নয়াদিল্ল ও তেজপুর: ভারতীয় সেনাবাহিনীর জওয়ান ও সেনাকর্মীদের (Soldiers and Army Personnel) চীনা ভাষা (Chinese Language) শেখানোর জন্য সমঝোতা চুক্তি অর্থাৎ মেমোরেন্ডাম অন আন্ডারস্ট্যান্ডিং (Memorandum of Understanding – MoU) স্বাক্ষরিত হয়েছে। ভারতীয় সেনাবাহিনী (Indian Army) এবং অসমের তেজপুর ইউনিভার্সিটির (Tezpur University, Assam) মধ্যে এই মৌ স্বাক্ষর হয়েছে। সেনাবাহিনী সূত্রে খবর, ১৬ সপ্তাহের কোর্সে মান্দারিন (Mandarin) ভাষায় সুশিক্ষিত করে তোলা হবে ভারতীয় সেনাবাহিনীর আধিকারিকদের। ভারতীয় সেনাবাহিনীর হয়ে মৌ’তে সই করেছে এইচকিউ কর্পস (HQ 4 Corps) এবং তেজপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে স্বাক্ষর করেছে রেজিস্ট্রার (Registrar)। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এসএন সিংয়ের (Vice Chancellor Prof SN Singh) উপস্থিতিতে এই মৌ স্বাক্ষরিত হয়েছে।
আরও পড়ুন: Bilawal Bhutto Zardari | আট বছর পরে পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী ভারতে আসছেন
কেন এই উদ্যোগ?
প্রকৃত সীমারেখা অর্থাৎ লাইন অব অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল (Line of Actual Control – LAC) নিয়ে ভারত ও চীনের (India and China) মধ্যে এই মুহূর্তে চাপা উত্তেজনা (Tension) রয়েছে। দুই দেশের সামরিক বাহিনী (Military Force) একে অপরের বিরুদ্ধে সংঘর্ষেও লিপ্ত হয়েছে। চীনা সামরিক বাহিনী পিপলস লিবারেশন আর্মি (People’s Liberation Army – PLA) আন্তর্জাতিক সীমারেখা অতিক্রম করে ভারতীয় ভূখণ্ডে (Indian Territory) প্রবেশের চেষ্টা চালিয়েছে একাধিকবার। ভারতীয় সেনাবাহিনী সেই অপপ্রচেষ্টা রোখার জন্য চেলা চালানোয় দুই দেশের সামরিক বাহিনীর সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে। গালওয়ানে (Galwan) গোলাগুলির লড়াই হয়েছে। তাওয়াংয়ে (Tawang) হাতাহাতি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু বড় বিষয় হলো, ভারতীয় সেনাবাহিনীর জওয়ার চীনা ভাষায় কথা বলতে পারেন না এবং বুঝতেও পারেন না। সেনাবাহিনী মনে করছে, যোগাযোগ ক্ষেত্রে কোথাও একটা বাধা রয়ে যাচ্ছে। সেই বাধাটিই দূর করতে চায় ভারতীয় সেনাবাহিনী।
সেনাবাহিনীর বক্তব্য, চীনা ভাষায় দক্ষতা এলে সেনা আধিকারিকরা আরও ভালোভাবে সংযত উপায়ে তাদের কথা বোঝাতে পারবেন চীনা সামরিক বাহিনীর আধিকারিকদের। অন্যদিকে, কম্যান্ডার স্তরের আলোচনা (Commander Level Talks), পতাকা বৈঠক (Flag Meetings), যৌথ মহড়া (Joint Exercises) এবং সীমান্ত কর্মী সভা (Border Personnel Meetings) ইত্যাদির মতো বিভিন্ন কথাবার্তা চলাকালীনও চীনা পিপলস লিবারেশন আর্মির সঙ্গে বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি আরও ভালোভাবে বিনিময় হবে এবং বোঝার ক্ষেত্রেও সাহায্য করবে।
তেজপুর ইউনিভার্সিটি
তেজপুর ইউনিভার্সিটি ১৯৯৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এটি কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়। উত্তরপূর্ব ভারতে চীনা ভাষা সহ বিদেশি ভাষা শেখানোর ক্ষেত্রে অন্যতম নাম তেজপুর ইউনিভার্সিটি।
চীনা ভাষা
চীনে শতাধিক স্থানীয় ভাষা রয়েছে। তবে মূলত মান্দারিন (Mandarin) এবং ক্যান্টোনিজ (Cantonese) এই দু’টি ভাষা প্রচলিত। চীনের মূল ভূখণ্ড (Mainland China), তাইওয়ান (Taiwan) ও সিঙ্গাপুরে (Singapore) মান্দারিন ভাষায় কথা বলা হয় এবং হংকং (Hong Kong) ও গুয়াংডং প্রদেশে (Guangdong Province) ক্যান্টোনিজ ভাষার চল রয়েছে। এই দুই ধরনের মধ্যে পার্থক্য হলো, মান্দারিন ভাষায় সহজতর চীনা অক্ষর ব্যবহার হয় এবং ক্যান্টোনিজের ক্ষেত্রে চিরাচরিত চীনা অক্ষর লেখা হয়।