মালদহ: দলত্যাগী তৃণমূল কর্মীদের সামাজিক বয়কটের ডাক দিলেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি আব্দুর রহিম বক্সী (Abdur Rahim Boxi)।মঙ্গলবার কালিয়াচকের যদুপুরে এক জনসভায় রহিম বক্সী বলেন, সত্যিকারের তৃণমূলী হলে কেউ দলত্যাগ করত না।দশ বছর দলের সমস্ত কিছু ভোগ করল। আর দলের বিপদের সময় দল ছেড়ে পালিয়ে গেল।এরই পরেই উপস্থিত দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে জেলা সভাপতি বলেন, আপনাদের কাছে আমাদের অনুরোধ, ওই সমস্ত দলত্যাগী যে পথে হাঁটবে সে পথে থুথুও ফেলবেন না।এদের সামাজিক ভাবে বয়কট করতে হবে।
একই সঙ্গে তিনি রাজ্য কংগ্রেসের মুখপাত্র কৌস্তভ বাগচীকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করে বলেন, প্রথমবার তোমাকে ছেড়ে দেওয়া হল। এরপর তৃণমূলকে চোর বললে জেলার মানুষ তোমাকে ছেড়ে কথা বলবে না। এদিকে মালদহ জেলা কংগ্রেসের সম্পাদক কালীসাধন রায় বলেন, দলের উচিত জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া।
আরও পড়ুন: Congress Files | কংগ্রেস ফাইলস পার্ট থ্রি প্রকাশ বিজেপির, ব্যক্তি আক্রমণ মনমোহনকেও
সম্প্রতি মালদহ তৃণমূলে বড়সড় ভাঙন ধরেছে। দিন কয়েক আগে কয়েক আগেই কালিয়াচকের এই যদুপুরেই অঞ্চলের তৃণমূলের (TMC) অঞ্চল চেয়ারম্যান রফিক শেখ সহ প্রায় ২ হাজার তৃণমূল সমর্থক কংগ্রেসে যোগদান করেন।যদুপুরের ভাগলপুর মাঠে কংগ্রেসের ওই যোগদান সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন কংগ্রেসের রাজ্য মুখপাত্র কৌস্তভ বাগচী (Kaustuv Bagchi), সাগরদিঘির বিধায়ক বায়রন বিশ্বাস (Bayron Biswas), মালদহ জেলা কংগ্রেস সভাপতি আবু হাসেম খান চৌধুরী-সহ জেলার বহু কংগ্রেসের নেতা। দলের প্রাক্তন বিধায়ক ঈশা খান চৌধুরী বলেন, অল্প কিছুদিনের মধ্যেই জেলা পরিষদের প্রাক্তণ সভাধিপতি সরলা মুর্মু কংগ্রেসে যোগদান করবেন।এছাড়া জেলার সমস্ত ব্লক থেকে অনেক তৃণমূল নেতা কংগ্রেসে আসতে চাইছেন। এপ্রিল মাসের মধ্যে তাদের কংগ্রেসে যোগদান করানো হবে।
ওই যোগদান সভাতেই কৌস্তুভ বাগচী বলেন, ইতিমধ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের দু’জন ক্যাবিনেট মন্ত্রী কংগ্রেসে আসতে চেয়ে ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন। তাঁদের সঙ্গে সবসময় যোগাযোগ রাখছেন। তিনি বলেন, এই তৃণমূল দলটা আর থাকবে না। মানুষ তাদের ভুল বুঝতে পারছেন। তৃণমূল দলটা চোরের দলে পরিণত হয়েছে।
কালিয়াচকের যদুপুরের এই ভাঙন যে তৃণমূলকে বেশ অস্বস্তিতে ফেলেছে, জেলা সভাপতির বক্তব্যেই তা পরিষ্কার বোঝা গিয়েছে। রহিম বক্সী এর আগেও বিভিন্ন সময়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন। কখনও বিরোধীদের হাত-পা ভেঙে দেওয়ার হুমকি দিয়ে, কখনও চোখ খবরে দেওয়ার হুমকি দিয়ে সংবাদ শিরোনামে আসার চেষ্টা করে. সোমবারও সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের নেতা কর্মীদের চোখ উপড়ে নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন। বিরোধীরা অবশ্য তৃণমূল জেলা সভাপতির এই হুমকিকে গুরুত্ব দিতে নারাজ। জেলার প্রাক্তন কংগ্রেস বিধায়ক ঈশা খান চৌধুরী বলেন, মালদহ জেলার দ্রুত তৃণমূল ভাঙছে। তাই আতঙ্কে ভুলভাল বকতে শুরু করেছেন রাজ্য সভাপতি।