কলকাতা: শিক্ষক নিয়োগে জট কাটাতে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু সোমবার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বৈঠক করলেন ঠিকই। তবে জট আদৌ কাটল কি না, তা নিয়ে কিন্তু সংশয় থেকেই গেল। এদিন বৈঠক থেকে বেরিয়ে আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধি শাহীদুল্লা দাবি করেন, মন্ত্রী মেধাতালিকায় থাকা সব চাকরিপ্রার্থীর চাকরির আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি জানান, প্রায় ৬ হাজার বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থী রয়েছেন। শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, এই প্রার্থীদের চাকরি হবে।
শাহীদুল্লা এই কথা বললেও শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এমন কোনও আশ্বাস দেওয়া হয়নি। সবাইকে চাকরি দিতে হলে অনেক পদ সৃষ্টি করতে হবে। ঠিক কত পদ আছে, আরও কত পদ সৃষ্টি করতে হবে, সেই তালিকা স্কুল সার্ভিস কমিশনকে দিতে বলেছি। আমাদের হাতে সেই তালিকা নেই। আমরা আন্দোলনকারীদের প্রতি অত্যন্ত সহানুভূতিশীল। মুখ্যমন্ত্রীও যথেষ্ট সহানুভূতির সঙ্গে বিষয়টি দেখছেন। কিন্তু বিষয়টির সঙ্গে কিছু আইনি সমস্যা জড়িয়ে আছে। এটা শুধু শিক্ষা দফতরের বিষয় নয়। অর্থ, আইন-সহ বেশ কয়েকটি দফতরের সঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজ করতে হবে।
যোগ্য প্রার্থীদের বঞ্চিত করে টাকার বিনিময়ে অযোগ্যদের চাকরি দেওয়া হয়েছে, এই অভিযোগে ৫১২ দিন ধরে চাকরিপ্রার্থীরা আন্দোলন করছেন। এই দুর্নীতির অভিযোগেই ইডির হাতে গ্রেফতার হয়ে এখন সংশোধনাগারে বন্দি প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। হাইকোর্টের নির্দেশে সিবিআই এবং ইডি এই শিক্ষা দুর্নীতির তদন্ত করছে। ইডির হাতে গ্রেফতার হয়েছেন পার্থর ঘনিষ্ঠ বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। তাঁর দুটি ফ্ল্যাট থেকে প্রায় ৫০ কোটি নগদ টাকা এবং বেশ কয়েক কোটি টাকা মূল্যের সোনার গয়না মিলেছে। তাঁদের নামে অনেক ফ্ল্যাট ও জমির দলিল মিলেছে।
এতে বিপাকে পড়ে শাসকদল। পরিস্থিতি সামাল দিতে আসরে নামেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি গত ২৯ জুলাই আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ক্যামাক স্ট্রিটে তাঁর অফিসে বৈঠক করেন। সেখানে ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী এবং দলের অন্যতম মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। শিক্ষামন্ত্রীর দাবি, সেটা ছিল রাজনৈতিক বৈঠক। আর তিনি সেখানে মন্ত্রী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন না। ওইদিনই ঠিক হয়, আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ৮ অগাস্ট শিক্ষামন্ত্রী বৈঠক করবেন। সেইমতো এদিন ব্রাত্য বসু তাঁদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন।