কলকাতা: এই বাজেট কর্মসংস্থান ও জীবিকামুখী। বুধবার রাজ্যের অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের (Chandrima Bhattacharya) বাজেট প্রস্তাব পাঠের শেষে বিধানসভায় দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) এই ভাষাতেই বাজেটের ব্যাখ্যা দিলেন। তিনি আরও বলেন, উন্নয়নের কথা এই বাজেটে রয়েছে। কোটি কোটি কর্মসংস্থান হবে। এদিন বিধানসভায় অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বাজেট (WB State Budget 2023) পেশ করেন। পঞ্চায়েত নির্বাচনকে (Panchayat Election 2023) সামনে রেখে আজকের এই বাজেট তৃণমূল সরকারের কাছে অনেকটাই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। একদিকে বকেয়া ডিএ নিয়ে রাজ্য সরকারি কর্মীদের আন্দোলন পাশাপাশি একাধিক দুর্নীতিতে এমনিতেই চাপে ছিল রাজ্য সরকার। এদিনের ডিএ ঘোষণায় সেই চাপ অনেকটাই কমতে চলেছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। যদিও আন্দোলনকারী রাজ্য সরকারি কর্মীরা কেন্দ্রীয় হারে ডিএ-র দাবিতে এখনও অনড়।
রাজ্যে আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যে প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে, প্রচারও চলছে জোর কদমে। সেদিকে তাকিয়েই গ্রামীণ এলাকার উন্নয়নে বেশি গুরুত্ব দিয়ে আজকের এই বাজেট পেশ করা হয়েছে বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল। এদিন বাজেট পেশের শুরুতেই অর্থ প্রতিমন্ত্রী ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষের জন্য তিন লক্ষ ৩৯ হাজার ১৬২ কোটি টাকা ব্যয় বরাদ্দের প্রস্তাব দেন। বাজেটে বলা হয়েছে, গ্রামীণ সড়ক যোজনায় ৩ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। ‘রাস্তাশ্রী’ নামে একটি গ্রামীণ সড়ক প্রকল্প চালু করা হচ্ছে। যেখানে ১১ হাজার ৫০০ কিমি রাস্তার জন্য ৩ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনে যুব সমাজের ভোটকে নিজেদের দিকে টানতে এক নয়া পদক্ষেপ গ্রহণ করল রাজ্য সরকার। যুব সমাজের জন্য ‘ভবিষ্যৎ ক্রেডিট কার্ড’ চালু করতে চলেছে রাজ্য সরকার। এই প্রকল্পে ৮ থেকে ৪৫ বছর বয়সিদের জন্য আর্থিক প্রকল্পে ৩৫০ কোটি বরাদ্দ করা হয়েছে বলে বাজেট ঘোষণায় জানানো হয়। অন্যদিকে মৎস্যজীবীদের পরিবারদের সাহায্যের জন্য মৃত্যুজনিত ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে, এই খাতে ৩০ কোটি টাকা বরাদ্দ করল রাজ্য সরকার।
আরও পড়ুন:WB State Budget 2023 : রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ৩ শতাংশ ডিএ ঘোষণা হল বাজেটে পেশের সময়
রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটে সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের পাশাপাশি গ্রামীণ উন্নয়নে জোর দিতেই এই বাজেট করা হয়েছে। ভবিষ্যৎ ক্রেডিট কার্ড চালু করতে চলার উদ্দেশ্য হল, যুব সমাজকে শুধুমাত্র সরকারি চাকরির উপর নির্ভর করে বসে না থেকে, সরকারের থেকে ঋণ নিয়ে বিভিন্ন ব্যবসা ও জীবিকা নির্বাহ করতে উৎসাহিত করা। সব মিলিয়ে আজকের এই কর্মসংস্থান ও জীবিকামুখী বাজেট আগামী পঞ্চায়েত ভোটে শাসকদলের ক্ষেত্রে কী ফ্যাক্টর নিতে চলেছে, সেদিকেই নজর থাকবে রাজ্যের রাজনৈতিক মহল ও বিশেষজ্ঞদের।