কলকাতা: শহরের রাজপথে ট্রাম (Tram) চালানোর দাবিতে আন্দোলনে নামল এসইউসি (SUC) । বৃহস্পতিবার নাগরিকদের স্বাক্ষরসম্বলিত স্মারকলিপি দেওয়া হয় পরিবহণ দফতরে। তার আগে এসইউসি সমর্থকরা ধর্মতলায় মিছিলও করেন। এসইউসি নেতৃত্বের দাবি, ট্রাম চালানোর পক্ষে বহু মানুষ স্বাক্ষর করেছেন।
এই বামদলের পক্ষ থেকে এক দাবিপত্রে জানানো হয়েছে, রাজ্যের বর্তমান সরকার ট্রাম পরিষেবা বন্ধ করতে যে তৎপরতা দেখাচ্ছে, তার শুরু হয়েছে বাম জমানাতেই। ১৯৯২ সালে রাজ্য পরিবহণ দফতর সিদ্ধান্ত নেয় ধাপে ধাপে ট্রাম পরিষেবা তুলে দেওয়া হবে এবং ট্রাম কোম্পানির ‘অতিরিক্ত’ জমি বিক্রি করা হবে আবাসন ব্যবসায়ীদের কাছে। ট্রামের জমিতে তৈরি হবে বহুতল আবাসন। সেই বছরই ৪০টি বাস নিয়ে বাস পরিষেবা চালু করে ট্রাম দফতর। সেদিন ট্রাম কোম্পানির বাস চালানোর সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করে এসইউসি । তখন সিপিএম সরকারের পুলিশ এসইউসি সমর্থকদের উপর অত্যচার চালিয়েছিল।
আরও পড়ুন: Kolkata Metro | রবিবার মেট্রোর সময়সূচিতে রদবদল, জেনে নিন সময়সূচি
এসইউসি বক্তব্য, গণপরিবহণ হিসাবে ট্রাম এক দিকে যেমন দূষণহীন, তেমনই আরামদায়ক ও নিরাপদ। বয়স্ক, শিশু, শারীরিক প্রতিবন্ধীদের পক্ষেও ট্রাম অত্যন্ত সুবিধাজনক। একটি বাসের আয়ু যেখানে গড়ে ১০ বছর সেখানে ট্রামের আয়ু গড়ে ৬০-৭০ বছর হওয়ায় ট্রাম চালানোর খরচ অন্যান্য যানের থেকে কম। ওই দলের দাবি, শহরকে দূষণমুক্ত রাখতে ট্রাম চালাতে হবে।
এসইউসির আরও অভিযোগ, ট্রামের অধিকাংশ রুটেই লাইনগুলি পিচ ঢেলে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আর যাতে সেই সব রুটে ট্রাম চালানো না যায়, তার জন্যই লাইনগুলি বহু জায়গায় তুলে ফেলা হয়েছে। সরকারের যুক্তি, ট্রামের জন্য নাকি যানজট হয়। সেই যুক্তিও ধোপে টেঁকে না বলেই মত এসইউসির। কারণ ট্রাম চলে নির্দিষ্ট লাইনে। শহরের রাস্তায় গাড়ির সংখ্যা বৃদ্ধিই যানজটের কারণ। এছাড়া যত্রতত্র গাড়ি পার্কিংয়ের জন্যও যানজট হয়।
ইতিমধ্যেই রাজ্যের বুদ্ধিজীবীরা ট্রাম বন্ধ করার প্রতিবাদে সরব হয়েছেন। ২০ মে স্টুডেন্টস হলে ট্রাম রক্ষার দাবিতে এক নাগরিক কনভেনশন হয়। অতীতেও ট্রাম তুলে দেওয়ার প্রতিবাদে এসইউসি শহরে আন্দোলনে শামিল হয়েছিল বাম জমানায়। এবার তৃণমূল জমানাতেও ট্রাম তুলে দেওয়াকে সামনে রেখে নতুন করে আন্দোলনে নামতে চাইছে এই বাং দলটি।