কলকাতা: গ্রুপ ডি-র ১৯১১ জন চাকরিপ্রাপকের সুপারিশপত্র প্রত্যাহারের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। শুক্রবার বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় অবিলম্বে ওই সুপারিশপত্র প্রত্যাহারের ব্যাপারে স্কুল সার্ভিস কমিশনকে (School Service Commission) বিজ্ঞপ্তি জারি করতে বলেন। ওই নির্দেশের দু’ মিনিটের মধ্যেই কমিশন সেই বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে বলে তাদের আইনজীবী আদালতে জানান। তারপরই মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে (Board of Secondary Education) নিয়োগপত্র প্রত্যাহার করার বিজ্ঞপ্তি জারি করতে বলেন বিচারপতি। পাঁচ মিনিটের মধ্যে পর্ষদ নিয়োগপত্র প্রত্যাহারের নির্দেশ আপলোড (upload) করা শুরু করে দেয়। এই ১০১১ জনের জায়গায় ওয়েটিং লিস্ট (waiting list) থেকে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করারও নির্দেশ দেন বিচারপতি। তিনি বলেন, এই লিস্টের প্রার্থীদের ওএমআর শিট (OMR Sheet) যদি বিকৃত করা হয়, তবে তাঁদের নামও বাতিল করতে হবে। সেই লিস্ট থেকে যোগ্য প্রার্থীদের নাম ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রকাশ করতে হবে।
এদিন বিচারপতি বলেন, আদালত আর অপেক্ষা করতে পারবে না। নিয়োগ প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করার জন্য প্রচুর দালাল অপেক্ষা করছে। তাঁর আরও নির্দেশ, এই ১০১১ জন স্কুলে ঢুকতে পারবেন না। তাঁদের বেতন বন্ধ করতে হবে। দেশের কোনও সরকারি চাকরির পরীক্ষায় তাঁরা অংশ নিতে পারবেন না। আদালতের অনুমতি ছাড়া তাঁদের পুলিশ ভেরিফিকেশন (police verification)করা যাবে না।
আরও পড়ুন: WB State Budget 2023: পঞ্চায়েত ভোটের আগে ‘মমতাময়ী’ বাজেটের আশায় রাজ্যবাসী
গ্রুপ ডি-র এই নিয়োগ মামলায় সুবীরেশ ভট্টাচার্যকে যুক্ত করারও নির্দেশ দেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। সুবীরেশের প্রতি তাঁর মন্তব্য, কার নির্দেশে এই দুর্নীতি, আপনাকে নাম জানাতে হবে। না হলে ধরে নেব, আপনিই এই দুর্নীতির মাথা। বিচারপতি বলেন, যদি সুবীরেশ নাম না জানান, তাহলে এই মামলায় নির্দোষ প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত তিনি তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং ডক্টরেট ডিগ্রি ব্যবহার করতে পারবেন না। প্রয়োজন হলে তাঁর পরিবারকে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা দেওয়া হবে।
এদিকে কমিশন এদিন হলফনামায় জানায়. ২৮২০টি নয়, ২৮২৩টি ওএমআর শিট বিকৃত করা হয়েছিল। তার মধ্যে ১৯১১ জনকে সুপারিশপত্র দেওয়া হয়। সেই সুপারিশপত্র আমাদের পক্ষে প্রত্যাহার করা সম্ভব। কমিশন আরও জানায়, নাইসা (NISA) নামে এক বেসরকারি সংস্থাকে ওএমআর শিট মূল্যায়নের জন্য নিয়োগ করা হয়েছিল। বিচারপতি বলেন, এই ১৯১১ জন সুপারিশ বা নিয়োগপত্র পাওয়ার যোগ্য নন। তাঁরা দুর্নীতির মাধ্যমে সুপারিশপত্র পেয়েছিলেন। তখন যিনি চেয়ারম্যান ছিলেন, তাঁর নির্দেশ ছাড়া কমিশনের সার্ভারে তথ্য বিকৃত হওয়া সম্ভব নয়। মামলার পরবর্তী শুনানি ১০ মার্চ।