Saturday, May 24, 2025
HomeScrollAajke | ছাল ছাড়িয়ে নুন মাখিয়ে, বিজেপির কালাপাহাড় এখন দিলীপ ঘোষ
Aajke

Aajke | ছাল ছাড়িয়ে নুন মাখিয়ে, বিজেপির কালাপাহাড় এখন দিলীপ ঘোষ

এই প্রাক্তন আরএসএস প্রচারককে অন্য আর দশজনের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলবেন না

Follow Us :

ওয়েবডেস্ক- ট্রেনের কামরাতে প্রথম শুনেছিলাম, দেবো নাকি দাদা ছাল ছাড়িয়ে নুন মাখিয়ে? শুনেই তো আত্মারাম খাঁচাছাড়া, তারপর ঘাড় ঘুরিয়ে দেখেছিলাম এক নিরীহ মধ্যবয়স্ক মানুষ শসা বিক্রি করছেন। তো এটা কেবল আমিই দেখিনি, দিলীপ ঘোষও দেখেছেন, দেখেছেন বলেই তা এখন করে দেখাচ্ছেন। দিলীপ ঘোষ রাজনীতিটা করতে এসেছিলেন বা করছেন এক নির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে, এই প্রাক্তন আরএসএস প্রচারককে অন্য আর দশজনের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলবেন না।

প্যাটন ট্যাঙ্কের মত একলাই গোলা দাগছেন বঙ্গ বিজেপির নেতার দিকে, এবং সেইগুলো করার জন্য ওনার কোনও শিখন্ডী লাগছে না, উনি লাগাতার প্রকাশ্যেই যা বলছেন তেমন কথা বিজেপিকে এই বাংলাতে এক কুণাল ঘোষ ছাড়া আর কেউ বলেছে বলে তো মনে হচ্ছে না। বাকিরা যখন রকমারি তীরন্দাজ আর ইউটিউবারকে সামনে রেখে আক্রমণ শানানোর চেষ্টা করছেন তখন দিলীপ ঘোষ বাংলার মূল ধারার চ্যানেলগুলোতে বসেই কামান দাগছেন, মিশাইল দাগছেন।

ওনার লক্ষ্য খুব পরিস্কার, ২০১৯ এর পর থেকে যে তৃণমূল নেতারা দল ছেড়ে বিজেপিতে এসেছেন সেই পালটি ব্রিগেডকেই তিনি তাঁর চাঁদমারিতে রেখেছেন। কিন্তু কেন? আছে আছে দিলীপ ঘোষ জাতে মাতাল তালে এক্কেবারে ঠিক, আনতাবড়া গোলাগুলি ছুঁড়ছেন না, গাইডেড মিশাইল ছুঁড়ছেন, যাকে উদ্দেশ্য করে ছুঁড়ছেন তার নাম আলাদা করে বলে দিতে হচ্ছে না। হ্যাঁ সেটাই বিষয় আজকে। ছাল ছাড়িয়ে নুন মাখিয়ে, বিজেপির কালাপাহাড় এখন দিলীপ ঘোষ।

অনেকে ভাবেন এবং মাঝে মধ্যে বলেনও, দিলু ঘোষের পাগলামি, মেক নো মিসটেক, দেয়ার ইস অ্যা মেথড ইন হিজ ম্যাডনেস। ওনার ঐ সমস্ত পাগলামির মধ্যে একটা পুরোদস্তুর ছক আছে। বিজেপির নব্য বঙ্গ ব্রিগেডকে অ্যাটাক করার পাশাপাশি উনি কিন্তু স্পষ্ট বলেছেন যে আমরা, মানে সনাতনী, আরএসএস বিজেপি তো চায় যে রাষ্ট্রের পয়সাতেই হিন্দু ধর্ম পালন হোক, হিন্দু মন্দিরগুলো সংস্কার করুক রাজ্য সরকার, উনি যদি, মানে মমতা যদি আমাদের সেই কথা মেনেই মন্দির তৈরি করেন তাহলে বুঝতে হবে উনি আমাদের পথে আসছেন, আর তাতে আমাদের কারোর আপত্তি থাকার কথা নয়।

আবার এসব কথা বলার মধ্যেই দিলীপ ঘোষ কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুর্শিদাবাদ সফরকে নৌটঙ্কিও বলেছেন। হ্যাঁ দিলু ঘোষ আদপে একজন আর আরএসএস কর্মী। যাঁরা ভাবছেন তিনি দুম করে দল বদলে তৃণমূল হয়ে যাবেন, ভুল ভাবছেন। উনি আসলে বিজেপির শুদ্ধিকরণ চান। এবং সেই কথাটা উনি একলাই মনে করেন তাও নয়, এটা বিজেপি দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও মনে করেন, তাঁরা মনে করেন বেশ কিছু নেতা কর্মী দলে ভিড়েছেন যাঁদের কাজ কর্ম জীবন যাত্রা বিজেপির সঙ্গে খাপ খায় না।

আরও পড়ুন: Aajke | আর কতভাবে আটকাবেন মমতাকে?

আর এটা মনে করেন বলেই খেয়াল করুন এই কুৎসিতভাবেই রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বকে আক্রমণ করার পরেও কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব থেকে এমনকি সাধারণ সাবধানবাণীও শোনানো হয়নি। কিন্তু যেটা দিলীপ ঘোষ বোঝেন না বা যা ওনার দিল্লির নেতৃত্ব বোঝেন না, তা হল কেবলমাত্র বিজেপির কমিটেড ভোট দিয়ে মমতা সরকারকে পরাস্ত করা অসম্ভব। সেখানে ঐ তৃণমূলের রাজনীতিই কার্যকরী। এই রাজ্যে এখনও বিজেপির হিন্দুত্ববাদী, বা জঙ্গি জাতীয়তাবাদী মত আর পথের অনুসরণ করা কর্মী নেতা কত? তাঁরা বিরাট চেষ্টা করলেও ১৫ থেকে ১৮% এর বেশি ভোট আনতে পারবেন না। আর ঐ তীব্র মমতা বিরোধিতা ছেড়ে দিলে মমতার সুবিধে তো বটেই খানিক সুবিধে বাম-কংগ্রেসেরও। মমতা বিরোধী ভোটের এক অংশ তাঁদের দিকে ফিরলেও ফিরতে পারে। কিন্তু যাই হোক সেক্ষেত্রে আগামী ১০ থেকে ১৫ বছর তৃণমূলের সিংহাসনের একটা পায়াও নড়ানো যাবে না। আমরা আমাদের দর্শকদের একটা খুব সোজা প্রশ্ন করেছিলাম, দিলীপ ঘোষ যে ভাবে বঙ্গ বিজেপির নেতাদের তীব্র আক্রমণ করছেন, তাতে লাভ কার? শুনুন মানুষজন কী বলছেন।

বাংলার বিজেপি নেতৃত্বের এক বিরাট সমস্যা হল বাংলার মাটি, বাংলার শিক্ষা, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য। বাংলার মনিষীরা কেউ কোনওদিন উগ্র হিন্দুত্বের প্রচার তো করেনই নি, উলটে সর্ব ধর্ম সমন্বয়, প্রেম ভালোবাসা আহিংসা, সহনশীলতাই প্রচার করে গেছেন রামমোহন থেকে রামকৃষ্ণ। কাজেই এমনিতেই এই মাটিতে আরএসএস – বিজেপির চাষবাস শক্ত, তার ওপরে এই এক পিস দিলীপ ঘোষ সেই কাজটাকে প্রায় অসম্ভব করে তুলেছেন। কেন করছেন? উনিই জানেন। কিন্তু এই হনুমানের লেজের আগুন সোনার লঙ্কা না পোড়ানো পর্যন্ত নিভবে বলে মনে হয় না।

RELATED ARTICLES

Most Popular