নয়াদিল্লি: শনিবার সন্ধ্যায় রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi) তাঁর ১২, তুঘলক লেনের (Tughalak Lane) সরকারি বাংলোর চাবি তুলে দিলেন অফিসারের হাতে। তার আগেই সকালে সব গোছগাছ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু ছুটির দিন বলে তখন কাউকে তিনি পাননি। সন্ধ্যায় এক সরকারি অফিসার এসে চাবি নিয়ে যান। রাহুল তাঁর বাংলোর পুরনো কর্মচারীদের সঙ্গে করমর্দন করেন। সকলকে বিদায় অভিনন্দন জানান। সঙ্গে ছিলেন বোন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী (Priyanka Gandhi) এবং অন্য কংগ্রেস নেতারা। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা প্রসঙ্গে কংগ্রেস (Congress) নেতা রাহুল গান্ধী বলেন, সত্যি কথা বলার মূল্য চোকাতে হল। তবে আমি সত্যি কথা বলেই যাব।
অনেক সাংসদ প্রাক্তন হয়ে গেলেও সরকারি বাংলো ছাড়েন না। চাইলে রাহুলও এই বাংলোয় থেকে যেতে পারতেন। কারণ, তাঁর সাংসদ পদ চলে যাওয়ার বিষয়টি এখনও আদালতের বিচারাধীন। এই ব্যাপারেই সাংবাদিকরা তাঁর কাছে জানতে চেয়েছিলেন। রাহুল বলেন, না। আমি থাকতে চাই না। চাইবই বা কেন। এই বাংলো দেশের নাগরিকেরা আমাদের ব্যবহার করতে দেন। সাংসদ বলেই আমরা এই বাংলো পাই। আমার সাংসদ পদ যখন খারিজ হয়ে গিয়েছে, তখন আমি কেন এখানে থাকব। গত ১৯ বছর ধরে রাহুল তুঘলক লেনের এই সরকারি বাংলোর বাসিন্দা ছিলেন। শনিবার সেই বাংলো তাঁকে ছেড়ে দিতে হল। তিনি এখন মা সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গেই থাকবেন।
আরও পড়ুন | Mukul Roy | মুকুল সুস্থ না অসুস্থ, জেনে নিন
২০১৯ সালে লোকসভা ভোটের আগে কর্নাটকে এক সভায় তিনি প্রশ্ন তোলেন, সব চোরেদের পদবি কেন মোদি হয়। তা নিয়ে গুজরাতের এক বিজেপি নেতা সুরাতের ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে রাহুলের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেন। আদালত তার জন্য রাহুলকে দোষী সাব্যস্ত করে এবং তাঁকে দুই বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়। আইন অনুযায়ী কোনও সাংসদের দুই বছর বা তার বেশি সাজা হলে তাঁর সাংসদ পদ চলে যাবে। তিনি ছয় বছরের জন্য কোনও ভোটে দাঁড়াতে পারবেন না। সম্প্রতি রাহুলের তরফে ওই নির্দেশ চ্যালেঞ্জ করে সুরাতের নগর দায়রা আদালতে মামলা করা হয়। সেখানেও রাহুলের আবেদন খারিজ হয়ে যায়। এখন রাহুলের হাইকোর্টে যাওয়া ছাড়া উপায় নেই। ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নির্দেশের পরের দিনই লোকসভার সচিবালয় রাহুলের সাংসদ পদ খারিজের নোটিস জারি করে যুদ্ধকালীন ভিত্তিতে। তারপরেই লোকসভার তরফ থেকে এক মাসের মধ্যে এই সরকারি বাংলো খালি করার নোটিস দেওয়া হয়। সেই সময়সীমা শেষ হওয়ার আগেই রাহুল বাংলো ছেড়ে দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন।