কলকাতা: রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনও সমস্যা নেই বলে দাবি করলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। বৃহস্পতিবার সিবিএসসি এবং সিআইসিএসই বোর্ডের অনুমোদনের শংসাপত্রের জন্য একটি পোর্টাল উদ্বোধন অনুষ্ঠানের ফাঁকে শিক্ষামন্ত্রী জানিয়ে দেন, রবীন্দ্রভারতীতে সব ঠিক আছে। তাঁর এই বক্তব্য নিয়ে শিক্ষা মহলে চাপানউতোর শুরু হয়েছে। এদিন ২০২১-২২ সালের ৮ লক্ষ ৫৩ হাজার ২০৪ জন ছাত্রকে স্কলারশিপে ১২৮ কোটি ১৬ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে বলেও জানান শিক্ষামন্ত্রী।
প্রসঙ্গত, গত বেশ কয়েক মাস ধরে রবীন্দ্রভারতীতে ঝামেলা চলছে। ফলে প্রশাসনিক কাজকর্ম ব্যাহত হচ্ছে। অভিযোগ, তৃণমূল পরিচালিত কর্মী ইউনিয়ন এবং ছাত্র সংসদ এই ঝামেলার পিছনে রয়েছে। এর আগে দুবার উপাচার্য সব্যসাচী বসু রায়চৌধুরী (Sabyasachi Basu Ray Chaudhury) বিস্তারিত জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও শিক্ষামন্ত্রীকে চিঠি দেন। ওই চিঠিতে তিনি অব্যাহতি পর্যন্ত চান। কিন্তু তাঁকে কাজ চালিয়ে যেতে বলেন। পুজোর ছুটির পর বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় খুলতেই সমস্যা শুরু হয়। উপাচার্যের দফতর থেকে সমস্ত কর্মচারীকে তুলে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেন তিনি। এমনকী তাঁর বা রেজিস্ট্রারের কোনও অনুমতিও নেওয়া হয়নি। উপাচার্য বলেন, এই অবস্থায় আমার পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করা অসম্ভব হয়ে উঠছে। বিষয়টি তিনি শিক্ষামন্ত্রী বা মুখ্যমন্ত্রীকে জানাবেন কি না, জানতে চাওয়া হলে উপাচার্য বলেন, সেটা পরে ঠিক করব।
সূত্রের খবর, গত তিন মাসে তিনবার কাজে বাধা পেয়েছেন উপাচার্য। সব ক্ষেত্রেই বাধা দিয়েছে শাসকদলের ঘনিষ্ঠ কর্মী সংগঠন। উপাচার্য বলেন, যাঁরা বাধা দিচ্ছেন, তাঁরা নিজেদের শাসকদলের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচয় দেন। বুধবার তিনি জানান, তাঁকে না বলেই উপাচার্যের দফতরের কর্মীদের অন্যত্র সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন:Jalpaiguru Thief: আজব চোর, টাকাপয়সা সোনাদানা ছেড়ে চুরি করে আধার কার্ড, প্যান কার্ড!
গত ১০ জুন এবং ১৮ জুলাই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee) চিঠি দিয়েছিলেন উপাচার্য। তাতে তিনি জানিয়েছিলেন, তৃণমূল কর্মচারী সংগঠনের দাদাগিরিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের দৈনন্দিন প্রশাসনিক কাজকর্ম পরিচালনা করা যাচ্ছে না। বাইশে শ্রাবণ তিনি শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকেও চিঠি দিয়ে অব্যাহতি চেয়েছিলেন। একই ভাবে অব্যাহতি চেয়ে চিঠি দেন তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে। তাঁদের অনুরোধেই তিনি কাজ চালিয়ে যেতে সম্মত হন। সেই সময়ও উপাচার্যকে নানাভাবে হেনস্তা করা হয়। তাতে একশ্রেণির পড়ুয়াও ছিলেন। তাঁদের দাবি ছিল, অনলাইন পরীক্ষা নিতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অফলাইন পরীক্ষায় অনড় ছিল। শেষ পর্যন্ত অফলাইন পরীক্ষাই হয়। তখনও পড়ুয়ারা তাঁর দফতরের অফিসারদের শারীরিক নিগ্রহ করেন।
উপাচার্য জানান, নৈরাজ্য এখনও অব্যাহত। পরিস্থিতি বরং আরও খারাপ হয়েছে। এই অবস্থায় তাঁর পক্ষে কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। তিনি বলেন, লক্ষ্ণীপুজো আর কালীপুজোর মাঝে কয়েকদিনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় খুললেও একই ভাবে বাধা দেওয়া হয়। এসে দেখি, আমার দফতরের অনেক কর্মীকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এত সবের পরেও শিক্ষামন্ত্রী কী করে দাবি করলেন রবীন্দ্রভারতীতে কোনও সমস্যা নেই, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শিক্ষা মহল এবং বিরোধীরা।
আরও পড়ুন:WhatsApp Features: আপনাকে চমকে দেবে হোয়াটসঅ্যাপের নতুন আপডেট, ভিডিয়ো কলে একসঙ্গে ৩২ জন