নয়াদিল্লি: আগামিকাল, মঙ্গলবার বিলকিস বানো (Bilkis Bano) ধর্যণ-কাণ্ডে অভিযুক্তদের মুক্তি সংক্রান্ত মামলার শুনানি। গত ২৭ মার্চ সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) বিচারপতি কে এম জোসেফ (Justice KM Joseph) এবং বিচারপতি বি ভি নাগরত্নমের (Justice BV Nagratnam) ডিভিশন বেঞ্চে (Division Bench) ওই মামলার শুনানি হওয়ার কথা।
গত বছরের অগাস্ট মাসে গুজরাত সরকার (Gujarat Government) ওই ধর্ষণ মামলায় দোষীদের সাজা মুকুব করে দেয়। তা নিয়ে গোটা দেশে তুমুল হইচই পড়ে। নভেম্বর মাসে বিলকিস বানো সু্প্রিম কোর্টে গুজরাত সরকারের ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করেন। তিনি প্রশ্ন তোলেন, কোন অধিকারে রাজ্য সরকার যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত ১১ জনকে মুক্তি দিল? ১৪ বছর সাজার পর ওই অপরাধীদের মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বিজেপি শাসিত গুজরাত সরকার। সেই সিদ্ধান্তমতো ১৫ অগাস্ট স্বাধীনতার ৭৫তম বার্ষিকীতে বা অমৃত মহোতসব উপলক্ষে তাদের মুক্তি দেওয়া হয়। তাতে তোলপাড় শুরু হয় দেশ জুড়ে। বহু বিশিষ্টজন ওই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার দাবি করেন। রাজনীতি থেকে শুরু করে বিভিন্ন স্তরের বিশিষ্টরা ওই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ফেটে পড়েন। চলে গণস্বাক্ষর অভিযান। তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র, সিপিএমের প্রবীণ নেত্রী সুভাষিণী আলি, সাংবাদিক রেবতী লাল এবং অধ্যাপক রূপরেখা ভার্মা সু্প্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন ওই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে।
আরও পড়ুন: Mamata Banerjee | শাহে’র ইস্তফা চাইলেন মমতা
২০০২ সালে গুজরাত দাঙ্গার বলি বিলকিস। তিনি গণধর্ষণের শিকার হন। বিলকিসের তিন বছরের মেয়ে-সহ পরিবারের সদস্যদের নৃশংসভাবে খুন করা হয়। তারপর চলতে থাকে মামলা। ২০০৮ সালে মুম্বইয়ের বিশেষ সিবিআই আদালত অপরাধীদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়। সেই রায় বহাল রাখে বোম্বে হাইকোর্ট।
ওই অপরাধীরা মুক্তি পাওয়ার পর বিজেপি (BJP) তাদের সংবর্ধনা দেয়। ফুলের মালা দিয়ে অভ্যর্থনা জানায়। কপালে তিলক কেটে মিষ্টি খাইয়ে তাদের বরণ করা হয়। গুজরাতের এক বিজেপি বিধায়ক বলেন, ওরা অপরাধ করেছিল কি না, জানা নেই। তবে জেলে তাদের আচরণ খুবই ভালো ছিল। তার থেকেও বড় কথা, ওরা সবাই ব্রাহ্মণ। আর ওদের সকলেরই মূল্যবোধ রয়েছে।
প্রশ্ন উঠেছে, এই মূল্যবোধ আছে বলেই তারা কি এই নির্মম হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছিল? আর মূল্যবোধ আছে বলেই কি তারা বিলকিসের ইজ্জত লুটেছিল সবাই মিলে? আজও এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বেড়াচ্ছে বিলকিস বানোর পরিবার। সঙ্গে আতঙ্ক তাড়া করে বেড়াচ্ছে তাঁদের। তবে এখনও তাঁরা সুবিচারের আশায় দিন গুনছেন। মঙ্গলবার কী রায় দেয় সু্প্রিম কোর্ট, তার দিকেই তাকিয়ে আছে অসহায় পরিবারটি।