বোলপুর: শান্তিনিকেতনের রাবীন্দ্রিক, আশ্রমিক ও প্রাক্তনীদের সম্পর্কে বিশ্বভারতীর উপাচার্য কটূ কথা বলায় তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে বোলপুরে। উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর (Bidyut Chakrabarty) ওই আচরণের প্রতিবাদে এবার শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের কাছে স্মারকলিপি দিলেন বিশ্বভারতী ও শান্তিনিকেতনের রবীন্দ্রপ্রেমী মানুষজন। বুধবার সকালে উপাসনাগৃহে উপাসনা চলাকালীনই উপাচার্য আশ্রমিক ও প্রাক্তনীদের অশিক্ষিত বলে কটাক্ষ করেন। তিনি বলেন, এঁরা হলেন বুড়ো খোকা। বুড়ো বয়সে ভারসাম্য নষ্ট হয়েছে এঁদের। বিশ্বভারতীর (Visva Bharati University) কোনও কাজে এঁদের পাওয়া যায় না। পাশাপাশি তিনি আশ্রমিক ও প্রাক্তনীদের পুঁথিগত বিদ্যা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন।
এতেই আগুনে ঘি পড়ার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে শান্তিনিকেতন, বোলপুর প্রভৃতি জায়গায়। শান্তিনিকেতনের রবীন্দ্রপ্রেমীদের স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, উপাচার্য ট্রাস্টের কোনও সদস্য নন, কিন্তু তারপরেও বারবার উপাসনাগৃহের মতো একটি শান্তির জায়গায় রবীন্দ্র আদর্শ নিয়ে আলোচনা না করে প্রত্যেকবার তিনি ব্যক্তিগত আক্রমণ করছেন প্রাক্তনী, আশ্রমিক ও রাবীন্দ্রিকদের। এটা বিশ্বভারতী ও রবীন্দ্র আদর্শের পরিপন্থী। এই ধরনের ঘটনা যাতে ফের না ঘটে, তার ব্যবস্থা করারও দাবি জানিয়েছেন রবীন্দ্রপ্রেমীরা। শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের সম্পাদক অনিল কোনার জানিয়েছেন, ওই স্মারকলিপি নিয়ে ট্রাস্টের বৈঠকে কথা হবে।
আরও পড়ুন:Madhyamik Exam 2023: মাধ্যমিক পরীক্ষা নিয়ে সতর্ক পর্ষদ, সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করাই চ্যালেঞ্জ
এর আগেও একাধিকবার উপাসনাগৃহে বিস্ফোরক মন্তব্য করে বিতর্কে জড়িয়েছেন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। কখনও আশ্রমিকদের, কখনও বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের আবার কখনও অধ্যাপকদের আক্রমণ করেছেন তিনি। নোবেলজয়ী অমর্ত্য সেনের সঙ্গেও তিনি বিতর্কে জড়িয়েছেন প্রবীণ অর্থনীতিবিদের বিরুদ্ধে বিশ্বভারতীর জমি দখলের অভিযোগ ঘিরে। বিশ্বভারতীর দাবি, অমর্ত্য সেন অবৈধভাবে বিশ্বভারতীর ১৩ ডেসিমেল জমি দখল করে আছেন। এটা তাঁর পৈতৃক ভিটে বলে পাল্টা দাবি অমর্ত্য সেনের। অন্যদিকে এই ঘটনার পর খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদের বাড়িতে এসে জমির নথি দিয়ে যান এবং দাবি করেন ওই জমি অমর্ত্য সেনেরই। অমর্ত্য সেনের পিতা সেই জমি লিজে নিয়েছিলেন, যা সরকারি রেকর্ডে রয়েছে। এই দাবিও মানতে চাননি বিশ্বভারতীর উপাচার্য।