কিয়েভ: সোমবার সকালে পাঁচ-পাঁচটি বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ (Kyiv)। ইউক্রেনের তরফে দাবি বিস্ফোরণে সেন্ট্রাল শেভচেঙ্কভস্কি (Shevchenkivskiy)-তে একাধিক আবাসিক ভবনের ক্ষতি হয়েছে। ইউক্রেনের রাষ্ট্রপতি ভলদিমির জেলেনেস্কির উপদেষ্টা (Presidential Adviser) আন্দ্রি ইয়েরমাক (Andriy Yermak)-এর দাবি, রাশিয়া এই হামলা চালিয়েছে এবং কামিকাজে ড্রোন (Kamikaze drone) ব্যবহার করা হয়েছে বিস্ফোরণের জন্য। এক সপ্তাহে এই নিয়ে কিয়েভের উপর দ্বিতীয়বার হামলা চালাল রাশিয়া (Russia)। এক সপ্তাহ আগে কিয়েভে মিশাইল হামলা চালিয়েছিল রাশিয়া। ইউক্রেনকে (Ukraine) লক্ষ্য করে চালানো ওই হামলায় ১৯ জন প্রাণ হারান।
জানা গিয়েছে, সোমবার স্থানীয় সময় সকাল ৬টা ৩০ মিনিট নাগাদ বিস্ফোরণ শুরু হয়। স্থানীয় সময় সাড়ে ৮টায় শেষ বিস্ফোরণটি হয়। মোট পাঁচটি ড্রোন বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। ড্রোনের ধ্বংসাবশেষ দেখে ইউক্রেনের দাবি, সেগুলি কামিকাজে ড্রোন। ইউক্রেনে এই ধরনের কম শব্দ হওয়া ধীরগতির চলমান হাতিয়ার অত্যন্ত পরিচিত। কামিকাজে ড্রোনগুলিকে গুলি করে নামানোর চেষ্টাও করা হয়। এর মধ্যে দু’টি ড্রোন আবার শহরের জনবহুল স্থান হিসেবে পরিচিত সিটি সেন্টারের (City Center) কাছে উড়তে দেখা যায়।
কি এবং কাকে নিশানা করা হচ্ছিল, তাই সেই মুহূর্তে ঠাওর করা যায়নি। মেয়রের অফিস সূত্রে জানানো হয়েছে, একাধিক আবাসিক এবং অনাবাসিক ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রেলের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, কিয়েভের মূল স্টেশনের খুব কাছে বিস্ফোরণ ঘটতে দেখা গিয়েছে। যে সকল স্থানে হামলা চালানো হয়েছিল, সেখানে সঙ্গে সঙ্গেই উদ্ধারকারী দল পৌঁছে যায়। আবাসিকদের এয়ার রেইড শেল্টারে আশ্রয় নিতেও বলা হয়। যদিও লোকজন কাজে যাওয়ার কারণে রাস্তা সেই সময় ভিড়ে ঠাসাই ছিল। রাষ্ট্রপতির উপদেষ্টা জানিয়েছেন, কামিকাজে ড্রোন দিয়ে রাশিয়া যে হামলা চালিয়েছে, তা থেকে বাঁচার জন্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ইউক্রেনের আরও বেশি এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম দরকার।
উল্লেখ্য, কামিকাজে ড্রোন হল আকাশে ওড়া বিস্ফোরক অস্ত্র, যা লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার পর ধ্বংস হয়ে যায়। অন্যান্য ড্রোনের সঙ্গে এর পার্থক্য হল এটি ডিস্পোজেবল, অর্থাৎ আর ফিরে আসে না। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বিমানসহ শত্রুঘাঁটিতে ধাক্কা মারার সুইসাইড মিশনে যে জাপানি পাইলটরা স্বেচ্ছায় নাম লেখাতেন, তাঁদেরকে কামিকাজে বলা হত। তার অনুকরণেই এই ড্রোনের নাম দেওয়া হয়েছে। এর আগে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনেস্কি ইরানে তৈরি ড্রোন ব্যবহারের অভিযোগ এনেছিলেন। যদিও সেই অভিযোগ রাশিয়া খারিজ করে দেয়।