কিয়েভ: আচমকাই যুদ্ধ-বিধ্বস্ত কিয়েভ (Kiyev) পরিদর্শন করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন (Joe Biden)। ইতিহাসের পাতায় এই প্রথম কোনও মার্কিন প্রেসিডেন্ট সামরিক বাহিনী ছাড়াই একটি যুদ্ধক্ষেত্র পরিদর্শন করলেন। বাইডেনের সঙ্গে ছিলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি (Volodymyr Zelensky)। রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নিহত ইউক্রেনীয় সেনাদের স্মরণে তৈরি এক স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে টেলিভিশনে যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনও করেন দুই দেশের প্রেসিডেন্ট।
কিন্তু মার্কিন রাষ্ট্রপতির এই গোপন সফর সম্ভব হল কিভাবে? হোয়াইট হাউসের কর্তারা বারেবারেই অস্বীকার করে গিয়েছেন যে, এমন কোনও ঘটনা ঘটেনি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট কিয়েভ পরিদর্শন করে গোটা বিশ্বকে অবাক করে দেওয়ার পর অবশেষে মুখ খোলেন কর্তারা। তাঁরা জানান,প্রেসিডেন্টের কিয়েভ সফরের প্রস্তুতি চলেছে গত কয়েক মাস ধরে। গোটা বিষয়টি অতন্ত্য গোপন রাখা হয়েছিল। মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রক এবং পুলিশকে মুখ না খোলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
আরও পড়ুনBorder-Gavaskar Trophy: চোটের জেরে টেস্ট সিরিজ থেকেই ছিটকে গেলেন ডেভিড ওয়ার্নার
গোপন রাখা হয়েছিল প্রেসিডেন্টের কর্মসূচি
নিরাপত্তাজনিত কারণেই প্রেসিডেন্টের এই সফর গোপন রাখা হয়। সূত্রের খবর, প্রেসিডেন্ট বাইডেন পোল্যান্ড থেকে ট্রেনে সীমান্ত পেরিয়ে ইউক্রেন সফরে যান। তার আগে শনিবার রাতে প্রেসিডেন্ট বাইডেন এবং তাঁর স্ত্রী জিল একটি রেস্তরাঁয় খেতে গিয়েছিলেন। তার পরেই প্রেসিডেন্ট ওয়াশিংটন ত্যাগ করেন।
নিউইয়র্ক টাইমস লিখেছে,’হোয়াইট হাউস রবিবার রাতে প্রেসিডেন্টের প্রকাশিত কর্মসূচিতে বলা হয়েছিল, সোমবার প্রেসিডেন্ট ওয়াশিংটনে থাকবেন। এরপর তিনি সন্ধ্যায় ওয়ারশ’র উদ্দেশে রওনা দেবেন। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল, তিনি ততক্ষণে কিয়েভে চলে গিয়েছিলেন।’
আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান জানান, হোয়াইট হাউস এবং মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থাগুলির শীর্ষ কর্তাদের একটি দল গত কয়েক মাস ধরেই বাইডেনের ইউক্রেন সফরের জন্য প্রস্তুতি চালাচ্ছিল। শুধুমাত্র রাষ্ট্রপতির সবুজ সংকেতের অপেক্ষায় ছিলেন ওই কর্তারা।
এই গোপন ভ্রমণের জন্য,বাইডেন এয়ার ফোর্স ওয়ানকে একটি পাস দিয়েছিলেন। রবিবার ভোর ৪ টের সময় ৮০ বছর বয়সের প্রবীণ রাষ্ট্রপতি এয়ারফোর্সের বোয়িং 757 বিমানে চড়েন। সঙ্গে ছিল একটি ছোট মেডিকেল টিম। ছিলেন গুটিকয় নিরাপত্তাকর্মী এবং গোপনীয়তার শপথ নেওয়া দুই সাংবাদিক। ওই দুই সাংবাদিকের মোবাইল ফোন নিয়ে নেওয়া হয়েছিল।বলা হয়েছিল, প্রেসিডেন্ট কিয়েভে না পৌঁছনো পর্যন্ত তাঁদের মোবাইল ফেরত দেওয়া হবে না।
প্রায় সাত ঘন্টা পর পোল্যান্ডের বিমানবন্দরে অবতরণ করে এয়ারফোর্সের বোয়িং ৭৫৭। সেখান থেকে দলবল নিয়ে বাইডেন ট্রেনে রহনা দেন কিয়েভের উদ্দেশে। সোমবার সকাল ৮টায় তিনি কিয়েভে পৌঁছোন। তিনি বলেন,’ কিয়েভে ফিরে এসে ভালো লাগল।’ বারাক ওবামা যখন প্রেসিডেন্ট ছিলেন, তখন ভাইস-প্রেসিডেন্ট হিসেবে বাইডেন শেষবার কিয়েভে গিয়েছিলেন।