কলকাতা: রবিবার কলকাতায় মানুষের ছায়া মাটিতে পড়বে না। শুধু মানুষ কেন বাড়ি-ঘর, সেতু, শহীদ মিনার, কোনও কিছুর ছায়াই মাটিতে পড়বে না। মহাজাতিক এই কাণ্ডটি ঘটবে কখন? বলছি। কলকাতার আকাশে মেঘ না থাকলে আপনি নিজেও রাস্তায় বেরিয়ে পরখ করে দেখতে পারেন, আদৌ আপনার ছায়া মাটিতে পড়ছে কিনা। কিন্তু কী ভাবে এটা সম্ভব?
কর্কটক্রান্তি এবং মকরক্রান্তি রেখার মধ্যে যে এলাকা সেখানে বছরে দু’বার এই রকম মহাজাগতিক ম্যাজিক ঘটে থাকে। দিনের একটা নির্দিষ্ট সময়ে সূর্য আকাশে এমন ভাবে অবস্থান করে, যে কোনও বস্তু সে সময় ছায়াহীন হয়ে পড়ে। যাকে বলে ‘জিরো শ্যাডো’। ৫ জুন কলকাতায় সেই ‘জিরো শ্যাডো ডে’।
ব্যাপারটা একটু ভালো করে বোঝা যাক। সূর্যের আলো কোনও বস্তু বা মানুষের শরীরে পড়লে তার ছায়া তৈরি হয়। আবার সূর্য যদি কোনও বস্তুর উপর একেবারে নব্বই ডিগ্রি কোণে লম্বভাবে অবস্থান করে, তা হলে তার ছায়া পড়ে না। মকরক্রান্তি রেখা এবং কর্কটক্রান্তি রেখার মধ্যে বছরে দু’বার এ’রকম পরিস্থিতি তৈরি হয়। প্লাস ২৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি থেকে মাইনাস ২৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি ল্যাটিটিউড ভৌগলিক অবস্থানে এই কাণ্ড ঘটে। কলকাতা শহরটির ভৌগলিক অবস্থান মকরক্রান্তি রেখা থেকে ২ হাজার ৫০০ কিলোমিটার দূরে। এবং কর্কটক্রান্তি রেখা থেকে ৯৩ দশমিক ৫ কিলোমিটার দূরে। কাল্পনিক যে রেখাটি নদিয়া জেলার কৃষ্ণনগরের কাছ দিয়ে গিয়েছে।
তো কলকাতায় কখন সেই বিশেষ সময়টি আসবে, যখন বস্তু ছায়াহীন হয়ে পড়বে? উত্তর, ৫ জুন বেলা ১১টা ৩৪ মিনিট। ফের দক্ষিণায়নের সময়ও একই রকম ভাবে সূর্য মাথার উপর একেবারে লম্বভাবে অবস্থান করবে। অর্থাৎ পরের ‘জিরো শ্যাডো ডে’ বা ছায়াশূন্য দিবস হচ্ছে ৭ জুলাই। ওই দিন বেলা ১১টা ৪১ মিনিটে একই রকম দৃশ্য দেখতে পারবে কলকাতা।