কলকাতা: নবান্ন অভিযানের অনুমতি চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয় কো-অর্ডিনেশন কমিটি (Co-ordination Committee) সহ সরকারি কর্মচারীদের সংগঠন।বুধবার দুপুরে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা (Justice Rajasekhar Mantha) তাঁদের মিছিলের অনুমতি দিলেন। তবে রুট বদল করে। হাওড়া ফেরিঘাট, বঙ্কিম সেতু,মহাত্মা গান্ধী রোড হয়ে হাওড়া ময়দানে গিয়ে মিছিলটি শেষ হবে। আগামী ৪ তারিখ দুপুর ২:৩০টা থেকে ৪:৩০ টা পর্যন্ত মিছিলের সময় বেঁধে দেওয়া হল।
এদিন রাজ্যের আইনজীবী (State Attorney) আদালতে সওয়াল করেন, জনবহুল এলাকাতে এই মিছিলের ফলে সাধারণ মানুষের অসুবিধা হবে। স্কুল ও অফিস যাত্রীর অসুবিধা হবে। ট্রাফিক কন্ট্রোলেও অসুবিধা হবে। মিছিলটি অন্য রুট দিয়ে হলে অসুবিধা নেই। আড়াই কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের একটি রুটে কর্মসূচি করতে দিতে রাজ্যের কোনও অসুবিধা নেই। নির্দিষ্ট জায়গাতেই কর্মসূচি করতে দিতে হবে এই ধরনের দাবি কেউ জানাতে পারেন না। এটা কারোর অধিকারের মধ্যে পড়ে না। দিল্লিতে কৃষক আন্দোলনের ক্ষেত্রেও সুপ্রিম কোর্ট একাধিক কড়া পর্যবেক্ষণ রেখেছিল।
আরও পড়ুন: HC | আদালতের নির্দেশ নিয়ে ছেলেখেলা কেন, পুলিশকে ভর্ৎসনা আদালতের
বিচারপতি মান্থার পাল্টা প্রশ্ন, যে বিধিনিষেধের কথা আপনারা এখানে বলছেন সেটা রাজ্যের শাসক দলের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য তো ? যখন রেড রোড বন্ধ করে শাসকদলের কর্মসূচি হয়, মিছিল হয় তখন পুলিশের অসুবিধা হয়না? শুধু শাসক দলই নয়। ‘কিছু দল’ যখন মিছিল করে তখন গোটা কলকাতা স্তব্ধ হয়ে যায়। তখন পুলিশের কোন অসুবিধা হয় না?
শাহীনবাগের ক্ষেত্রে আন্দোলন দীর্ঘদিন চলেছিল, দিল্লি স্তব্ধ হয়ে গেছিল। তাই সুপ্রিম কোর্টকে কিছু পদক্ষেপ নিতে হয়েছিল। এখানে তো বিষয়টা সেরকম নয়। মান্থা বলেন, আমি নির্দেশ দিয়েছিলাম যে, মিছিলের আবেদন সংক্রান্ত একটা রেজিস্ট্রার তৈরি করতে হবে। যাতে সাধারণ মানুষ দেখতে পায় কবে মিছিল আছে। সেটাও এখনো তৈরি হয়নি ।
তিনি বলেন, সম্প্রতি আমার কাছে ৩০ থেকে ৪০টি মামালা এসেছে মিছিল করার অনুমতি চেয়ে। সরকারি কর্মচারীরা তাঁদের প্রাপ্য মহার্ঘ ভাতা (DA) চেয়ে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করতে চাইলে অসুবিধা কোথায়? কোনও বিষয়ে বিরোধিতা করা বা শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ করা জনসাধারণের মৌলিক অধিকার (Fundamental Rights)। স্কুল, কলেজ, বাজার, অফিস আছে বলে মিছিলের অনুমোদন প্রত্যাখ্যান করা যায় না। আন্দোলনকারীরা তো তাঁদের অসুবিধের কথা তুলে ধরতে চাইবেনই। এই মামলা সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন। সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court) তো আন্দোলন করতে বারণ করেনি।
মান্থা আরও বলেন, এমন চারটে উদাহরন আমি দিতে পারি যেখানে আগে অনুমতি চাওয়া হয়েছে কিন্তু পুলিশ সেই অনুমতি দেয়নি, কিন্তু কর্মসূচির ২ দিন আগে অন্য দল অনুমতি চেয়েছে আর পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে সেই অনুমতি দিয়েছে।