কলকাতা: চাকরিহারা শিক্ষকরা কি এখন স্কুলে যাবেন? এখন এই প্রশ্ন রাজ্যের অন্দরে ঘুরছে। সুপ্রিম নির্দেশে প্রায় ২৫,৭৩৫ জন শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর চাকরি বাতিল (SSC Job Cancel) হয়েছে। রাজ্যে শিক্ষককের সংকট দেখা দিয়েছে। কারা স্কুলে ক্লাস নেবে, কারা মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার খাতা দেখবেন সেই নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে চাকরিহারাদের (SSC Job Deprived) নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) সোমবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে তাঁদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সকলকে আশ্বসবানী দিয়ে মমতা বলেন, আমরা দু’মাসের মধ্যেই বিকল্প ব্যবস্থা করে দেব। যোগ্যদের কারও চাকরি বাতিল হবে না। কাউকে না খাইয়ে মারার অধিকার তো কারও নেই। সকলকে মমতা বলেন, নোটিশ না পাওয়া পর্যন্ত আপনারা স্কুলে যান।
চাকরিহারাদের উদ্দেশে মমতা বলেন, “আপনাদের তো কেউ টারমিনেট করেছে? আপনি আপানাদের কাজ করুন না, কে বারণ করেছে? ভলেন্টিয়ারি সার্ভিস কিন্তু চলতেই পারে। কীভাবে আটকাবে?”চাকরি যাতে ফিরে পান, গোটা প্রক্রিয়া ২মাসের মধ্যে সম্পূর্ণ হবে। সার্ভিস ব্রেক হবে না। স্কুলে স্বেচ্ছায় পরিষেবা দেওয়ার বার্তা মমতার, বাকিটা রাজ্য সরকার বুঝে নেবে। মুখ্যমন্ত্রী সুপ্রিম কোর্টের রায়ের সমালোচনা করে বলেন, “চাকরি দেওয়ার ক্ষমতা নেই, চাকরি কেড়ে নেওয়ার ক্ষমতা আছে। তাঁদের ধিক্কার জানাই।” আমি অনেক কথা জেনেও সিপিএমের কারও কোনও চাকরি খাইনি।”চাকরিহারাদের আশ্বস্ত করে বলেন, “আমরা দু’মাসের মধ্যেই বিকল্প ব্যবস্থা করে দেব। যোগ্যদের কারও চাকরি বাতিল হবে না।” তিনি সুপ্রিম কোর্টের কাছে ব্যাখ্যা চাইবেন বলেও জানান। আমি বেঁচে থাকাকালীন যোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের কারোর চাকরি কেড়ে নিতে দেব না। এটা আমার প্রতিশ্রুতি। নেতাজি ইন্ডোরে উঠ জয় মমতার জয় স্লোগান।
আরও পড়ুন: চাকরি বাতিল নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে নতুন করে আবেদন মধ্যশিক্ষা পর্ষদের
রায় ঘোষণা করে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি জানিয়েছিলেন, “নিয়োগে ব্যাপক পরিমাণ দুর্নীতি হয়েছে। যা মেরামত করার কোনও সুযোগ নেই। যাঁদের ক্ষেত্রে অভিযোগ উঠেছে, সেই সব অবৈধ শিক্ষকদের বেতনের টাকা ফেরত দিতে হবে। তবে যাঁদের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ নেই, তাঁদের ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টে প্রশ্ন ওঠে আবার নতুন করে বয়সে উচ্চমানে ছাড় দিয়ে পরীক্ষার সুযোগ দেওয়া হোক। একসঙ্গে বিপুল সংখ্যক শিক্ষক-শিক্ষিকার চাকরি চলে যাওয়ায় জেলায়-জেলায় স্কুলগুলিতে শিক্ষকদের সংকট তৈরি হয়েছে। অনেক স্কুলে শিক্ষকের অভাবে বিজ্ঞানের বিভাগ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। স্কুলে ঘণ্টা বাজানোর লোক নেই। লোক্র অভাবে স্কুলের তালা খুলছেন সহকারি শিক্ষক। বিশেষ করে মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিকের খাতা দেখা শুরু হয়ে গিয়েছে। বেশির ভাগ খাতা দেখা শেষের দিকে। এই পরিস্থিতিতে কারা খাতা দেখবে তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। স্কুল চালানো নিয়েই দারুণ সমস্যায় পড়ে গিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
দেখুন ভিডিও