কলকাতা: এবার সিবিআইয়ের জালে স্কুল সার্ভিস কমিশনের প্রাক্তন উপদেষ্টা শান্তিপ্রসাদ সিনহা এবং প্রাক্তন চেয়ারম্যান অশোক সাহা। বুধবার তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়েছিল। এদিনই সিবিআই দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পর তাঁদের দুজনকে গ্রেফতার করে। এই প্রথম নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সিবিআই কাউকে গ্রেফতার করল।
শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগে গত ২৩ জুলাই আর এক কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি গ্রেফতার করে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং তাঁর ঘনিষ্ঠ বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে। অর্পিতার দুটি ফ্ল্যাট থেকে প্রায় ৫০ কোটি নগদ টাকা এবং বহু মূল্যের সোনার গয়না বাজেয়াপ্ত করে ইডি। এদিকে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অপসারিত সভাপতি এবং বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যকে আগামী সোমবার সিবিআই তলব করেছে।
পার্থ গ্রেফতার হওয়ার ছদিন পর শাসকদল তৃণমূল তাঁকে দল থেকে সাসপেন্ড করে এবং তাঁকে মন্ত্রিসভা থেকেও অপসারিত করা হয়। যদিও সোমবারই পার্থ তাঁর আইনজীবী সুকন্যা ভট্টাচার্যকে জানিয়েছিলেন, এখনও দলের প্রতি তাঁর সম্পূর্ণ আস্থা রয়েছে।
শান্তিপ্রসাদ সিনহাকে মাথায় বসিয়ে ২০১৯ সালে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ স্কুল সার্ভিস কমিশনের শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া পরিচালনা করার জন্য পাঁচ সদস্যের এক কমিটি গঠন করে। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় বারবরই কলকাতা হাইকোর্টে উঠে আসে শান্তিপ্রসাদের নাম। হাইকোর্ট বলে, এই পাঁচ সদস্যের কমিটি সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে করা হয়েছিল। শুধু তাই নয়, এই কমিটিই সমস্ত দুর্নীতির মূলে। তারও আগে হাইকোর্ট নিযুক্ত অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি রণজিত বাগের নেতৃত্বাধীন তদন্ত কমিটির রিপোর্টেও ওই উপদেষ্টা কমিটির কীর্তিকলাপ সম্পর্কে প্রশ্ন তোলা হয়েছিল। বলা হয়েছিল, শান্তিপ্রসাদই দুর্নীতির মূলে। শান্তিপ্রসাদ-সহ কমিশন এবং মধ্য শিক্ষা পর্ষদের কয়েকজন কর্তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করারও সুপারিশ করা হয়। আদালতেও তাঁকে ডাকা হয়েছিল। আদালতের নির্দেশে সিবিআই শান্তিপ্রসাদ এবং অশোককে জিজ্ঞাসাবাদ করে বেশ কয়েকবার। তাঁদের বাড়িতে তল্লাশিও চালানো হয়। অভিযান চলে স্কুল সার্ভিস কমিশনের অফিসেও। সিবিআই সূত্রের খবর, আরও কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হতে পারে।