কলকাতা টিভি এক্সক্লুসিভ: অশান্ত মণিপুরে নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও খতিয়ে দেখতে কুলদীপ সিংকে বিশেষ উপদেষ্টা নিয়োগ করল পার্বত্য রাজ্যের সরকার। বৃহস্পতিবার মণিপুর সরকারের তরফে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ ক্যাডারের অবসরপ্রাপ্ত আইপিএস কুলদীপ সিংকে অবিলম্বে উপদেষ্টা (নিরাপত্তা) হিসেবে নিয়োগ করা হচ্ছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত তিনিই এই পদে থাকবেন। উল্লেখ্য, মণিপুরের পরিস্থিতি নিয়ে এদিনই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষুদ্র রাজ্যের হিংসাত্মক ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
এদিকে, মণিপুরে ৩৫৫ ধারা জারি করল কেন্দ্রীয় সরকার। অশান্ত পার্বত্য রাজ্যে সংবিধানের এই ধারা প্রয়োগ করে নিরাপত্তা্র দায়িত্ব নিজের হাতে তুলে নিল কেন্দ্রীয় সরকার। বহিঃশত্রুর আগ্রাসন এবং রাজ্যের অভ্যন্তরীণ অশান্তি নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্র এই ধারা প্রয়োগ করে থাকে। জরুরিকালীন ভিত্তিতে এই ধারা প্রযুক্ত হয় সংশ্লিষ্ট রাজ্যে। সংবিধানে ৩৫২ থেকে ৩৬০ ধারা পর্যন্ত বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে কেন্দ্রের হাতে এই ক্ষমতা ন্যস্ত করা আছে।
আরও পড়ুন: Cyclone Mocha। কবে আছড়ে পড়বে সাইক্লোন ‘মোচা’, জানাল হাওয়া অফিস
এদিনই দেখামাত্র গুলির নির্দেশ দেয় মণিপুর প্রশাসন (Manipur Govt)। বৃহস্পতিবার রাজ্য সরকার এ ব্যাপারে নোটিসও জারি করেছে। ইতিমধ্যেই উত্তর-পূর্বের রাজ্যে ৫৫কলাম সেনা নামানো হয়েছে। রাজ্যের আট জেলায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। স্পর্শকাতর জায়গাগুলিতে পাঁচ দিনের জন্য ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মেইতি সম্প্রদায়কে তফসিলি জাতিভুক্ত করার দাবিতে বুধবার রাত থেকেই অগ্নিগর্ভ উত্তর-পূর্বের এই রাজ্য।
বুধবার রাতে আদিবাসীদের মিছিল ঘিরে শুরু হয় অশান্তি, বিক্ষোভ। বিক্ষোভের আগুন নেভাতে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখতে ব়্যাফ, সেনা, আধা সেনা ও অসম রাইফেলসের বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে মণিপুরের বিভিন্ন এলাকায়। রাজ্যের অশান্ত পরিবেশকে নিয়ণন্ত্রে আনতে ইতিমধ্যেই আট জেলায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। বন্ধ করে দেওয়া দিয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবা। তারপরও ১৪ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে অশান্তি বজায় রয়েছে মণিপুরের একাধিক এলাকায়। এবার কোনও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি দেখলেই গুলি করার নির্দেশ জারি করল মণিপুর প্রশাসন।
মণিপুরের ঘটনায় উদ্বেগপ্রকাশ করে টুইট করেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এটা রাজনীতি করার সময় নয়। রাজনীতি এবং নির্বাচন অপেক্ষা করতে পারে, কিন্তু এখন মণিপুরকে রক্ষা করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে মণিপুরকে দেখার আর্জি জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিকে উত্তর-পূর্বের রাজ্যের এই পরিস্থিতির বিষয়ে নজর রাখতে বৃহস্পতিবারই মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংয়ের সঙ্গে কথা বলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে মণিপুরে শান্তি স্থাপনের জন্য অনুরোধ করেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীও।