কলকাতা: কেজরিওয়াল-মমতা বৈঠকের (Mamata-Kejriwal Meeting) আগেই তাঁদের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা তথা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী (Adhir Ranjan Chowdhury)। মহাকরণে দুই নেতা-নেত্রীর বৈঠকের প্রাক্কালে অধীর তাঁদের ভোটপাখী বলে কটাক্ষ করেন। তিনি বহরমপুরে বলেন, বিজেপির বিরুদ্ধে মহাজোটের জন্য কলকাতায় এসে কেজরিওয়ালের আলোচনার প্রয়োজন নেই। আপ এবং তৃণমূল হচ্ছে কংগ্রেসকে খতম করে নিজেদের শ্রীবৃদ্ধি করার দল। অধীর আরও বলেন, কর্নাটকের ভোটে দুশোটি আসনে লড়াই করেছে আপ। কংগ্রেসের প্রার্থীদের হারিয়েছে তারা। সেই আপ কি জোট করবে?
প্রসঙ্গত, এদিনই কলকাতায় এসেছেন আম আদমি পার্টির প্রধান এবং দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। বিকেল তিনটে থেকে তিনি নবান্নে বৈঠক করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে। সূত্রের খবর, আসন্ন লোকসভা ভোটের আগে বিজেপি বিরোধী জোট নিয়ে কথা হবে দুজনের মধ্যে। পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অমান্য করে দিল্লির আমলাদের নিজেদের কব্জায় রাখার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার যে অর্ডিন্যান্স এনেছে, তা নিয়েও কেজরিওয়াল কথা বলবেন তৃণমূল নেত্রীর সঙ্গে। তিনি চান, সব বিরোধী দল রাজ্যসভায় এই অর্ডিন্যান্সের প্রতিবাদ করুক। তাহলেই বিজেপি রাজ্যসভায় সেটি পাশ করাতে পারবে না। কারণ রাজ্যসভায় বিজেপির সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই। কেজরিওয়ালের বক্তব্য, রাজ্যসভায় বিজেপিকে এই ইস্যুতে হারাতে পারলে লোকসভা ভোটের আগে বিরোধীদের তরফে বড় বার্তা দেওয়া যাবে।
মমতা এবং কেজরিওয়ালের বৈঠকের দিকে যখন রাজনৈতিক মহল তাকিয়ে আছে, ঠিক তার আগেই অধীর এই বোমা বিস্ফোরণ ঘটালেন। এর আগে মেঘালয়, গোয়া, ত্রিপুরার ভোটে বিজেপিকে সাহায্য করার জন্যই তৃণমূল ওই তিন রাজ্যে প্রার্থী দিয়েছিল বলে কংগ্রেস অভিযোগ করে। গোয়ায় ভোটের প্রচারে গিয়ে খোদ রাহুল গান্ধী অভিযোগ করেছিলেন, কংগ্রেসের ভোট কাটার জন্যই তৃণমূল প্রার্থী দিয়েছে। গোয়া এবং ত্রিপুরায় তৃণমূলের শৌচনীয় ফলাফল হয়েছে। মেঘালয়ে পাঁচটি আসন পেয়েছিল তৃণমূল। তার মধ্যে জনা তিনেক তৃণমূল বিধায়ক বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ করছেন বলে খবর।
এই রাজ্যে সাগরদিঘি বিধানসভা কেন্দ্র্রের উপনির্বাচনে বামেদের সঙ্গে জোট করে কংগ্রেস তাদের প্রার্থী বায়রন বিশ্বাসকে জিতিয়ে এনেছে। তৃণমূলের অভিযোগ, তাদের হারাতে রাম, বাম, বিজেপি এক হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মুর্শিদাবাদে গিয়ে জনসভায় বলেন, কাদের টাকায় কংগ্রেস জিতল, সব জানি। আমাকে মুখ খোলাবেন না। সাগরদিঘির ভোটের ফল প্রকাশের পর মমতা জানিয়েছিলেন, লোকসভা ভোটে তৃণমূল একাই লড়বে। কর্নাটকে কংগ্রেস জেতার পরে অবশ্য তিনি একা লড়ার পথ থেকে সরে আসেন। তাঁর প্রস্তাব, যেখানে যে আঞ্চলিক দল শক্তিশালী, সেখানে তাদের সামনে রাখা হোক। কিছু পেতে হলে কংগ্রেসকে কিছু ছাড়তে হবে। তাঁর এই প্রস্তাব কংগ্রেস মানবে কি না, তা লাখ টাকার প্রশ্ন।
সোমবারই কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে এবং রাহুল গান্ধীর সঙ্গে বৈঠক করেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। কংগ্রেস চাইছে, খুব দ্রুত বিরোধীদের মেগা বৈঠক হোক। দুএকদিনের মধ্যে সেই বৈঠকের দিনক্ষণ ঠিক হয়ে যাবে বলে কংগ্রেস এবং আরজেডি নেতারা জানান। এই পরিস্থিতিতে কেজরিওয়াল-মমতা বৈঠকের কয়েক ঘণ্টা আগে কংগ্রেস নেতা অধীর আপ এবং তৃমমূলকে ভোটপাখী বলে কটাক্ষ করলেন।