণ্ডলকে তলব ইডির, বাবা-মেয়েকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরার সম্ভাবনা
এদিন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় কমিশনের কাছে জানতে চান, সুপারিশ করা হয়েছে, এমন কত জনের ওএমআর শিটে কারচুপি করা হয়েছে। কমিশন জানায়, ৭৫৮ জনকে সুপারিশপত্র দেওয়া হয়েছিল। বিচারপতি বলেন, ওই ৭৫৮ জনের সুপারিশপত্রও কমিশনকে প্রত্যাহার করতে হবে। যে ৩৮১ জনের ক্ষেত্রে কমিশন সুপারিশ করেনি অথচ তাঁরা চাকরি পেয়েছেন, তাঁদের চাকরি বাতিল করার ব্যাপারে কমিশনের কী নিয়ম আছে, তাও জানতে চান বিচারপতি। কমিশনের আইনজীবী বলেন, এটা আমাদের রেকর্ডেই নেই। কাজেই তাঁদের চাকরি বাতিল করা বা সুপারিশপত্র বাতিল করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। ৫৭ জনের হদিশ মিলেছে। বাকিদের বিষয় এখনও জানা যায়নি।
বিকেল সাড়ে তিনটের পর আদালত কী রায় দেয়, সেটাই এখন দেখার। প্রসঙ্গত, পার্থ চট্টোপাধ্যায় শিক্ষামন্ত্রী থাকাকালীন তাঁর নির্দেশেই এই শান্তিপ্রসাদ সিনহাকে স্কুল সার্ভিস কমিশনের উপদেষ্টা করা হয়েছিল। সেই উপদেষ্টা কমিটির বাকি চার সদস্যও সিবিআইয়ের নজরে রয়েছেন। এর আগে কলকাতা হাইকোর্ট নিযুক্ত অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি রণজিত বাগের তদন্ত কমিটি তার রিপোর্টে বলেছিল, ওই উপদেষ্টা কমিটিই বেআইনি। শান্তিপ্রসাদ-সহ একাধিক শিক্ষাকর্তার বিরুদ্ধে বাগ কমিটি ফৌজদারি মামলা দায়ের করারও সুপারিশ করে। পরবর্তীকালে কলকাতা হাইকোর্ট নিয়োগ দুর্নীতির সিবিআই এবং ইডি তদন্তের নির্দেশ দেয়। সেই নির্দেশ মেনেই দুই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা তদন্ত চালাচ্ছে। সিবিআই মনে করে, শান্তিপ্রসাদ এই দুর্নীতির অন্যতম কিংপিন। শান্তিপ্রসাদ-সহ একাধিক শিক্ষাকর্তা এখন জেলবন্দি সিবিআইয়ের হাতে ধরা পড়ে।