কাতার: বিশ্বকাপের (World Cup) দামামা বেজে গেছে। মাঝখানে মাত্র একটা সপ্তাহ, তারপরেই শুরু দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ। কিন্তু উৎসবের মধ্যেও রয়ে গিয়েছে বেদনার সুর। কাতারে (Qatar) যে সব চোখধাঁধানো স্টেডিয়ামে খেলা হবে তা নির্মাণ হয়েছে শ্রমিকদের রক্ত জল করা পরিশ্রমে। অভিযোগ, ঠিকমতো পারিশ্রমিক জোটেনি তাঁদের। ভারতসহ বেশ কিছু দেশের পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে, অথচ ক্ষতিপূরণ পায়নি তাঁদের পরিবার।
এগিয়ে এল বিখ্যাত স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল (Amnesty International)। পরিযায়ী শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ দিতে ফিফার (FIFA) প্রেসিডেন্ট জিয়ানি ইনফ্যান্তিনোরকে (Gianni Infantino) আবেদন জানাল সংস্থাটি। এর আগে অ্যামনেস্টি এবং হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (Human Rights Watch) সহ ২৪টি সংস্থা মে মাসে ইনফ্যান্তিনোকে চিঠি পাঠিয়েছিল। স্টেডিয়াম নির্মাণ করতে গিয়ে অত্যাচারিত, লাঞ্ছিত পরিযায়ী শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়ে লেখা হয়েছিল সেই চিঠি।
আরও পড়ুন: Drone Taxi: যাত্রা শুরু আকাশে ওড়া ট্যাক্সির, ব্যস্ত সময়ে যানজট কাটবে নিমেষে
চিঠিতে বলা হয়, দক্ষিণ এশিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং আফ্রিকার শ্রমিকদের সঙ্গে অবিচার করা হয়েছে। বহু শ্রমিক জোর করে কাজ করানো, উপযুক্ত বেতন না দেওয়া, ছুটি ছাড়া দিনের পর দিন খাটিয়ে নেওয়ার অভিযোগ করেছিলেন। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবিকে প্রথমে মান্যতা দিয়েছিল বিশ্বকাপের স্পনসর অ্যাডিডাস (Adidas), কোকাকোলা (Coca-Cola) এবং ম্যাকডোনাল্ডস (McDonalds)। অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় ফুটবল দলের তরফে একটি ভিডিও প্রকাশ করে বলা হয়, কাতারে বিশ্বকাপ আয়োজনে অনেক শ্রমিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
অ্যামনেস্টির সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাগনেস কালামার্ড কটাক্ষ করে বলেন, বাড়তে থাকা কোলাহলে সবথেকে গুরুতপূর্ণ স্তরটাই স্তব্ধ, তা হল জিয়ানি ইনফ্যান্তিনোর। কালামার্ড আরও বলেন, ফিফার তরফে জনসমক্ষে এবং ব্যক্তিগত স্তরে একাধিকবার বলা হয়েছে যে তারা ক্ষতিপূরণের প্রস্তাব বিবেচনা করছে। কিন্তু এসব থেকে দূরে সরে রয়েছেন ইনফ্যান্তিনো, তিনি বারবার এই টপিক এড়িয়ে গেছেন।
স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলোর আরও ক্ষোভের কারণ, এবারের অংশগ্রহণকারী দেশগুলিকে স্রেফ খেলার দিকে মন দিতে বলেছেন ইনফ্যান্তিনো। নৈতিক কর্তব্যের কথা আপাতত ভুলে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। সবমিলিয়ে শ্রমিক ক্ষতিপূরণ ইস্যুতে সরগরম হয়ে উঠেছে কাতার বিশ্বকাপ। একদিকে যখন মেসি-রোনাল্ডো-নেইমার মাঠ কাঁপাবেন, অন্যদিকে ক্ষতিপূরণের আশায় দিন গুনবেন পরিযায়ী শ্রমিকের দল।