কলকাতা: পঞ্চায়েত নির্বাচনকে পাখির চোখ করে মাঠে নামছে তৃণমূল। উন্নয়নকে হাতিয়ার করেই আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে (Panchayat Election) নিজেদের জমি ধরে রাখতে মরিয়া শাসকদল। দুর্বল জেলাগুলোর সংগঠনে জোর দিতে জেলায় জেলায় সফর সারবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। আগামিকাল, শনিবার আলিপুরদুয়ার (Alipurduar) দিয়ে জেলা সফর শুরু করতে চলেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড। তাই তাঁর সফরকে কেন্দ্র করে সেজে উঠেছে গোটা জেলা।
শনিবারই আলিপুরদুয়ার জেলা সফরে যাচ্ছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার আলিপুরদুয়ার জেলার এক নম্বর ব্লকের বাবুরহাট খেলার মাঠে ওই জনসভার আয়োজন করেছে জেলা তৃণমূল কংগ্রেস। সভামঞ্চের পিছনেই রয়েছে অস্থায়ী হেলিপ্যাড। কলকাতা থেকে চপারে সরাসরি তিনি সভাস্থলে এসে উপস্থিত হবেন দুপুর দুটো নাগাদ। তাই শুক্রবার সারা দিন ধরে চলে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি।
বিগত লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনে আলিপুরদুয়ার, দুই দিনাজপুর, বাঁকুড়ার মতো জেলাগুলোতে আশানুরূপ ফল করেনি তৃণমূল। ওই সব জেলাতে পাল্লা ভারী বিজেপির। ওই সমস্ত এলাকায় শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বারবার প্রকাশ্যে এসেছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে এই সব জেলাতে বাড়তি নজর দিতেই অভিষেকের এই জেলা সফর। কালীঘাটের বৈঠক থেকে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলের নেতাকর্মীদের সতর্ক করেছেন গোষ্ঠী কোন্দল নিয়ে। নেতাদের বুথস্তরের কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ আরও দৃঢ় করতে বলেছেন। পাশাপাশি বাড়ি বাড়ি গিয়ে সরকারি প্রকল্পের সুবিধার কথাও তুলে ধরার কথা বলেছেন। আলিপুরদুয়ারের সংগঠনের রাশ আলগা বলেই অভিযোগ রয়েছে। এই সফরে বাড়তি নজর দেবেন অভিষেক। সংগঠন ঢেলে সাজানোর কাজ শুরু করতে চান অভিষেক বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
পঞ্চায়েত নির্বাচন শাসক ও বিরোধী দুপক্ষের কাছেই অ্যাসিড টেস্ট। তৃণমূলের হেভিওয়েট নেতাদের কয়েকজন জেলে, নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে আলোচনা তুঙ্গে। তৃণমূলে নবীন-প্রবীণের দ্বন্দ্ব এখনও পুরোপুরি মেটেনি। আবাস যোজনার দুর্নীতি, নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে বেশ ব্যাকফুটে তৃণমূল। লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, দুয়ারে সরকার, কন্যাশ্রী, যুবশ্রীর তৃণমূলের অস্বস্তি বাড়াচ্ছে এই ইস্যুগুলো। কিন্তু বিরোধীরা কি আদৌ এগুলোকে কাজে লাগানোর জায়গায় আছেন? সেটাই লাখ টাকার প্রশ্ন।
অভিষেকের জেলা সফর নিয়ে ব্যস্ত স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। নেতা গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়ে কী বলেন সে নিয়ে চাপা আতঙ্ক রয়েছে শাসকদলের অন্দরে। বিশেষত পঞ্চায়েত ভোটের আগে টিকিট বিলি নিয়ে বার্তা দিতে পারেন অভিষেক।কারণ এর আগেই দলনেত্রী নিজের মুখেই বলে দিয়েছিলেন টিকিট না পেলে যেন কেউ নির্দল হয়ে না দাঁড়িয়ে যান। স্বভাবতই, টিকিট বন্টনের সময় অশান্তি কিংবা ভাঙন এড়াতে দলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার বার্তা দিতে পারেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।