জলপাইগুড়ি: অনুমতি ছাড়াই জেলাপরিষদের (Jalpaiguri Zilla Parishad) সরকারি সম্পত্তি (Government Property) ভেঙে ফেলার অভিযোগ উঠল খোদ তৃণমূল পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে। ঘটনায় রীতিমতো জেলা পরিষদ ও বিরোধীদের প্রশ্নের মুখে গ্রাম পঞ্চায়েতের ভূমিকা। বানারহাট ব্লকের সাঁকোয়াঝোরা-১ নং গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে এমনটাই গুরুতর অভিযোগ।
আংরাভাসা এলাকায় স্থানীয় একটি ক্লাবের দখলে থাকা জেলা পরিষদের জমিতে কয়েক বছর আগে সরকারি অর্থ ব্যয় করে একটি শৌচাগার নির্মাণ করা হয়। তার জন্যে খরচও হয় কয়েক লক্ষাধিক টাকা। এলাকাবাসীর সুবিধার্থে সেই শৌচাগার নির্মাণ করা হয়। আর সেই শৌচাগার ভেঙে ফেলার অভিযোগ গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে। জেলা পরিষদের জমিতে শৌচাগার ভেঙে ফেলা হয়েছে জেলা পরিষদের অনুমতি ছাড়া এমনটাই অভিযোগ। জানেন না জেলা পরিষদের সহকারি সভাধিপতিও। এমনকী গ্রাম পঞ্চায়েতের থেকেও কোনও প্রকার রেজুলেশন করা হয়নি বলছেন গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরোধী দলনেতা। আর যাকে ঘিরে চরম অস্বস্তিতে পড়েছে সাঁকোয়াঝোরা-১ নং গ্রাম পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ।
সরকারি অর্থে নির্মিত শৌচাগার ভেঙে ফেলায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে অনেকেই। অনেকেই সরকারি অর্থ অপচয়ের অভিযোগ করছেন। সূত্রের খবর, ক্লাবের দখলে সেই জমিটি থাকলেও আতঙ্কে মুখ খুলছেন না ক্লাবের কোনও সদস্য। কারণ এই ক্লাবের বিরুদ্ধেই কালী পুজোর সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের উপর হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে। ঘটনায় কয়েকজনকে জেলও খাটতে হয়। অনেকেই গ্রেফতারের ভয়ের এলাকা ছেড়ে দীর্ঘদিন গাঢাকা দিয়ে থাকে এবং আগাম জামিন পর্যন্ত নেন। আর সেই সুযোগের অসৎ ব্যবহার করছেন গ্রাম পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ? কারণ যদি ক্লাব সদস্যরা বাধা দিতে আসে তাহলে তাদেরকে সেই কেসে ফাঁসিয়ে দেওয়া হতে পারে বলেই আশঙ্কা করছেন রাজনৈতিক মহল।
কিন্তু কেন এভাবে ভেঙে ফেলা হল সরকারি অর্থে নির্মিত শৌচাগার? খোঁজখবর নিয়ে জানা যায় সেই জায়গায় গ্রাম পঞ্চায়েতের তরফে প্রায় ২৯ লক্ষ টাকা ব্যয় করে একটি কমিউনিটি হল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে উপ-প্রধান গোপাল চক্রবর্তী। ইতিমধ্যেই তার টেন্ডার পক্রিয়ার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। কাজের বরাত পেয়েছেন তারই এক ঘনিষ্ঠ দলীয়কর্মী।
প্রশ্ন উঠছে জেলা পরিষদের জমিতে গ্রাম পঞ্চায়েত কী করে জেলা পরিষদের অনুমতি (NOC ) ছাড়া কমিউনিটি হল করা সিদ্ধান্ত নেয়? সাঁকোয়াঝোরা-১ নং গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরোধী দল নেতা দীপু মন্ডলের কথায়, শৌচাগার ভাঙ্গার জন্য কোন ভাবেই গ্রাম পঞ্চায়েতে রেজুলেশন করা হয়নি। এভাবে সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর করতে পারে না। বিষয়টি দলীয় নেতৃত্বকে জানানো হয়েছে। জেলা পরিষদের জায়গা জেলা পরিষদের বিষয়টি দেখা উচিত আর না হলে পরে আমাদের দলীয় নেতৃত্ব আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে। এলাকার বাসিন্দা হৃদয় সিংহ বলেন, গ্রাম পঞ্চায়েতের তরফে শৌচাগারটি ভেঙে ফেলা হয়েছে। এখানে নাকি কমিউনিটি হল নির্মাণ করা হবে।
যদিও এ বিষয়ে একাধিকবার গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধানকে ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে জেলা পরিষদের সহকারি সভাধিপতি সীমা চৌধুরী জানান, শৌচাগার ভাঙচুর করার বিষয়টি জানা নেই । তিনি খোঁজখবর নিয়ে দেখবেন। যদি কেউ সরকারি জেলা পরিষদের সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর করে, জোর করে দখল করার চেষ্টা করে জেলা পরিষদের আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেই তিনি জানিয়েছেন।