কোহিমা: নাগাল্যান্ড (Nagaland) রাজ্য গঠনের (Statehood) ৬০ বছর পেরিয়ে গেল, কেউ কথা রাখেনি। আজ পর্যন্ত একজনও মহিলা বিধায়ক (Woman Legislature) পায়নি উত্তর-পূর্বের এই পার্বত্য রাজ্য (North-Eastern State)। আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি আসন্ন বিধানসভা ভোটে (Nagaland Assembly Election 2023) ১৮৩ জন প্রার্থীর মধ্যে মাত্র ৪ জন মহিলা প্রার্থী রয়েছেন।
সেটা ছিল ১৯৭৭ সাল। লোকসভা নির্বাচনে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হোকিসে সেমাতোকে হারিয়ে দিয়েছিলেন রানো এম শাইজা। সেটাই ছিল জনগণের ভোটে নির্বাচিত প্রথম কোনও মহিলার সংসদে পা দেওয়া। তার ৪৫ বছর পর গতবছর বিজেপির মহিলা মোর্চার সভানেত্রী এস ফাঙ্গং কোনায়ক শাসক জোট এনডিএ-র সর্বসম্মত প্রার্থী হিসেবে রাজ্যসভার সদস্য নির্বাচিত হন।
আরও পড়ুন: Elon Musk: ভারতের টুইটার অফিসগুলির ঝাঁপ ফেললেন এলন মাস্ক, আর কি করতে চলেছেন?
শুরু থেকেই ভোটে নাগা মহিলাদের পিছনে ফেলে রাখা হলেও পড়াশোনায় তাঁরা কিন্তু অনেক এগিয়ে। সাক্ষরতায় জাতীয় স্তরের পরিসংখ্যান যেখানে ৬৪.৬৩ শতাংশ। সেখানে নাগা মহিলাদের ৭৬.১১ শতাংশ সাক্ষর। এমনকী সরকারি ও বেসরকারি চাকরি ক্ষেত্রেও মহিলারাই এই রাজ্যে এগিয়ে রয়েছেন।
শুধু তাই নয়, নাগা নাগরিক সমাজেও মহিলাদের যথেষ্ট প্রতিপত্তি আছে। কিন্তু, নির্বাচনী অঙ্গনে তাঁরা অমিল। পরম্পরাগতভাবে নাগা মহিলাদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার কোনও ক্ষেত্রে রাখা হয় না। বিশেষজ্ঞদের মতে, অতীতে মহিলাদের পর্দানসীন করে রাখাই রীতি ছিল। ঘরকন্না করা, বাচ্চা দেখভাল করা ইত্যাদির বাইরে তেমন কোনও অধিকার ছিল না।
পুরুষরা ছিল মুক্ত। তাদের কাজ ছিল উপার্জন ও গ্রামের রক্ষা করা। পুরুষরা নারী-বিদ্বেষী না হলেও মহিলাদের আর কোনও গুরুত্ব দেওয়া হতো না। এমনটাই জানালেন, রাজ্য মহিলা কমিশনের প্রথম সভানেত্রী সানো ভামুজো। তিনি বলেন, তবে সময়ের পরিবর্তন এবং শিক্ষার অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে জীবনযাপনের ধরন ও মানসিকতারও বদল ঘটেছে। এখন দেখা যাচ্ছে, সরকারি অফিসে মহিলাদের অধিক সংখ্যায় চাকরি নাগরিকদের পক্ষেই মঙ্গল হয়েছে। পুরুষশাসিত যে সমাজ ছিল, তার থেকে অনেকটাই আমরা বেরিয়ে আসতে পেরেছি। শুধু জনপ্রতিনিধিত্বের জায়গায় পিছিয়ে রয়েছেন নাগা মহিলারা, বলেন তিনি।
প্রথম নাগা সাংসদ রানো শাইজার বোন সানো ভামুজো প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভামুজো ফেসাওয়ের স্ত্রী। সেই হিসেবে নাগাল্যান্ডের রাজনীতিতে তিনি কোনও নতুন মুখ নন। তিনি বলেন, মহিলাদেরই উঠে দাঁড়াতে হবে এবং ভোটে লড়াই করতে হবে। যতক্ষণ না আমরা ভোটে দাঁড়াব, তাহলে কী করে বিধানসভার চৌকাঠে পা রাখব, প্রশ্ন তোলেন তিনি। এবারের ভোটে যে চারজন ভোটে দাঁড়িয়েছেন, তাঁদের জয় কামনা করেন তিনি। তা তাঁরা যে দলেরই হন না কেন। ২৭ ফ্রেব্রুয়ারির নির্বাচনে শাসকদল এনডিপিপি (NDPP) ২ জন মহিলা প্রার্থী দিয়েছে। অন্যদিকে, তাদের জোট বিজেপি (BJP) একটিতে এবং কংগ্রেস (Congress) একটিতে মহিলা প্রার্থী দিয়েছে।