নয়াদিল্লি: দিল্লির প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসোদিয়াকে (Manish Sisodia) আর হেফাজতে চাইল না সিবিআই (CBI)। সোমবার আম আদমি পার্টির (AAP) নেতা সিসোদিয়াকে ১৪ দিন জেল হেফাজতে (Judicial Custody) রাখার নির্দেশ দিল আদালত। ২০ মার্চ পর্যন্ত তাঁর জেল হেফাজত হয়েছে। তাঁকে খুব সম্ভবত তিহার জেলে (Tihar Jail) পাঠানো হবে। অর্থাৎ হোলির (Holi) মরশুমে জেলেই কাটাতে হবে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের ডান হাত সিসোদিয়াকে। আবগারি দুর্নীতি কাণ্ডে (Excise Policy Scam) গত সপ্তাহে সিবিআই হেফাজতেই ছিলেন তিনি। অন্যদিকে, দিল্লি আদালতে জামিনের আবেদন জানিয়েছেন সিসোদিয়া। যার শুনানি হবে আগামী ১০ মার্চ। আদালত সিবিআইকে তাদের জবাব জানাতে বলেছে।
আম আদমি পার্টির নেতা মণীশ সিসোদিয়ার সিবিআই হেফাজতের মেয়াদ শেষ হয় সোমবার। এদিনই দুপুর ২টো নাগাদ তাঁকে আদালতে তোলা হয়। দিল্লির আবগারি দুর্নীতি তদন্তে গ্রেফতার হওয়া সিসোদিয়া প্রায় সপ্তাহখানেক ধরে সিবিআই হেফাজতে ছিলেন। গ্রেফতারের পর তাঁকে আদালত প্রথম দফায় পাঁচদিনের হেফাজত দিয়েছিল। শনিবার তাঁকে আদালতে তোলার পর বিশেষ বিচারক এমকে নাগপাল সিসোদিয়াকে আরও ২ দিন সিবিআই হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুন: Rabri Devi-CBI: রাবড়ি দেবীকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে বাড়িতে সিবিআই, বাইরে বিক্ষোভ আরজেডির
জামিনের আবেদনে সিসোদিয়া অভিযোগ করেছেন, তাঁকে বারংবার একই প্রশ্ন করা হচ্ছে। এভাবে তাঁর উপর ইচ্ছাকৃত মানসিক যন্ত্রণা দিচ্ছে তদন্তকারী সংস্থা। তাঁর আইনজীবী আদালতে সওয়াল করেন, সিসোদিয়াকে হেফাজতে রেখে কোনও বিরাট ফল পাওয়া যায়নি। এই মামলার তদন্তে সব উদ্ধার হয়ে গিয়েছে। তদন্তকারী সংস্থার অপদার্থতার কারণে কাউকে হেফাজতে রাখা যায় না।
সিসোদিয়াকে গ্রেফতারির ঘটনায় বিরোধী দলগুলি যারপরনাই ক্ষুব্ধ। শুধু আম আদমি পার্টি নয়, বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে একের পর এক বিরোধী নেতা-নেত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনে তদন্ত শুরু করে। এর মধ্যে বাদ যায়নি কোনও বিরোধী দলই। কংগ্রেস নেতা রাহুল এবং সোনিয়া গান্ধীও ছাড় পাননি। অথচ, মামলা চলাকালীন কিংবা তার ঠিক আগেই দলবদলু নেতাদের ছাড় দেওয়া হয়েছে, যার তালিকাটাও দীর্ঘ। এমনই অভিযোগ ৮টি বিজেপি-বিরোধী দলের।
বিরোধী দলে থাকলে অসৎ-দুর্নীতিগ্রস্ত। আর বিজেপিতে যোগ দিলে সেই লোকগুলোই হয়ে যায় স্বচ্ছ, পবিত্র গঙ্গাজলের মতো! বিজেপি কি একটা ওয়াশিং মেশিন? পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বহুবার এই অভিযোগ তুলেছেন বিজেপি এবং কেন্দ্রীয় সরকারি তদন্তকারী সংস্থাগুলির আচরণের প্রতিবাদে। এবার তৃণমূল নেত্রীর সুরেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জমাট বাঁধল। ৮টি বিরোধী দল মিলে মোদিকে চিঠি দিয়ে কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলির অপব্যবহার নিয়ে অভিযোগপত্র লিখেছে। যদিও দেশের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস এই প্রতিবাদপত্রে স্বাক্ষর না করে নিজেকে সরিয়ে রাখার সিদ্ধান্ত নেয়।
প্রতিবাদপত্রে স্বাক্ষর করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, কে চন্দ্রশেখর রাও, পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল, ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ফারুক আবদুল্লা, এনসিপি নেতা শরদ পাওয়ার, শিবসেনার উদ্ধব ঠাকরে, সপা নেতা অখিলেশ যাদব এবং বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী তথা আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব।