কংগ্রেস ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন থেকে খাঁচায় ভরা তোতাপাখি হয়ে এখন বিজেপি-র তিন জামাই আইটি, ইডি, সিবিআই। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সম্পর্কে প্রথম আর শেষের উপমাটি বিরোধী শিবিরের পক্ষ থেকে দেওয়া হলেও মাঝের তকমাটি কিন্তু জুটেছিল মহামান্য আদালতের সৌজন্যে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী যার সর্বশেষ তথ্য দেখে বিরোধীরা অনায়াসে সরব হচ্ছে কেন্দ্রের শাসক বিজেপির বিরুদ্ধে। আগের ইউপিএ জমানায় ইডি-সিবিআইয়ের নজরদারিতে থাকা রাজনৈতিক নেতাদের ষাট ভাগ ছিলেন বিরোধী শিবিরের। আর এনডিএ জমানায় সেটাই বেড়ে হয়েছে পঁচানব্বই ভাগ।এই যাবতীয় পরিসংখ্যান সমেত তথ্য পাওয়া গিয়েছে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের তদন্তমূলক প্রতিবেদনের সূত্রে।
ওই পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০০৪-১৪ সালের মধ্যে অর্থাৎ দুই দফার ইউপিএ জমানায় মোট ৭২ জন রাজনৈতিক নেতা বা জনপ্রতিনিধি সিবিআইয়ের আতস কাচের তলায় ছিলেন। যার মধ্যে তেতাল্লিশ জন অর্থাৎ প্রায় ষাট ভাগ বিরোধী পক্ষের। অর্থাৎ বাকি চল্লিশ ভাগ কিন্তু শাসক জোটের সদস্য। আর ঠিক এর উল্টোদিকে এনডিএ জমানার আট বছরের শাসন-এর পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, মোট ১২৪ জন গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক নেতা আপাতত কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তদন্তের আওতায়। যার মধ্যে ১১৮ জন বিরোধী পক্ষের। অর্থাৎ শতাংশের বিচারে ৯৫ ভাগ।
ইউপিএ জমানায় যে ৪৩ জন বিরোধী দলের নেতাকে কেন্দ্রীয় এজেন্সি তদন্তের আওতায় এনেছিল তার মধ্যে ১২ জনই ছিলেন বিজেপির। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী বিএস ইয়েদুরিয়াপ্পা, প্রাক্তন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জর্জ ফার্নান্ডেজ মত কয়েকজনকে হয় কারাজীবন কাটাতে হয়েছে নয়তো কড়া ধাঁচের নজরদারিতে থাকতে হয়েছে বেশ কিছুদিন।
আবার ২০১৪ সাল থেকে এনডিএ-২ জমানায় যে ১২৪ জনকে সিবিআই-ইডির তদন্তের মুখোমুখি হতে হয়েছে তাঁর মধ্যে সব থেকে বেশি সংখ্যক নেতা-জনপ্রতিনিধি তৃণমূল কংগ্রেসের, মোট তিরিশ জন। আর তারপরেই আছে কংগ্রেসের ছাব্বিশ জন নেতানেত্রী। মোদী জমানায় ইডি-সিবিআইয়ের অতি-সক্রিয়তা নিয়ে বারবার জাতীয় স্তরে সরব হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজনৈতিক মহল মনে করে দু-একটি ব্যতিক্রম ছাড়া হয়তো সে কারণেই কেন্দ্রের শাসক বিজেপির রোষানলে পড়তে হচ্ছে তৃণমূলের নেতাদের। বুঝ মন যে জান সন্ধান।