কলকাতা: এবার নিয়োগ দুর্নীতিতে (Recruitment Scam) অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে তলব ইডির (ED)। আগামী মঙ্গলবারই তাঁকে ডেকে পাঠানো হয়েছে সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে। সূত্রের খবর, প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় ইডি। এদিনই কয়লা পাচার কাণ্ডে সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে ইডির জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়েন অভিষেকের স্ত্রী রুজিরা। প্রায় ৪ ঘণ্টা ধরে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন ইডির আধিকারিকরা। শুধুমাত্র তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই দিল্লি থেকে জনা তিনেক ইডি অফিসার আসেন কলকাতায়। তাঁকে এদিন হাজিরা দেওয়ার জন্য কয়েকদিন আগেই ইডি তলবি নোটিস পাঠিয়েছিল।
তৃণমূল অবশ্য রুজিরাকে তলবের পিছনে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা রয়েছে বলে দাবি করে। শাসকদলের রাজ্য মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, অভিষেকের জনসংযোগ যাত্রায় মানুষের ভিড় দেখে বিজেপির মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছে। ওরা ভয় পেয়েছে। তাই রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে ইডিকে ব্যবহার করছে।
দিনকয়েক আগেই নিয়োগ দুর্নীতির প্রশ্নে অভিষেককে প্রায় ৯ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করেন ইডি আধিকারিকরা। রাতে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তিনি সেদিন সাংবাদিকদের বলেন, সব বোগাস। যারা ডেকেছে, তাদের সময় নষ্ট। আমারও সময় নষ্ট। এই জিজ্ঞাসাবেদের নিট ফল শূন্য। গতবছরও অভিষেককে দিল্লিতে দুবার ডাকা হয়েছিল গরু ও কয়লা পাচার কাণ্ডে। ডাক পড়েছিল তাঁর স্ত্রী রুজিরারও। কিন্তু দিল্লিতে তলবের বিরুদ্ধে তাঁরা সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেন। শীর্ষ আদালত জানায়, এরপর দিল্লিতে নয়, তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে কলকাতায়।
হুগলির বহিষ্কৃত যুব তৃণমূল নেতা বর্তমানে জেলবন্দি। কুন্তল ঘোষের একটি চিঠির সূত্রেই অভিষেককে তলব করেছিল সিবিআই। কুন্তল জেল থেকে হেস্টিংস থানাকে লেখা এক চিঠিতে অভিযোগ করেন, কেন্দ্রীয় এজেন্সি অভিষেকের নাম বলানোর জন্য তাঁর উপর চাপ সৃষ্টি করেছে। কুন্তল ওই চিঠি লেখার দু একদিন আগেই শহীদ মিনার ময়দানের এক সভায় বলেন, সারদা কাণ্ডে ধৃত মদন মিত্র, কুণাল ঘোষদেরও আমার নাম বলানোর জন্য চাপ দেওয়া হয়েছিল। অভিষেকের সেই বক্তব্যের সঙ্গে কুন্তলের চিঠির কোনও যোগাযোগ আছে কি না, তা খতিয়ে দেখার জন্য তৃণমূলের ওই সর্বভারতীয় নেতাকে সিবিআইয়ের জিজ্ঞাসাবাদ করা উচিত বলে জানায় কলকাতা হাইকোর্ট। তার জল গড়ায় সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত। পরে সেই মামলা ফিরে আসে কলকাতা হাইকোর্টে। আদালত জানায়, অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদে কোনও বাধা নেই। তারপরই সিবিআই তাঁকে তলব করে। এবার ফের তাঁকে ডাকা হয়েছে ১৩ জুন। এই নিয়ে নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিষেককে দুবার ডাকা হল। অভিষেকের একটি সংস্থার অধিকর্তা সুজয় কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে কালীঘাটের কাকুকেও নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে গ্রেফতার করেছে সিবিআই।