কলকাতা: কোভিড সংক্রমণের মধ্যেই গঙ্গাসাগর মেলা (Ganga Sagar Mela 2022) করার অনুমতি দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। তবে নির্দিষ্ট শর্ত মেনে। আর এখানেই উঠছে প্রশ্ন, সব শর্ত মেনে গঙ্গাসাগর মেলার আয়োজন করা কি আদৌ সম্ভব?
গঙ্গাসাগর মেলায় প্রতি বছর লাখো মানুষ মকরের স্নানে জড়ো হন। এ বার কোভিডের তৃতীয় ঢেউয়ের মধ্যে মেলার অনুমতি নিয়ে বিতর্ক কলকাতা হাইকোর্ট পর্যন্ত গড়িয়েছে। কোর্ট তিন সদস্যের কমিটি গড়ে মেলা করার ভার দিয়েছে। নির্দেশ দিয়েছে সমস্ত শর্ত মেনে চলতে। যার মধ্যে অন্যতম শর্ত একসঙ্গে পঞ্চাশ জন মানুষ মেলায় জমায়েত করতে পারবেন না।
আচমকা কোভিড সংক্রমণের মোকাবিলায় গত ৩ জানুয়ারি থেকে বেশ কিছু বিধিনিষেধ জারি করে রাজ্য। স্কুল-কলেজ বন্ধ করে দেওয়া হয়। সরকারি-বেসরকারি অফিসে হাজিরার সংখ্যা বেঁধে দেয় সরকার। বিয়ে বাড়ি, ধর্মীয় জমায়েত, শেষকৃত্য-সহ সমস্ত আচার-উপাচারে কত জন যোগ দিতে পারবেন, সেই সংখ্যাও ঠিক করে দেয় রাজ্য সরকার।
কোভিড-বিধি মানতে রাজ্য সরকার নোটিস দেয় ২ জানুয়ারি। শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্ট গঙ্গাসাগর মেলা করার অনুমতি দিতে গিয়ে সেই নোটিসের দশ নম্বর পয়েন্টের কথা উল্লেখ করেছে। কী বলেছে আদালত?
আরও পড়ুন: Weather Update: উধাও শীত, সপ্তাহের শুরুতেই ভিজবে দুই বঙ্গ
কলকাতা হাইকোর্টের রায়, গঙ্গাসাগর মেলায় কোভিড বিধিনিষেধ মেনে চলার নিয়মকে সুনিশ্চিত করবেন রাজ্যের মুখ্যসচিব। বিশেষ করে যে বিধিনিষেধ রাজ্য সরকার তার অর্ডারে দশ নম্বর পয়েন্টে উল্লেখ করেছে। এই বিধি কোনওরকম খুঁত বা ত্রুটি ছাড়া নির্ভুলভাবে যাতে মানা হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। যতদিন মেলা চলবে এই নিয়ম মানতে হবে।
সরকারের অর্ডারে কোন নিয়মের উল্লেখ রয়েছে? বিশেষ করে দশ নম্বর পয়েন্টে? একসঙ্গে পঞ্চাশ জনের বেশি মানুষ জমায়েত করতে পারবেন না। কোনও সামাজিক, ধর্মীয় বা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে। গঙ্গাসাগরে মেলা করার অনুমতি দেওয়ার সময় এই বিধিনিষেধের কথাই মনে করিয়ে দিয়েছে আদালত। অর্থাৎ গঙ্গাসাগর মেলায় কোনও ভাবেই একসঙ্গে পঞ্চাশ জন মানুষ জড়ো হতে পারবেন না। জড়ো হলে তা হবে বিপর্যয় মোকাবিলা আইন বিরোধী।
আরও কী কী শর্ত দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট? জনস্বার্থে বিজ্ঞাপন দিতে হবে রাজ্য সরকারকে। সমস্ত বহুল প্রচারিত খবর কাগজে। টেলিভিশনে অডিও-ভিসুয়াল মিডিয়ায়। বিজ্ঞাপন দিয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে হবে। জানাতে হবে, ৮ জানুয়ারি থেকে শুরু করে ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত গঙ্গাসাগর ভ্রমণ সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যের পক্ষে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। ওই সময় গঙ্গাসাগরে না যাওয়াই ভাল।
আরও পড়ুন: Bhutan Covid : ফুন্টসোলিংয়ে ৭২ ঘণ্টা লকডাউন, বন্ধ ভারত-ভুটান সীমান্ত
শনিবার ৮ জানুয়ারি। আদালতের দেওয়া শর্ত অনুযায়ী ওই দিন থেকেই মেলার বিধিনিষেধ চালু হবে। অর্থাৎ শনিবার সকালেই খবর কাগজে ওই বিজ্ঞাপন প্রচার করতে হবে রাজ্যকে। এমনকি গঙ্গাসাগরে যে পঞ্চাশ জনের বেশি মানুষের জমায়েত নিষিদ্ধ, তাও জানাতে পারে রাজ্য।
বিজ্ঞাপন বেরনোর পর মানুষ কি বিধিনিষেধ মানবেন? কোভিড সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে কি গঙ্গাসাগর সফর বাতিল করবেন? একসঙ্গে ৫০ জনের বেশি জমায়েত হলে কী ব্যবস্থা নেবে প্রশাসন? বা কোন উপায়ে এত বড় মেলার ভিড়কে নিয়ন্ত্রণ করবে প্রশাসন? এই প্রশ্ন উঠছেই।