Sunday, June 15, 2025
HomeদেশSupreme Court: দুর্নীতির একাল সেকাল, প্রশ্নের মুখে বিচার ব্যবস্থা

Supreme Court: দুর্নীতির একাল সেকাল, প্রশ্নের মুখে বিচার ব্যবস্থা

Follow Us :

১৯৪৮। মাত্র এক বছর আগে দেশ স্বাধীন হয়েছে। জওহরলাল নেহরু প্রথম প্রধানমন্ত্রী। ভালো করে তিনি গুছিয়ে বসতে পারেননি। বছর ঘুরতে না ঘুরতেই এক বড় কেলেঙ্কারিতে ফেঁসে গেল কংগ্রেস সরকার। ব্রিটেনে ভারতীয় রাষ্ট্রদূত তখন ভি কে কৃষ্ণমেনন। অভিযোগ উঠল, কৃষ্ণমেনন কোনও নিয়মকানুন, প্রোটোকল না মেনেই লন্ডনে বসে একটি বিদেশি সংস্থার সঙ্গে সেনাবাহিনীর জিপ কেনার একটি চুক্তি করে বসলেন ৮০ লক্ষ টাকার। তা নিয়ে বিরোধীরা সংসদের ভিতরে বাইরে তুমুল হইহল্লা তুললেন। পরবর্তীকালে সেই কৃষ্ণমেননকেই নেহরু প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর কুর্সিতে বসালেন। আসলে কৃষ্ণমেনন ছিলেন নেহরুর খুবই ঘনিষ্ঠ। বিষয়টি গান্ধীজিও ভালোভাবে মেনে নিতে পারেননি। তাঁর ব্যক্তিগত সচিব ভি ভি কল্যাণম সংবাদপত্রে এক ইন্টারভিউতে নেহরুর সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে বললেন, কৃষ্ণমেননের মতো একজন দুর্নীতিগ্রস্ত নেতাকে কেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী করা হল। ওই ঘটনাটি আদালত পর্যন্ত গড়ায়।

সেই শুরু। তারপর থেকে কংগ্রেসের জমানায় বহু আর্থিক এবং রাজনৈতিক কেলেঙ্কারি ঘটেছে। এমনকী ২০০৪ এবং ২০০৯ সালে ইউপিএ ১ এবং ইউপিএ ২ জমানাতেও দুর্নীতি পিছু ছাড়েনি কংগ্রেসের। সেই দুর্নীতি কিংবা কেলেঙ্কারির তালিকা খুবই লম্বা। ১৯৪৮ সালের পরের বছরই কংগ্রেস জড়িয়ে পড়ে এলআইসি সংক্রান্ত এক দুর্নীতিতে, যার পোশাকি নাম হয়ে যায় মুন্দ্রা কেলেঙ্কারি। ঘটনা হল, কংগ্রেস জমানায় প্রকাশ্যে আসা বিভিন্ন কেলেঙ্কারি বা দুর্নীতি নিয়ে মামলা হয়েছে। কখনও কোনও হাইকোর্টে, কখনও সুপ্রিম কোর্টে। আদালতের নির্দেশে কংগ্রেসের নেতা-মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ১৯৭৫ সালে এলাহাবাদ হাইকোর্টের নির্দেশে দোর্দণ্ডপ্রতাপশালী ইন্দিরা গান্ধীর উপর নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছিল। তাঁর বিরুদ্ধে ভোটে অসদুপায় অবলম্বন-সহ বেহিসেবি খরচ, সরকারি আমলাদের দলের কাজে ব্যবহারের মতো বহু গুরুত্বপূর্ণ অভিযোগ উঠেছিল। 

আরও পড়ুন:Ritabhari Chakraborty Equal Rights for Women: নারীর সমান অধিকারের বার্তা দিতে গিয়ে কটাক্ষের মুখে ঋতাভরী

বস্তুত কংগ্রেস জমানা আর দুর্নীতি ছিল সমার্থক। ১৯৭৪ সালে মারুতি কেলেঙ্কারি, ১৯৭৬ সালে কুয়ো তেল কেলেঙ্কারির মতো কত কিছুই না ঘটেছে। ১৯৮১ সালে সিমেন্ট ঘোটালা, ১৯৮৫ সালে লালুপ্রসাদ যাদবের পশুখাদ্য ঘোটালা, পরের বছর সাবমেরিন কেলেঙ্কারি তো আছেই। ১৯৮৭ সালে রাজীব গান্ধীর জমানায় দেশ ছাড়িয়ে বিদেশে পর্যন্ত আলোড়ন পড়েছিল বোফর্স কামান কেনা নিয়ে বড় দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায়। এক সুইস সংস্থার সঙ্গে তখনকার ভারত সরকার কামান কেনার জন্য ১.৪ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি করে। তাতে দুর্নীতি হয় বলে অভিযোগ ওঠে। বিরোধীরা রাজীবকে বোফর্স গান্ধী বলেও কটাক্ষ করে। সারা দেশে স্লোগান ওঠে, গলি গলি মে শোর হ্যায়, রাজীব গান্ধী চোর হ্যায়। সেই শোর এতটাই জোরদার হয়ে পড়ে যে, ১৯৮৯ সালের লোকসভা ভোটে ক্ষমতাচ্যুত হয় কংগ্রেস। বাম, বিজেপির সমর্থনে প্রধানমন্ত্রী হন বিশ্বনাথ প্রতাপ সিং। বোফর্স কেলেঙ্কারি নিয়েও মামলা হয় সুপ্রিম কোর্টে। পরবর্তীকালে প্রমাণ হয়, বোফর্স নিয়ে আদৌ কোনও দুর্নীতি হয়নি। ইউপিএ ১ এবং ইউপিএ ২ জমানাতেও কংগ্রেস কম ঘোটালায় জড়ায়নি। ২০০৮ এ টুজি স্পেকট্রাম, হাওয়ালা, ২০১০ এ কমনওয়েলথ গেমস, ২০১২ তে কয়লা, ২০১৩ সালে চপার কেলেঙ্কারির কথা সকলেই জানে। 
সব নিয়েই মামলা গড়িয়েছে হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত। বিভিন্ন সময়ে আদালত কংগ্রেস সরকারের নীতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে, সরকারকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে। আদালতের নির্দেশে অতীতে ইন্দিরা গান্ধীকে পর্যন্ত জেল খাটতে হয়েছে।

এক সব কথা বলতে হচ্ছে নোটবন্দি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের সাম্প্রতিক রায় নিয়ে। ২০১৬ সালে মোদি সরকারের নোটবন্দির সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল বলে রায় দিয়েছে শীর্ষ আদালত। যদিও এই রায় সর্বসম্মত নয়। পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চের চার বিচারপতি সিদ্ধান্তকে বৈধ বললেও এক বিচারপতি ভিন্নমত প্রকাশ করেন। তিনি এই সিদ্ধান্তকে অবৈধ বলে রায় দিয়েছেন। শীর্ষ আদালতের এই রায়ে বিজেপি কিংবা কেন্দ্রীয় সরকার স্বস্তি পেয়েছে বটে। কিন্তু আজ থেকে ছয় বছর আগে মোদি সরকারের এই সিদ্ধান্তে দেশের আমজনতা যে চূড়ান্ত ভোগান্তির মধ্যে পড়েছিল, তার কী হবে, সেই প্রশ্নে শীর্ষ আদালত চুপ। 

এখানেই প্রশ্নের মুখে পড়েছে আদালত। চার বিচারপতি রায় দিতে গিয়ে বলেছেন, সরকারের নীতিগত বিষয়ে লক্ষ্যপূরণ হয়েছি কি না, তা আদালতের দেখার কথা নয়। আদালত দেখেছে, সরকারের এই সিদ্ধান্তের আইনগত বৈধতা আছে কি না। একইভাবে শীর্ষ আদালত পেগাসাস মামলায় জাতীয় সুরক্ষার কথা বলায় সরকার অনেকটা স্বস্তিতে। এসব দেখেই বিভিন্ন মহল বিচার ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ পেয়ে যাচ্ছে। সেই প্রশ্ন খুব একটা অমূলক কি?

প্রশ্ন আরও আছে। রামমন্দির নিয়েও সুপ্রিম কোর্টের রায়ে স্বস্তি পেয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। তারই পুরস্কারস্বরূপ অবসরের পরেই প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈকে রাজ্যসভার সদস্য পদে মনোনীত করা হয়েছে। এমনটাই অভিযোগ। আবার এই সুপ্রিম কোর্টই সিএএ মামলায় এখনও পর্যন্ত কোনও রায় দিতে পারেনি। ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে নির্বাচনী বন্ড মামলাও। দিনের পর দিন পিছিয়ে যাচ্ছে তার শুনানি। এডিআর-সহ বেশ কিছু সংগঠন বন্ড বাতিলের দাবিতে মামলা করেছে কয়েক বছর আগে। আজ পর্যন্ত তার কোনও ফয়সালা হয়নি। আইনজ্ঞ মহলের মতে, এর ফলে সুবিধা পেয়ে যাচ্ছে বিজেপি এবং কেন্দ্রীয় সরকার।

রাজ্যের এক প্রবীণ আইনজীবী বলেন, শপথ নেওয়ার সময় সব প্রধান বিচারপতি বলে থাকেন, জমে থাকা মামলার সুরাহা করা এবং সাধারণ মানুষকে সুবিচার দেওয়াই আমার মূল লক্ষ্য। কিন্তু বাস্তবে তার কোনও প্রতিফলন দেখা যায় না। আজও বহু গুরুত্বপূর্ণ মামলা ঝুলে রয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। সেগুলির কবে নিষ্পত্তি হবে, কেউ জানে না।

RELATED ARTICLES

Most Popular

Video thumbnail
Ali Khamenei | চ‍্যালেঞ্জের মুখে ইরাক-আমেরিকার সৈন্যঘাঁটি, খামেনির হুঁশিয়ারি ট্রাম্প-ম‍্যাঁক্রোকে
00:00
Video thumbnail
Iran-Israel | ইরানের কাউন্টার অ‍্যা/টা/কে ছারখার তেল আভিভ, ইজরায়েলে শুধুই সাইরেনের শব্দ
00:00
Video thumbnail
Iran | Trump | ইরানের মা/রে মাটিতে আমেরিকার F35 যু/দ্ধবিমান, চিন্তার ভাঁজ ট্রাম্পের কপালে
00:00
Video thumbnail
Abhijit Ganguly | অসুস্থ, হাসপাতালে ভর্তি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, কী হয়েছে? এখন কেমন আছেন?
00:00
Video thumbnail
Iran-Israel | Netanyahu | যু/দ্ধের মাঝেই প্লেনে চেপে পালাচ্ছেন নেতানিয়াহু? দেখুন চাঞ্চল্যকর ভিডিও
00:00
Video thumbnail
Iran-Israel | ইরানের কাউন্টার অ‍্যা/টা/কে ছারখার তেল আভিভ, ইজরায়েলে শুধুই সাইরেনের শব্দ
03:36
Video thumbnail
Iran | Trump | ইরানের মা/রে মাটিতে আমেরিকার F35 যু/দ্ধবিমান, চিন্তার ভাঁজ ট্রাম্পের কপালে
06:00
Video thumbnail
আমার শহর (Amar Sahar) | উলুবেড়িয়ার এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের আশা পূরণ, প্রসূতিদের জন্য নয়া ব্যবস্থা
02:15
Video thumbnail
Abhijit Ganguly | অসুস্থ, হাসপাতালে ভর্তি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, কী হয়েছে? এখন কেমন আছেন?
02:04
Video thumbnail
Iran-Israel | Netanyahu | যু/দ্ধের মাঝেই প্লেনে চেপে পালাচ্ছেন নেতানিয়াহু? দেখুন চাঞ্চল্যকর ভিডিও
02:53